সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিনভর আন্দোলনে উত্তাল ঢাকার সচিবালয়। ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-কে কালো আইন উল্লেখ করে এই বিক্ষোভ। আজকের মধ্যে অধ্যাদেশটি প্রত্যাহার না হলে কঠোর কর্মসূচি-সহ তিনদিন ছুটি নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সরকারি কর্মচারীরা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ছাড়াও প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। এদিকে, পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। এবং ৭ দফা দাবিতে সারা দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আধিকারিক ও কর্মচারীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। আগামীকাল মঙ্গলবারও সচিবালয়ে বিক্ষোভ চলবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
সচিবালয়ে কর্মচারীদের এহেন আন্দোলনে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু। গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর রবিবার (২৫ মে) রাতে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করে সরকার। উপদেষ্টা পরিষদে অধ্যাদেশটি অনুমোদনের পর থেকেই গত কয়েকদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন আধিকারিক ও কর্মচারীরা। জানা গিয়েছে, আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সচিবালয়জুড়ে বিক্ষোভ শেষে গেটগুলোর সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। যার জেরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ১, ২ ও ৪ নম্বর গেট বন্ধ করে দেয়। বিক্ষোভে আরও উত্তাল হয়ে ওঠে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়।
অন্যদিকে, দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা আজ থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন শুরু করেছেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রকের কনসালটেশন কমিটির সুপারিশ বাতিল করে ১১তম বেতন গ্রেড-সহ তিন দফা দাবি আদায়ে এই আন্দোলন করছেন তারা। শিক্ষকরা বলছেন, "তাদের দাবি ছিল দশম বেতন গ্রেড, সেই জায়গায় অন্তত ১১তম গ্রেডের প্রস্তাব করলেও মানা যেতো। কিন্তু ১২তম গ্রেড প্রস্তাব করা মানে শিক্ষকদের অসম্মান করা। তাই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।" তিন দফা দাবিতে এর আগে গত ৫ মে থেকে এক ঘণ্টার কর্মবিরতির মধ্য দিয়ে আন্দোলন-কর্মসূচি শুরু করেন তারা, যা চলে ১৫ মে পর্যন্ত। ১৬ থেকে ২০ মে পর্যন্ত প্রতি কর্মদিবসে দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেন তারা। এরপর ২১ মে থেকে ২৫ মে অর্ধদিবসের কর্মসূচি পালন করেন তারা। রবিবার (২৫ মে) তাদের অর্ধদিবস কর্মসূচি পালন শেষ হলে সোমবার থেকে শুরু হয়েছে লাগাতার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি।
প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, "সারা দেশের সরকারি সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে। সারা দেশের সব সহকারী শিক্ষক কর্মসূচি পালন করলেও এ বিষয়ে সরকার কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলতে থাকবে। তবে কোনও পরীক্ষা এই কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত থাকবে না।" অপরদিকে অভিন্ন চাকরি বিধি বাস্তবায়ন, হয়রানি বন্ধ, মামলা প্রত্যাহার-সহ ৭ দফা দাবিতে সারা দেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আধিকারিক ও কর্মচারীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন। বিদ্যুৎসেবা চালু রেখে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ কর্মসূচিতে যোগ দেন কয়েকশ কর্মচারী।
