সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাশ্চাত্য থেকে আরব দুনিয়া – বিপ্লবের, বিদ্রোহের সুর সর্বত্র একই। স্থান-কাল-পাত্র নির্বিশেষে সেসব গানের প্রাসঙ্গিকতা যে সমান, তা ফের বোঝা গেল। একদা স্বৈরশাসকের বিরোধিতায় ইটালির বুকে তৈরি হওয়া ‘বেলা চাও’ গানটি গেয়ে ইরানের (Iran) রাস্তায় প্রতিবাদ জানালেন আরব দুনিয়ার মেয়েরা। হিজাব বিরোধী (Anti-Hijab) সেই আন্দোলনে শামিল পুরুষদের একাংশও। তাঁদের কণ্ঠেও ‘বেলা চাও’। এহেন প্রতিবাদের ভিডিও নিয়ে এখন নেটদুনিয়ায় জোর চর্চা।
হিজাব কাণ্ডে এই মুহূর্তে উত্তাল ইরান। সপ্তাহখানেক আগে থেকে তার সূত্রপাত। ঠিকমতো হিজাব না পরার অভিযোগ তুলে মাহশা আমিনি নামের এক তরুণীকে পিটিয়ে মারা হয়। আর তারপর থেকেই দেশজুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রতিবাদ। বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। রাজধানী তেহরান-সহ অন্তত ৪০টি শহরে শুরু হয় আন্দোলন। তা রুখতে ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দিয়েছিল প্রশাসন। হিজাব বিরোধী আন্দোলনেও পুলিশি দমনপীড়ন চলে। এখনও পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্য়ু হয়েছে। হাদিসা নাজাফি নামে বছর কুড়ির এক তরুণীর শরীর ঝাঁজরা হয়ে গিয়েছে ৬টি গুলিতে।
[আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্তের ভ্রুকুটি, সপ্তমী থেকে বৃষ্টিতে ভাসতে পারে বাংলা]
এরপর অবশ্য তাঁদের দমিয়ে রাখা যায়নি। বরং যত দিন যাচ্ছে, ততই বিদ্রোহের আঁচে আরও উত্তপ্ত হচ্ছে ইরান। পুরুষরাও এগিয়ে এসেছেন হিজাব বিরোধী প্রতিবাদে। হিজাব তো দূর অস্ত, বোরখা খুলে চুল পর্যন্ত কেটে ফেলছেন মহিলারা। সেই চুল দিয়েই বানানো হয়েছে ফ্ল্যাগ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল সেই ছবি। তবে এসবেরও চেয়েও বেশি যে ভিডিও নজর কেড়েছে নেটিজেনদের, তা হল আরব দুনিয়ার নারী-পুরুষদের মুখে গাওয়া ‘বেলা চাও’য়ের (Bella Ciao) মতো বিদ্রোহের গানটি। উনিশ শতকে ইটালিতে স্বৈরতন্ত্রের অবসানের দাবিতে এই গানটি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছিল। ইটালি থেকে তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বেই। একইরকম পরিস্থিতি হলে নানা দেশের মাটিতেই এই সুর উঠেছে। এমনকী এই গানের প্যারোডিও তৈরি হয়েছে।
ইরানের মেয়েরা গিটারে সুর তুলে দিব্যি মূল বক্তব্য নিজেদের ভাষায় গাইছেন রাস্তায়। শাসকরা কি শুনছেন? প্রতিবাদের টুকরো টুকরো নানা ছবি, ভিডিও-সহ ইরানকে এখন অন্যভাবে চিনছেন বিশ্ববাসী। হয়ত এই প্রতিবাদীরাই একদিন বদলে দেবেন দেশের নিয়মকানুন।