সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জাপান সফর শেষ করে এবার চিনের মাটিতে পা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২৫ তম এসসিও বৈঠকে যোগ দিতে শনিবার প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বিমান পৌঁছল চিনের তিয়ানজিন শহরে। ভারত তো বটেই মোদির এই সফরে বাড়তি নজর গোটা বিশ্বের। বিশেষ করে ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধের মাঝেই চিন-ভারতের একমঞ্চে আসা, আমেরিকার জন্য জোরাল বার্তা বলেই মনে করা হচ্ছে। এই বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান, ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেস্কিয়ান ও উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জন উন।
আগামী ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চিনের তিয়ানজিনে বসছে ২৫তম সাংহাই সহযোগিতা পরিষদের (এসসিও) বৈঠক। সন্ত্রাস, বিচ্ছিন্নতাবাদ ও চরমপন্থার মতো পরিস্থিতি মোকাবিলায় ১০টি সদস্য দেশ নিয়ে গঠিত হয়েছিল এসসিও। তবে সময় বদলেছে। সমসাময়িক বিশ্বকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন উদ্দেশ্যও যোগ হয়েছে এসসিওতে। শুল্কের খাঁড়া হাতে বিশ্বজুড়ে মার্কিন 'দাদাগিরি'র মাঝে রবিবার একমঞ্চে বসছেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ভ্লাদিমির পুতিন, নরেন্দ্র মোদি, তুরস্কের এরদোগান, ইরানের পেজেস্কিয়ান ও উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জন উনরা। অনুমান করা হচ্ছে, নিজেদের মধ্যেকার সমস্যাকে পিছনে ফেলে বৃহত্তর স্বার্থে এই মঞ্চ থেকেই একত্রে চলার শপথবাক্য পাঠ করতে পারেন এশিয়ার নেতারা। সেক্ষেত্রে আমেরিকাকে পাশ কাটিয়ে বিশ্ব দেখবে গ্লোবাল সাউথের জয়ধ্বজা।
দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর শুল্কের অস্ত্র হাতে দাপাদাপি শুরু করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রুশ তেলের অজুহাতে ভারতের উপর চেপেছে ৫০ শতাংশ শুল্কের কোপ। ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে লাগাতার রাশিয়াকেও শাসানি দেওয়া হচ্ছে। এমনকী একদফা শুল্কযুদ্ধের পর বিরল খনিজ রপ্তানি না করলে চিনের উপরও ২০০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। ইচ্ছেমতো নিষেধাজ্ঞা ও শুল্কের খামখেয়ালিপনায় ট্রাম্পের উপর বিতশ্রদ্ধ এশিয়ার দেশগুলি। বাণিজ্য ক্ষেত্রে আমেরিকার এই আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ ছুড়তে গ্লোবাল সাউথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, একদা দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে চিড় ধরলেও আমেরিকার শুল্কবোমা আছড়ে পড়ার পর থেকেই ভারত-চিন সৌহার্দ্যের নৌকা তরতরিয়ে এগিয়েছে। ২০২০ সালে গালওয়ান সংঘাতের পর এটাই হতে চলেছে মোদির প্রথম চিন সফর। পাশাপাশি সম্প্রতি ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যার বিরোধিতা করে ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে বেজিং। এই অবস্থায় মোদির সফরের দিকে বাড়তি নজর গোটা বিশ্বের। কেবল চিনা প্রেসিডেন্ট নন, রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও বৈঠক করবেন মোদি। বিশ্লেষকদের অনুমান, একজোট হয়ে আমেরিকাকে রোখার কৌশল কষতে পারে ভারত-চিন-রাশিয়া। প্রশান্ত মহাসগরীয় এলাকায় চিনকে রুখতে ভারতকে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা ছিল আমেরিকার। সেই পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে পারে এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলি।
