সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একাত্তরে পশ্চিম পাকিস্তানের খানসেনাদের থেকে মুক্তি চেয়েছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান। মুক্তিযুদ্ধের পর জন্ম হয়েছিল সম্পূর্ণ এক নতুন দেশ, বাংলাদেশের। কিন্তু সেই গণহত্যা, কালো অধ্যায় ভুলে পাকিস্তানকেই এখন আলিঙ্গন করছে ঢাকা! আর ক্রমশ দূরত্ব বাড়ছে ভারতের সঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসকে ফোন করে ইসলামাবাদে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানালেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। পাশাপাশি পাকিস্তানে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বাংলাদেশের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী রুনা লায়লাকেও।
আজ খুশির ইদ। সেজে উঠেছে বাংলাদেশ। জানা গিয়েছে, ইদের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য ইউনুসকে ফোন করেন শাহবাজ। বেশ কিছুক্ষণ কথা হয় তাঁদের মধ্যে। তখনই ইউনুসকে পাকিস্তানে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান পাক প্রধানমন্ত্রী। এক্স হ্যান্ডেলে এই কথোপকথনের কথা উল্লেখ করে তিনি লেখেন, 'আজ ড. মহম্মদ ইউনুসের সঙ্গে ফোনে একটি দারুণ কথোপকথন হয়েছে। আমরা ইদুল ফিতরের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি। পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও জোরদার করার জন্য আমাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছি। পাশাপাশি পাকিস্তানে আসার জন্য ইউনুসকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আজ কথা হয়েছে জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী রুনা লায়লার সঙ্গেও। তাঁকেও পাকিস্তানে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি।' প্রসঙ্গত, আগামী ২২ এপ্রিল বাংলাদেশ সফরে আসছেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী তথা উপ প্রধানমন্ত্রী ইশহাক দার।
এক সময় ‘ভারতবন্ধু’ হিসাবেই পরিচিত ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু শেখ হাসিনার পতন ও রাজনৈতিক পালাবদলের পর এই কথা যেন বদলে যাচ্ছে। একাত্তরের গণহত্যা ভুলে ইউনুসের ‘নতুন’ বাংলাদেশ এখন কাছে টানছে পাকিস্তানকে। সম্প্রতি ইসলামাবাদে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের সেনাকর্তারা। এরপর গত ২১ জানুয়ারি সূত্র মারফৎ জানা যায়, পাকিস্তানের চার সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের সেনার প্রতিনিধি দল ঢাকায় পৌঁছেছে। সেই দলেই রয়েছেন আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম, ও আর এক অফিসার। বাংলাদেশের সেনার অফিসারদের সঙ্গে নাকি বৈঠকও করেছেন তাঁরা। তবে এই গোপন সাক্ষাতের বিষয়ে মুখে কুলুপ দু'দেশের।
এই মুহূর্তে বাংলাদেশের নানাপ্রান্তে মার খাচ্ছে হিন্দুরা। কিন্তু পাক নাগরিকদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে ইউনুস সরকার। বিশ্বের যেকোনও জায়গায় থাকা পাকিস্তানের নাগরিক ও বংশোদ্ভূতরা যাতে সহজে ঢাকার ভিসা পান তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কয়েকদিন আগেই চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে পাক জাহাজ। ব্যবসার ক্ষেত্রেও পড়শি দেশের ব্যবসায়ীদের জন্য বাংলাদেশের বাজার খুলেছে ঢাকা। ২৪ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল ঢাকায় বৈঠক সেরে গিয়েছে। এবার বন্ধুত্ব আরও মজবুত করতে পাকিস্তানে আমন্ত্রণ জানানো হল ইউনুসকে। আর দু'দেশের এই বন্ধুত্বে সিঁদুরে মেঘ দেখছে ভারত। গোটা বিষয়ের উপর কড়া নজর রাখছে নয়াদিল্লি।