পলাশ পাত্র, তেহট্ট: আশা ছিল বড় ছেলের পুত্রসন্তান হবে। সেই মতো একমাস আগে থেকে বছর পঞ্চাশের মহিলা বিড়ি বাঁধতে শুরু করেন। উদ্দেশ্য নাতির জন্য সোনার লকেট কেনা। মুখ দেখে যা নাতিকে উপহার দিতেন তিনি। প্রতিবেশীর কাছেও মনের কথা চেপে রাখেননি ওই মহিলা। কিন্তু নাতনি হওয়ার খবরে মনখারাপ হয়ে যায় তাঁর। নাতি না হওয়ায় বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হলেন ওই মহিলা। ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মৃতার পরিজনেরাও। একবিংশ শতাব্দীতে এমন অবাক করা ঘটনার সাক্ষী নদিয়ার তেহট্টর বেতাই জিৎপুর।
[আরও পড়ুন: ‘NRC-কে ঝেঁটিয়ে বিদায় করব’, হুংকার অভিষেকের]
আত্মঘাতী আন্না নামে ওই মহিলার স্বামী সত্যরঞ্জন মণ্ডল চাষ করেন। কাঁচামালের ব্যবসাও করেন তিনি। সংসারে কোনও অভাব নেই। তাঁদের চার ছেলে এবং দুই মেয়ে। ওই মহিলার বড় ছেলে গৌতম মণ্ডল কয়েকবছর আগে বিয়ে করেন। গত ১৪ সেপেটম্বর তাঁর স্ত্রী তেহট্ট হাসপাতালে এক শিশুকন্যার জন্ম দেন। শাশুড়ি আন্না নাতি না হওয়ায় অসন্তুষ্ট হন। তারপর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকেন তিনি। খাওয়াও প্রায় ছেড়ে দেন। মহিলার বড় ছেলে বলেন, “মা আশা করেছিলেন আমার ছেলে হবে। মায়ের ইচ্ছা ছিল নাতিকে সোনার লকেট দেবেন। মা আগে বিড়ি বাঁধার কাজ করতে চাইতেন। আমরা বারণ করায় করতেন না। কিন্তু গত এক মাস ধরে কোনও বারণ শোনেননি। বিড়ি বেঁধেছেন। বিড়ি বেঁধে উপার্জিত টাকা দিয়ে নাতির কথা ভেবে সোনার লকেটও কেনেন। শনিবার আমার স্ত্রী ও কন্যাকে হাসপাতালে থেকে বাড়িতে নিয়েও আসেন মা।”
[আরও পড়ুন: ফের অশান্ত শিক্ষাঙ্গন, ছাত্র সংসদ দখল ঘিরে গুলি-বোমায় রণক্ষেত্র নদিয়ার কলেজ]
তারপর রাতেই নিজের ঘরে বিষ খান ওই মহিলা। পরিজনরা বুঝতে পেরেই তাঁকে তেহট্ট হাসপাতালে নিয়ে যায়। রবিবার দুপুরে ওই মহিলা মারা যান। পুলিশ জানিয়েছে, নাতি না হয়ে নাতনি হওয়ায় আত্মহত্যার কথা শুনেছি। মানসিক অবসাদ থেকেই এ ঘটনা ঘটেছে বলেই দাবি পরিজনদের। তবে মৃত্যুর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
The post কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন পুত্রবধূ, মানসিক অবসাদে আত্মহত্যা শাশুড়ির appeared first on Sangbad Pratidin.
