সৈকত মাইতি, তমলুক: মা পঞ্চায়েত সদস্যা। দুই দিদি সরকারি হাসপাতালের নার্সের পদে চাকরি করেন। ভাল নম্বর নিয়ে পাশ করেও মিলছিল না মনের মতো চাকরি৷ আর তাই অভিমানে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মঘাতী হলেন নন্দকুমারের ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া। রবিবারের এই ঘটনায় নন্দকুমারের সাওড়াবেড়িয়া জালপাই এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া৷
[জনসভা থেকে ফেরার পথে হামলা, বরাতজোরে রক্ষা দিলীপের]
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া সুশোভন মণ্ডল (২৩)। বাবা রাজকুমার মণ্ডল গ্রামের হাতুড়ে চিকিৎসক। তবে, মা পঞ্চায়েত সদস্যা সিন্ধুরানি মণ্ডল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেই তিনি সাওড়াবেড়িয়া জালপাই ১ গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। দুই দিদিই পড়াশোনা শেষ করে সরকারি হাসপাতালে নার্সের চাকরি করছেন৷ সুশোভনকে মেধাবী বলেই জানতেন স্থানীরা৷ উচ্চমাধ্যমিক পাশের পরই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য শান্তিনিকেতনে চলে যান। সেখানে পঠনপাঠন শেষ করে বন্ধুদের মতোই চাকরির সন্ধানে হন্যে হয়ে ঘুরছিলেন সুশোভন। কিন্তু, মনের মতো চাকরি জুটছিল না৷ তাই মানসিক অবসাদে ভেঙে পড়েছিলেন ওই যুবক৷ এ জন্য চেন্নাইয়ে নিয়ে গিয়ে তার চিকিৎসাও চলে। এমন অবস্থায় মাস তিনেক আগে মেচেদায় একটি বেসরকারি সিমেন্ট কারখানায় অস্থায়ী কাজে যোগ দেন৷ কিন্তু, যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ না পেয়ে অস্থির হয়ে ওঠেন সুশোভন৷ ফলে, সম্প্রতি মানসিক ভাবে আরও ভেঙে পড়েছিলেন।
[স্কুলছুটদের মূলস্রোতে ফিরিয়ে ‘বীরাঙ্গনা’ পুরস্কার পাচ্ছেন বসতিবাসী সীমা]
গত তিনদিন এই অবসাদের জেরে কাজেও যোগ দেননি সুশোভন। এদিকে মেচেদায় কার্তিকপুজো উপলক্ষে দিদির বাড়িতে যান মা সন্ধ্যাদেবী৷ শনিবার রাতে বাড়ির পাশের একটি শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া সেরে বাড়ি ফিরেও এসেছিলেন বাবা ও ছেলে৷ রাতে যথারীতি ঘুমিয়েও পড়েন তাঁরা। পরদিন সকালে ছেলে ঘুম থেকে উঠছে না দেখে ডাকাডাকি শুরু করেন বাবা রাজকুমারবাবু৷ পরে দরজা খুলে সুশোভনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়৷ মুহূর্তেই শোকের ছায়া নেমে আসে এলাকায়৷ ছেলের মৃত্যুতে ঘনঘন মূর্ছা যান মা সন্ধ্যাদেবী। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়ার আত্মহত্যার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় নন্দকুমার থানার পুলিশ৷
[বন্ধুত্ব সুদৃঢ় করতে মেলায় গিয়ে মালাবদল! ব্যাপারটা কী?]
এদিনের এই ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, ‘‘এলাকায় অত্যন্ত শিক্ষিত মণ্ডল পরিবারের একমাত্র সন্তান সুশোভন। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার শেষে ঠিকঠাক চাকরি না পেয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। এ নিয়ে চিকিৎসাও চলছিল। কিন্তু আচমকাই যে এমনটা ঘটনা ঘটতে পারে তা ভাবতেই পারছি না।’’
The post মনের মতো চাকরি না পেয়ে আত্মঘাতী ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া appeared first on Sangbad Pratidin.
