ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: মুখে অনেক কথা। কার্যক্ষেত্রে তার থেকে অনেক দূরে। বিধায়ক, কাউন্সিলরদের ইস্তফা নিয়ে মোর্চার সিদ্ধান্তহীনতায় পাহাড়ের অন্যান্য দলগুলির মধ্যে ক্রমশ সন্দেহ দানা বাঁধছে। সবাইকে নিয়ে আন্দোলনের কথা বললেও, দিল্লিতে রোশন গিরির হত্যে দিয়ে বসে থাকাকে ভালভাবে নিচ্ছে না মোর্চা বিরোধী দলগুলি। তাদের অনুমান, তলে তলে কেন্দ্রের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছে মোর্চা। বিমল গুরুংয়ের দলের এই অবস্থানের পাল্টা ছকও ভেবে রেখেছে মোর্চা বিরোধী জিএনএলএফ, গোর্খা লিগ, জন আন্দোলন পার্টি।
[চাপের মুখে অবশেষে ইদে বনধ শিথিলের সিদ্ধান্ত মোর্চার]
জিটিএ’র মেয়াদ আর এক মাসও নেই। এমন সময় ঘটা করে জিটিএ থেকে গণ ইস্তফা দিলেন মোর্চার সদস্যরা। এই পদক্ষেপের পর মোর্চা অনেক হল্লা করলেও, রাজ্য সরকার জানিয়েছে তারা রোশন গিরি ছাড়া আর কারও পদত্যাগপত্র পায়নি। এই খবরে পাহাড়ের অন্যান্য দলগুলির মধ্যে কৌতুহল তৈরি হয়েছে। মুখে ইস্তফার কথা বললেও আদৌ জিটিএর অন্যান্য পদাধিকারীরা পদত্যাগ করেছেন কিনা তা নিয়ে মোর্চাকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। জিএনএলএফ, সিপিআরএম, গোর্খা লিগ বা জন আন্দোলন পার্টি গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে মোর্চার পাশে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ইস্তফা নিয়ে মোর্চার দাবি ঘিরে খানিকটা সন্দিহান এই দলগুলি। পাশাপাশি মোর্চার কাছে তারা যে শর্ত দিয়েছিল তার কোনও উত্তর মেলেনি। পাহাড়ের বিধায়ক, কাউন্সিলরদের পদত্যাগের শর্ত থাকলেও মোর্চা বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছে। এই পদক্ষেপে মোর্চা বিরোধী দলগুলির ধারণা কোথাও সমঝোতার রাস্তা খোঁজা হচ্ছে। তলে তলে কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে মোর্চা। যার জন্য দিল্লিতে রয়েছেন মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি। বিমল গুরুং ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে সন্দেহ অন্যান্য দলগুলির।
[মোর্চার আন্দোলনের ঐক্যে ‘ফাটল’? বেসুরো জিএনএলএফ, হরকা]
২৭ জুন জিটিএ চুক্তি পোড়ানোর কর্মসূচি নিয়েছে মোর্চা। ২৯ জুন মোর্চার ডাকে সর্বদল বৈঠক হবে। ওই বৈঠকে মোর্চা কী বলতে চায় তার দিকে নজর মোর্চা বিরোধী দলগুলির। এই নিয়ে ঘুঁটি সাজাতে গোপনে নিজেদের মধ্যে আলোচনা, বৈঠক করেছে গোর্খা লিগ, জাপ, জিএনএলএফ। পাহাড়ে গোর্খা লিগের প্রথম সারির এক নেতার কথায়, মোর্চার পদক্ষেপে সংশয় রয়ে গিয়েছে। মোর্চা এভাবে কেন সবকিছু ঝুলিয়ে রাখছে তা বোধগম্য হচ্ছে না। পাহাড়ে মোর্চা দাদা হওয়ার চেষ্টা করলে তারা যে মানবেন না তা স্পষ্ট করে দিয়েছে গোর্খা লিগ। মোর্চা বিরোধী আরও একটি দলের কথায়, গোর্খাল্যান্ড নিয়ে বিমল গুরুংয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা কেমন তা পাহাড়ের মানুষ জানেন। এর জন্যই তারা প্ল্যান বি তৈরি রাখছেন। পাহাড়ের অন্য দলগুলি জানিয়েছে মোর্চা নিজেদের স্বার্থে আন্দোলন কাজে লাগালে এই কর্মসূচি থেকে তারা বেরিয়ে আসতেও তৈরি। মোর্চার সঙ্গে থাকা হবে কিনা এই নিয়ে জিএনএলএফের মধ্যে মতান্তর রয়েছে। একটা অংশের বক্তব্য গুরুংদের সঙ্গে না থাকলে দল জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। অপর অংশ বলছে আলাদা ফোরাম বানিয়ে আন্দোলন করাটাই সঠিক পথ। পাহাড়ের হালচাল নিয়ে জাপ নেতা হরকা বাহাদুর ছেত্রীর বক্তব্য, গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন মোর্চার, এমন ব্যাখ্যা ঠিক নয়।
The post কেন্দ্রের সঙ্গে সমঝোতা? মোর্চার হাবভাবে সন্দিহান পাহাড়ের অন্য দলগুলি appeared first on Sangbad Pratidin.
