বিক্রম রায়, কোচবিহার: মৃত মায়ের গর্ভে জীবিত সন্তান। এমনই ঘটনা ঘটল কোচবিহারের এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসকদের তৎপরতা ও দ্রুত সিদ্ধান্তের ফলেই এই অসাধ্য সাধন করা সম্ভব হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার। এদিন প্রবল প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে তুফানগঞ্জের বলরামপুর থেকে এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আসেন শরিফা খাতুন। বয়স তাঁর প্রায় ২৪। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন শরিফা। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দেখে সঙ্গে সঙ্গে ভরতি করে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা দেখতে শুরু করেন। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই প্রসূতির মৃত্যু হয়। কিন্তু প্রসূতির গর্ভের সন্তান কি জীবিত রয়েছে? এই প্রশ্ন জাগে চিকিৎসকদের মনে।
[আরও পড়ুন: আড়ি পাতা এড়াতে বিশেষ কৌশল! রাজ্যের সচিবদের আইফোন ব্যবহারের পরামর্শ মুখ্যমন্ত্রীর]
স্থেথোস্কোপ প্রসূতির গর্ভে রেখে পরীক্ষা করা হয়। দেখা যায়, তাঁর গর্ভের সন্তানের হৃৎপিণ্ড তখনও সচল। সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মাত্র দু’মিনিটের মধ্যেই অস্ত্রোপচার করে মৃত মহিলার গর্ভের সন্তানকে বের করে আনা হয়। দেখা যায়, সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে সে। তবে সাবধানতার কারণে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা সেরে শিশুকে হাসপাতালের নিকু বিভাগে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
মাত্র ২৪ বছর বয়সে শরিফা খাতুনের মৃত্যুতে শোকবিহ্বল তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এ বিষয়ে কোনও কথা বলার মতো অবস্থায় তাঁরা নেই। এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার ড. রাজীব প্রসাদ জানান, খুবই গুরুতর অবস্থায় যুবতীকে আনা হয়েছিল। পরীক্ষা চলাকালীনই তাঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসার সময়টুকু পাওয়া যায়নি। কিন্তু চিকিৎসকরা যখন দেখে মহিলার গর্ভের সন্তান জীবিত রয়েছে কোনও সময় অপচয় করেননি। আপাতত শিশুটিকে কয়েকটা দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। তারপর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলেই খবর। মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের জন্যই এই অসাধ্য সাধন সম্ভব হয়েছে বলে মত এলাকাবাসী। গোটা জেলায় এই ঘটনা নজির হয়ে থাকবে বলেই মত তাঁদের।
