সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান বিমানবন্দরে এখন কেবলই কান্না আর শোকের বন্যা। বিমানে ৬ জন কর্মী-সহ ১৮১ জন যাত্রী ছিলেন। সম্ভবত তাঁদের মধ্যে অন্তত ১৭৯ জনেরই মৃত্যু হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই রবিবার সারাদিন সমস্ত উড়ানই বাতিল হয়েছে সেখানে। বিমানবন্দরের সর্বত্রই কেবল হাহাকার আর কান্নার শব্দ। বিমানবন্দরের কনফারেন্স রুমে সমস্ত যাত্রীদের আত্মীয়স্বজনের উদ্দেশে যখন জানানো হয়, সম্ভবত অধিকাংশ যাত্রীই মারা গিয়েছেন তখনই এক যাত্রীর আত্মীয় কাতর স্বরে বলে ওঠেন, ''কেউই কি বেঁচে নেই?'' এই অসহায় প্রশ্নেই যেন ধরা রয়েছে ভয়াবহ দুর্ঘটনার তীব্রতাটুকু।
ব্যাঙ্কক থেকে ফিরছিল বিমানটি। কিন্তু রানওয়েতে অবতরণের সময় সেটি পিছলে যায়। আর তারপর তা একটি দেওয়ালে গিয়ে ধাক্কা মারে। ঘটে যায় প্রচণ্ড বিস্ফোরণ। আগুনের শিখা ঝলসে ওঠে। আকাশ ঢেকে ফেলতে থাকে কালো ঘন ধোঁয়া। দেখা যায় ধোঁয়ার ভিতরে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে বিমানটি। মনে করা হচ্ছে, পাখির সঙ্গে ধাক্কায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই ঘটে গিয়েছে এই দুর্ঘটনা। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় উদ্ধারকাজ। সমস্ত যাত্রীকেই বিমান থেকে বের করার চেষ্টা শুরু হয়। কিন্তু মাত্র দুজনকে জীবিত অবস্থায় সেখান থেকে বার করা গিয়েছে বলে দাবি। মনে করা হচ্ছে, ১৭৯ জনই মারা গিয়েছে।
দুর্ঘটনার চারঘণ্টা পরে বিমানবন্দরে অপেক্ষমাণ দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটির যাত্রীদের আত্মীয়দের জানিয়ে দেওয়া হয়, সম্ভবত প্রায় কেউই বেঁচে নেই। সঙ্গে সঙ্গে হতাশা ও কান্নায় ভেঙে পড়ার শব্দ পাওয়া যায়। অনেকে চৈতন্য হারিয়ে মাটিতে পড়ে যান। কেউ বেঁচে আছেন কিনা, এই প্রশ্নে মাথা নিচু করে বন্দর আধিকারিক জানিয়ে দেন, ''দুর্ভাগ্যজনক হলেও আমাদের তেমনই মনে হচ্ছে।'' বহু ব্যক্তিকেই সেখানে বিলাপ করতে দেখা যায়। কারও মনে পড়ছিল, গতকালও কথা হয়েছে যে আপনজনের সঙ্গে আর তার সঙ্গে কখনও দেখা হবে না। পরে দুর্ঘটনাগ্রস্তদের পরিবারের তরফে আর্জি জানানো হতে থাকে দুর্ঘটনাস্থলে তাঁদের যেতে দেওয়ার জন্য। কিন্তু সেই অনুমতি মেলেনি।