সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লিবাস নিয়ে এই মুহূর্তে বেশ আলোচনা চলছে দু'দেশের কূটনৈতিক মহলে। দিল্লির আশ্রয়ে থাকা নিয়ে হাসিনাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। এর মাঝেই দু'দেশের সম্পর্ক নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় বর্মা। তাঁর মতে, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ককে সামনে এগিয়ে নিতে পারস্পরিক নির্ভরতা ও পারস্পরিক উপকারের বাস্তবতাই সবচেয়ে বড় চালিকাশক্তি হয়ে থাকবে। অতীতের অভিন্ন ত্যাগ ও ভবিষ্যতের নতুন আকাঙ্ক্ষা দু'দেশের জনগণের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করে তুলবে।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ওল্ড ইন্ডিয়া হাউসে ‘মৈত্রী দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রণয় বর্মা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা, সংস্কৃতিকর্মী, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে দাঁড়িয়ে বলেন, ''১৯৭১ সালে ভারতের জনগণ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে পাশে দাঁড়িয়েছিল এবং একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, অগ্রগামী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গঠনের পথচলায় ভারত সবসময় পাশে থাকবে।'' তিনি স্মরণ করেন, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি দেয় ভারত, যা দুই দেশের ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক।
ভারতের হাইকমিশনারের আরও বক্তব্য, বাংলাদেশ মুক্ত হওয়ার দশদিন আগেই ভারতে এই স্বীকৃতি আসে, যা ইতিহাসে এক অবিচ্ছেদ্য মুহূর্ত হয়ে রয়েছে। এই দিনটি দুই দেশের গভীর সহমর্মিতা, বিশ্বাস এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দিন। এটি একইসঙ্গে দুই জাতির দীর্ঘকালীন সম্পর্কের ভিত্তিকে দৃঢ়ভাবে স্মরণ করিয়ে দেয়। প্রণয় বর্মা বলেন, ''বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বর্তমান সম্পর্ক বহুমাত্রিক এবং একে অপরের উন্নয়নকে পরিপূরক করে। দুই দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ আকাঙ্ক্ষা নতুন সহযোগিতার সুযোগ তৈরি করছে। সীমান্ত পেরিয়ে তা বিদ্যুৎ, জ্বালানি, বাণিজ্য ও পরিবহণে দুই দেশের মানুষের কল্যাণ ও যৌথ সমৃদ্ধি নিশ্চিত করবে। আজ আমাদের সমাজ ও অর্থনীতি এতটাই ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত যে আমরা পরস্পরের উপর নির্ভরশীল। কেউ একা এগোতে পারি না।''
