সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রকৃত লক্ষ্য হল মুক্তিযুদ্ধের ইতিমহাস মুছে ফেলা, বাঙালি জাতিসত্তা শিকড় উপড়ে ইসলামি শাসন কায়েম করা। সেই উদ্দেশে ইতিমধ্যে ঢাকার ৩২ নম্বর ধানমন্ডির শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বাড়িটি বুলডোজার দিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। হামলা চালানো হয়েছে গোটা দেশে মুজিবের স্মৃতিবিজড়িত যাবতীয় ঠিকানায়। সূত্রের খবর, ভাষা আন্দোলনের সমর্থক এবং ‘মুক্তিযুদ্ধপন্থী’-দের মেরুদণ্ড ভেঙে দিতে এবারের টার্গেট টুঙ্গিপাড়ার মুজিবের সমাধিভবন। হেফাজতে ইসলামি, জামাতে ইসলামি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা মনে করছে মুজিবের সমাধিটি গুঁড়িয়ে দিতে পারলে একশো শতাংশ লক্ষ্য় পূরণ হবে। একই সঙ্গে কোণঠাসা আওয়ামি সমর্থকদের মনোবল সম্পূর্ণ ভেঙে দেওয়া যাবে। টুঙ্গিপাড়ায় অতর্কিত হামলার জন্য ইতিমধ্যে 'রণকৌশল' তৈরি করা হয়েছে বলেও খবর।

ঐতিহাসিক ধানমন্ডির বাড়ি ভাঙার সময়ই 'বিপ্লবী' ছাত্রদল স্লোগান দিয়েছিল 'এবার চলো টুঙ্গিপাড়া’। অতএব, জামাত এবং তাদের শাখা ইসলামী ছাত্র শিবিরগুলির মুজিবের সমাধি গুঁড়িয়ে দেওয়া ছক ছিল আগেই। জানা গিয়েছে, সেই লক্ষ্যে হিংস্র হামলায় প্রশিক্ষিত ক্যাডারদের জড়ো করা হচ্ছে আশপাশের এলাকায়। এতখানি পরিকল্পনার কারণ চরম দুর্দিনেও গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া আওয়ামি লিগের 'দুর্জয় ঘাঁটি'। গত আগস্টে বিএনপির কিছু নেতা অস্ত্র নিয়ে এখানে হামলা চালিয়েও সুবিধা করতে পারেনি। পালটা প্রতিরোধের মুখে পিছু হাঁটতে হয়েছিল তাদের। ওই সংঘর্ষ এক হামলাকারীর মৃত্যু হয়।
যে কোনও দিন ফের হামলা হতে পারে, একথা জানা আত্মগোপন করে থাকা টুঙ্গিপাড়ার আওয়ামি নেতাদের। তাদের অভিযোগ, এখানকার প্রতিরোধ যাতে ভেঙে পড়ে তার জন্য প্রশাসন ধরপাকড় চালাচ্ছে, মিথ্যে মামলা দিচ্ছে। এর পরেও হামলা হলে তারা যে ছেড়ে কথা বলবেন না, সেকথা জানিয়ে দিচ্ছেন বাংলাদেশের বেঁচেবর্তে থাকা আওয়ামি নেতা-কর্মীরা। সম্ভবত এই প্রতিরোধের কারণেই সপ্তাহে খানেক আগে একদল মৌলবাদী মুজিবের সমাধির কাথে জড়ো হলেও শেষ পর্যন্ত সুবিধা করতে পারেনি। অন্যদিকে সোশাল মিডিয়ায় ইঙ্গিতবাহী পোস্ট দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র হাসনাত আবদুল্লা। তিনি লিখেছেন--- "যুদ্ধে আপনি পরাজিত হলে মারা যাবেন, আর যদি আপনি বিজয়ী হন তা হলে আপনাকে পরাজিতদের ধ্বংস করে দিতে হবে।"
এই পোস্ট থেকেই স্পষ্ট, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, তদুপরি বাঙালি জাতি সত্ত্বাকে নির্মূল করতে মুজিবের সমাধিভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়াই এখন নতুন বাংলাদেশের লক্ষ্য। যার পর পাকিস্তানপন্থী সূর্যোদয় হবে পদ্মপাড়ে। সেই সূর্যে কতটা আলো আর কতটা অন্ধকার থাকবে, তা অবশ্য ভবিষ্যৎই বলবে।