সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রকাশ্যে টেক্সাসের (Texas School Shooting) স্কুলে হামলাকারী বন্দুকবাজ সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য। টেক্সাসের পাবলিক সেফটি ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, স্কুলে হামলা চালানোর আগে নিজের ঠাকুমাকেও গুলি করেছিল ওই কিশোর। প্রকাশ্যে এসেছে হামলা চালানোর দু’ঘণ্টা আগেই র্যামোস নামে ওই কিশোরের একটি টেক্সট। প্রসঙ্গত, এই হামলায় মৃত্যু হয়েছে ১৯ জন পড়ুয়া-সহ ২১ জনের। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ওই বন্দুকবাজেরও।
হামলা চালানোর ঘটনাটি ঘটে স্থানীয় সময় বেলা এগারোটা নাগাদ। তার আগেই সকাল ন’টা নাগাদ একটি মেয়ের সঙ্গে ওই র্যামোসের কথোপকথন সামনে এসেছে। ওই চ্যাটে মেয়েটিকে র্যামোস (Texas Gunman) বলেছে, “একটা সিক্রেট বলতে চাই তোমাকে।” এরপরই সে লেখে, “একটা কাজ করতে যাচ্ছি আমি।” মেয়েটি জানতে চায় কী কাজ করতে যাচ্ছে। র্যামোসের উত্তর, “এগারোটার আগে বলব।” তারপর র্যামোসের আর কোনও মেসেজ পাওয়া যায়নি। প্রসঙ্গত, কয়েকটি বন্দুকের ছবিতে এই মেয়েটিকে ট্যাগ করেছিল র্যামোস। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মেয়েটির পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
[আরও পড়ুন: কোয়াডে চিনকে হুঁশিয়ারি রাষ্ট্রনেতাদের, বাইডেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক নিয়ে উচ্ছ্বসিত মোদি]
স্থানীয় মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে একটি ভিডিও। সেখানে দেখা যাচ্ছে, এক কিশোর ভাবলেশহীন ভাবে তাকিয়ে রয়েছে। টেক্সাস পাবলিক সেফটি ডিপার্টমেন্টের তরফে এরিক এস্ট্রাডা বলেছেন, “প্রথমে ঠাকুমার বাড়িতে গিয়ে তাঁর উপরে গুলি চালায় ওই কিশোর। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ৬৬ বছর বয়সি বৃদ্ধার অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক হওয়ায় তিনি আর কোনও তথ্য জানাতে পারেননি পুলিশকে। এরপরই অভিযুক্ত কিশোর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। দেখা যায়, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে হাতে বন্দুক নিয়ে একটি গাড়িতে করে পালায় ওই কিশোর।
ঠাকুমাকে গুলি করার পরেই স্কুলে গিয়েছিল ওই কিশোর। জানা গিয়েছে, স্কুলের সামনে একটি গর্তে ধাক্কা খায় কিশোরের গাড়িটি। তারপরেই স্কুলে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকে ওই কিশোর। বিশেষ কাউকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়নি ওই কিশোর। তাকে আটকাতে গিয়ে আহত হন দুই পুলিশকর্মীও। জানা গিয়েছে, ১৮ বছর বয়স হওয়ার পরেই বন্দুক কিনেছিল র্যামোস। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর বন্দুকের ছবি পোস্ট করেছিল সে। প্রসঙ্গত, টেক্সাসের আইন অনুযায়ী ১৮ বছর বয়স হলেও বিশেষ অনুমতি নিয়ে বন্দুক রাখা যেতে পারে।
আরও জানা গিয়েছে, র্যামোসের মা মাদকাসক্ত ছিলেন। তাঁর সঙ্গে প্রায়ই ঝামেলা হত র্যামোসের। বাড়ি এবং স্কুলে দুই জায়গাতেই তাকে হেনস্থা করা হত বলেও জানা গিয়েছে। তার পরিচিত মানুষজনের মতে, অল্পেই রেগে যেত র্যামোস।
গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকটি বন্দুকবাজের হামলার ঘটনা ঘটেছে আমেরিকায় (USA)। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষকে বন্দুক রাখার অনুমতিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। এদিকে পাঁচদিনের দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান সফর সেরে মঙ্গলবারই দেশে ফিরেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। স্কুলে হামলার পরে তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় জানিয়ে দেন ২৮ মে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দেশের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। দেশে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার নিয়মে আরও কড়াকড়ি করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: মসজিদ নয়, লিখতে হবে জ্ঞানবাপী ‘মন্দির’! স্কুলের ই-মেলের নির্দেশিকা ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে]