সুকুমার সরকার, ঢাকা: ২০২১-এর ১৫ আগস্ট আর ২০২৪-এর ৫ আগস্ট। সময়টা তিন বছরের ব্য়বধান হলেও মিল রয়েছে একটি ঘটনায়। বছর তিনেক আগে ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের দখল নিয়েছিল তালিবান। সে দেশের রাষ্ট্রপতি ভবনে ঢুকে দেদার লুটতরাজ চালিয়েছিল তারা। রাষ্ট্রপতি ভবনের ফ্রিজ খুলে খাবার খেয়েছিল তারা। রীতিমতো আয়েশ করে রাষ্ট্রপ্রধানের বিছানায় শুয়েও ছিল। এমনকী, চেয়ার-টেবিল সবই ব্যবহার করেছিল তালিবরা। সোমবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতেও দেখা মিলল একই ছবির। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন দখল নেয় একদল আন্দোলনকারী। চলে বিস্তর লুটতরাজ। চেয়ার, সোফাসেট, কম্বল হাতে পালাতে দেখা যায় তাদের। এক আন্দোলনকারীকে তো শুয়ে থাকতে দেখা গেয় শেখ হাসিনার বিছানায়। এমনকী, ফ্রিজ খুলে মাছ-মাংস-পায়রা লুট করে তারা।
শেখ হাসিনা তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর সুযোগ বুঝে আন্দোলনকারীদের একাংশ সেখান থেকে লেপ, কাঁথা, বালিশ ও চেয়ার থেকে শুরু করে টেবিল ফ্যান, চেয়ার, সোফাসেট, কম্বল, জলের ফিল্টার, মাইক্রোওভেন লুট করে পালায়। এমনকী, বাসভবন থেকে মুগরি, পায়রা এমনকী ফ্রিজ খুলে মাছ-মাংস নিয়েও চম্পট দেয় তারা। ঘড়ি, রাউটার, কাগজ, কম্পিউটার, এসি, ফ্রিজ কিছুই বাদ যায়নি। এমনকী, আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ হাসিনার শাড়িও পরে ফেলেন। অনেকে গণভবনের জলাশয়ে জাল ফেলে মাছ ধরে নিয়ে যায়।
এ সময় গণভবনের বিভিন্ন ঘর ভাঙচুর করা হয়। সোমবার বিকেল তিনটের পর আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে গণভবনে প্রবেশ করে। গণভবনের সভাকক্ষে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে সঙ্গে সঙ্গে উদ্যম নাচে মেতে ওঠে।
ছবি: সংগৃহীত।
[আরও পড়ুন: ‘স্বাধীন দেশে স্বাগত’, হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়তেই ‘নিকৃষ্ট, নিষ্ঠুরতম স্বৈরশাসক’ কটাক্ষ ফারুকীর]
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা-সহ সোমবার বেলা আড়াইটেয় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে দেশ ছাড়েন। এর আগে দুপুরে সেনা সদরদপ্তরে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বৈঠকে জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, জামাত নেতৃবৃন্দ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল-সহ অনেকে বৈঠকে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।