বিক্রম রায়, কোচবিহার: বাবা বিজয়কুমার বৈশ্যকে নৃশংসভাবে খুন করে শোকেসে রেখে দিয়েছিল অভিযুক্ত প্রণবকুমার বৈশ্য। পিসতুতো দাদা গোপাল রায়কেও সেই খুন করেছে। এমন সম্ভাবনার কথাও প্রায় নিশ্চিত করছে পুলিশ। এবার ওই যুবকের মা ও পিসির মৃত্যু নিয়েও প্রশ্ন উঠল। বৈশ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, আগেই মা ও পিসি মারা গিয়েছিলেন। তাঁদের মৃত্যুর খবরও এই যুবকই দিয়েছিল। সেই সময় ওই দুজনের মৃত্যু স্বাভাবিক বলেই জানানো হয়। তাহলে সেখানেও কোনও অঘটন ছিল?
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, প্রণবের মা সরস্বতী বৈদ্য গত দুর্গাপুজোর পর মারা গিয়েছিলেন। ব্রেন স্ট্রোকে তিনি মারা যান। এমন কথাই জানানো হয়েছিল। অন্যদিকে সম্পর্কে পিসি, মৃত গোপাল রায়ের মা মঙ্গলা রায় এবার লক্ষ্মীপুজোর সময় মারা যান। সেই খবরও জানিয়েছিল সে। তাহলে তাঁদেরও খুন করা হয়েছিল? পুলিশের কাছেও সেই প্রশ্ন উসকে যাচ্ছে। এই বিষয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথাও বলেছেন আধিকারিকরা।
গতকাল থেকেই প্রণবের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। লোকেশন ট্র্যাক করার চেষ্টাও করছেন পুলিশ আধিকারিকরা। তার পরিচিত মহল, বন্ধুবান্ধবদের কাছেও যাচ্ছেন তদন্তকারীরা। নাকাচেকিংও চলেছে আশেপাশের জায়গায়। অন্যান্য থানার সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রণব কোথাও একটা গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে। তাকে ধরতে পারলেই সব জট কাটবে। এমনই মনে করছেন তদন্তকারীরা। সেপ্টিক ট্যাঙ্কে পিসতুতো দাদাকে এতদিন মেরে গুম করে রাখা হয়েছিল। তারপরেও নিশ্চিন্তে ওই বাড়িতেই থেকেছে প্রণব। কোন মানসিকতায় পৌঁছে গিয়েছে সে? মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকেই বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। হুট করে এসে প্রতিবেশীদের উপরেও হামলা চালাতে পারে প্রণব। এই আশঙ্কাও করছেন বাসিন্দারা।
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, বৃদ্ধের একটি পা পচন ধরায় বাদ দিতে হয়েছিল। সেই থেকে তিনি অসুস্থই থেকেছেন। বাবাকে প্রায়শই মারধর করত ছেলে। রবিবার রাতেও বৃদ্ধকে মারধর করা হয়েছিল। প্রণব সকলের সঙ্গেই দুর্ব্যবহার করত। সারাদিন নেশাগ্রস্ত অবস্থাতেই কাটে তার। সেজন্য প্রণবের থেকে দূরে থাকতেন প্রতিবেশীরা। তদন্তকারী এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, নেশা না করলে এতটা ভয়ডরহীন প্রণব হতে পারত না। নিজের পিসতুতো দাদাকে খুন করে সেপ্টিক ট্যাঙ্ক ফেলে রেখেছিল। অথচ, বাইরে কিছু বুঝতেই দেয়নি।