সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এতদিন পাকিস্তান থেকে আমাদানি করা পণ্য 'লাল তালিকা' ভুক্ত ছিল বাংলাদেশে। কিন্তু এবার সেই নিয়মের বদল ঘটল। পাক সরকারের অনুরোধে সেদেশ থেকে আমদানি করা জিনিসপত্র লাল তালিকা মুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ফলে সেভাবে আর কোনও নজরদারি চালানো হবে না পাক পণ্যের উপর। কূটনৈতিক মহলের আশঙ্কা, এই সিদ্ধান্তের পর এবার পাকিস্তান থেকে বহু বেআইনি অস্ত্র, মাদক ঢুকবে বাংলাদেশে। আর এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে দিল্লি।
গত দুমাসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক চিত্র একেবারেই বদলে গিয়েছে। প্রবল গণ আন্দোলনের জেরে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন শেখ হাসিনা। এখন ক্ষমতায় ড.মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। আর এই নয়া সরকার আসায় ঢাকায় সঙ্গে বন্ধুত্ব মজবুত করতে সচেষ্ট চিন, পাকিস্তানের মতো দেশ। ২০০৯ সালে তৎকালীন আওয়ামি লিগ সরকারের সময় নিরাপত্তার যুক্তি দেখিয়ে পাকিস্তান থেকে আসা সব পণ্য লাল তালিকা ভুক্ত করেছিল এনবিআর। কিন্তু রাজনৈতিক পালাবদলের পর ফের ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে উঠেপড়ে লেগেছে ইসলামাবাদ।
জানা গিয়েছে, গত ১০ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের হাই কমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে দেখা করেন। দুদেশের মধ্যে থিতিয়ে পড়া বাণিজ্যিক সম্পর্ককে চাঙ্গা করতে আলোচনা হয় তাঁদের মধ্যে। মনে করা হচ্ছে, সেখানেই পাকিস্তানি পণ্যের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তোলার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রবিবার এনবিআরের সহ সচিব মহম্মদ আবদুল কাইয়ুমের স্বাক্ষর করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, 'পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে আসা সব ধরনের পণ্য রেড লেন থেকে মুক্ত করা হয়েছে। এতদিন শুধুমাত্র পাকিস্তানের পণ্য এই তালিকায় ছিল।' প্রসঙ্গত বাংলাদেশে নুন, সালফার, পাথর, প্লাস্টিকের পণ্য, চুন, সবজি, ফল ও বাদাম,চামড়া, যন্ত্রপাতি, অজৈব রাসায়নিক, ফাইবার, রঞ্জক পদার্থের নির্যাস-সহ নানা জিনিস পাকিস্তান থেকে আমদানি করে বাংলাদেশ।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে পতন ঘটে হাসিনা সরকারের। এর পিছনে চৈনিক চাল বা পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র দেখেছেন অনেকেই। বিশ্লেষকদের ধারণা, পাকিস্তানের মদতে ছাত্র আন্দোলনকে আরও হিংসাত্মক করে তুলেছিল জামাতের মতো মৌলবাদী দলগুলো। যে অভিযোগে জামাতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল তৎকালীন হাসিনা সরকার। কিন্তু এখন সেই নিষেধাজ্ঞা নেই। হাসিনা সরতেই পাকিস্তানও মরিয়া ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে। বাংলাদেশের পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে দিল্লিও। কারণ নিয়ম বদলের পর এবার অবাধে বিভিন্ন পাক পণ্য ঢুকবে বাংলাদেশে। সম্ভাবনা রয়েছে বেআইনি অস্ত্র পাচার হওয়ারও। যা দিয়ে নাশকতার ছক কষা হতে পারে ভারতের বিরুদ্ধে।