সুকুমার সরকার ঢাকা: নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে চুপিসাড়ে সমুদ্রে নেমে ইলিশ শিকার! হাতেনাতে তার 'শাস্তি'ও পেলেন বাংলাদেশের মৎস্যজীবীরা। টানা ২২ দিন ধরে বরফের মধ্যে থাকায় বেশিরভাগ মাছই পচে গিয়েছে। ফলে বন্দরে মাছ ধরার ট্রলার ফেরার পর এলাকায় ছড়িয়েছে দুর্গন্ধ। মাথায় হাত পড়েছে ধীবরদের। তবে এর মাঝেও সুখবর। সাদ্দাম হোসেন নামে এক মৎস্যজীবার জালে ধরা পড়েছে আড়াই কেজির একটি ইলিশ মাছ। কমলনগরের মতিরহাট মাছঘাটে তার দর উঠল ৯২০০ টাকা। সর্বোচ্চ এই দামে 'রুপোলি শস্য' কিনে নিয়েছেন আমির হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী।
মাছ ধরা নিয়ে নিষেধাজ্ঞার মরশুম শেষ হওয়ার পরই বাংলাদেশের ভোলার বাসিন্দা সাদ্দাম ১৫ জন সঙ্গী নিয়ে সাগরে মাছ শিকারে যান। শনিবার রাতে জাল ফেললে অন্যান্য ইলিশের সঙ্গে ওই বড় ইলিশটিও ধরা পড়ে। পরে মাছটি আড়তে আনা হলে নিলামে ৯২০০ টাকায় তা বিক্রি হয়। তবে মেঘনা নদীতে এবছর মাছ কম ধরা পড়েছে। তাতেই এই চড়া দাম বলে জানিয়েছেন আড়তদার। মাছের আড়তদার মহম্মদ বাবুল বলেন, ''সাদ্দাম অনেকগুলো মাছ-সহ বড় ইলিশটি আড়তে নিয়ে আসেন। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রথম দিনেই একটি বড় ইলিশ আড়তে এসেছে। বেশি দামেই বিক্রি হয়েছে। সচরাচর এত বড় ইলিশ ধরা পড়ে না।'' যিনি ৯২০০ টাকা দিয়ে মাছটি কিনেছেন, সেই ব্যবসায়ী আমির হোসেন বলেন, ''আড়াই কেজি ওজনের ইলিশটি ৯ হাজার ২০০ টাকায় কিনেছি। ঢাকার মোকামে বড় ইলিশের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। সেখানে পাঠানো হবে। আশা করছি, অন্তত ১১ থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারব।"
এদিকে, ইলিশের পচা গন্ধে ভোলা জেলার সামরাজ মৎস্যঘাট লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা তিষ্ঠোতে পারছেন না। চিরচেনা এই মৎস্যঘাটে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। এবার কয়েকজন মৎস্যজীবীর জন্য এমন পরিস্থিতি হল এলাকায়। ইলিশ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার ৬ ঘণ্টার মধ্যেই ইলিশ বোঝাই শতাধিক মাছ ধরা ট্রলার মৎস্যঘাটে ভিড়েছে। তাতেই বোঝা যায়, ওই 'চতুর' ধীবররা নিষেধাজ্ঞার সময়েও গভীর সমুদ্রে ইলিশ শিকার করেছে। আর নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর শত শত টন পচা ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফেলা হয়েছে। পচা ইলিশের ভাগাড় দেখে সাধারণ ক্রেতারা অবাক। সামরাজ মৎস্যঘাটের একতা ফিশের আড়তদার বলেন, ''এসব মাছ সাগরের। ২২ দিন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ধীবররা সাগরে ইলিশ শিকার করেছে। এই মৎস্যঘাটে ৯৮ জন মৎস্য আড়তদার রয়েছে। এসব আড়তদাররা প্রায় দেড়শ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।’’
