shono
Advertisement

ফের দাবানলের কবলে পুরুলিয়ার দুর্গম পাহাড় চূড়ার জঙ্গল, আগুন নেভাতে বাধা প্রকৃতিই

বন্যপ্রাণের ক্ষতি কতটা? ধারণা করতে পারছেন না বনকর্তারাও।
Posted: 09:41 PM Apr 15, 2021Updated: 09:55 AM Apr 16, 2021

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: একটা গোটা দিন পার। কিন্তু ২৫০ ফুট উঁচু পাহাড় চূড়োয় এখনও দাবানল (Forest fire) নেভেনি। দাউদাউ করে জ্বলছে পুরুলিয়ার (Purulia) রঘুনাথপুর বনাঞ্চলের সাঁতুড়ি বিটের রামচন্দ্রপুর পাহাড়। লেলিহান শিখা কুড়ি-পঁচিশ কিমি দূর থেকেও একেবারে স্পষ্ট। আর তার সামনে কার্যত অসহায় বনদপ্তর ও দমকল বিভাগের। কারণ, এই পাহাড় চূড়ায় ওঠার কোন রাস্তাই নেই। তাই প্রকৃতির উপরেই ছেড়ে দিয়েছে পুরুলিয়ার কংসাবতী উত্তর বনবিভাগের রঘুনাথপুর বনাঞ্চলের আধিকারিকরা। তাঁদের কথায়, প্রকৃতির আপন নিয়মেই দাবানল নিভে যাবে।

Advertisement

বুধবার সন্ধেবেলা যে আগুন জ্বলে উঠেছিল পাহাড়ের মাথায়, তা বৃহস্পতিবার রাতেও নিভল না। রাতভর ফায়ার ব্লোয়ার দিয়ে পাহাড়ের নিচের অংশের আগুন নেভান বনকর্মীরা। কিন্তু পাহাড় চূড়োর দাবানল নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে মানুষজনকে সতর্ক করে রাতেই কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় বন দপ্তর। রঘুনাথপুর বনাঞ্চলের আধিকারিক বিবেক ওঝা জানিয়েছেন, “ওখানে কোনও বন্যপ্রাণ নেই। ওখান থেকে অনেকটা দূরে বড়ন্তিতে হরিণ রয়েছে। আমরা মানুষজনকে সাবধান করেছি এখন আপাতত ওই পাহাড়ে না যেতে।”

[আরও পড়ুন: মাকড়সার জাল থেকে বেরিয়ে এল সুর! অবাক কাণ্ড ঘটালেন বিজ্ঞানীরা]

কিন্তু পরিবেশ ও বণ্যপ্রাণ প্রেমীদের প্রশ্ন যে পাহাড়ে ওঠার কোন রাস্তাই নেই, সেখানে বনদপ্তর কীভাবে এত নিশ্চয়তার সঙ্গে বন্যপ্রাণের অস্তিত্ব উড়িয়ে দিচ্ছে? বনজ সম্পদের খোঁজে ওই জঙ্গলে প্রায় নিত্য যাওয়া-আসা ওই পাহাড়তলির মানুষজনদের। তাঁদের কথায়, “আমরা তো কোনওদিন পাহাড় চূড়োয় উঠিনি। ফলে জানি না কোনও বন্যপ্রাণ রয়েছে কিনা। তবে এই এলাকার জঙ্গলগুলিতে হায়নার যা দাপট! সেই সঙ্গে হরিণেরও যাওয়া-আসা মাঝেমধ্যে দেখা মেলেয। ফলে দুর্গম ওই পাহাড়ে কোনও বণ্যপ্রাণ নেই, সেটা নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না।” এইভাবেই সেই মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই পুরুলিয়ার একের পর এক বনাঞ্চলে দাবানল চলছেই। ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে হেক্টরের পর হেক্টর বনাঞ্চলের। গত মার্চ মাসে পুরুলিয়ার বিভিন্ন বনাঞ্চলে টানা সাত দিনের আগুনে ১০০ হেক্টরের বেশি জঙ্গল ক্ষতির মুখে পড়ে। তারপর থেকে পুরুলিয়া জুড়ে প্রায় সমস্ত বনাঞ্চলে ঢোকার মুখে দেহ তল্লাশি সেইসঙ্গে একেবারে জঙ্গলের ভেতরে নাকা চেকিং চললেও দাবানল আটকাতে পারছে না বনদপ্তর।

[আরও পড়ুন: করোনা ভ্যাকসিনের অভাব, পশ্চিম মেদিনীপুরে ধাক্কা খেল টিকাকরণ কর্মসূচি]

আসলে ৪০-৪১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের দাবদাহ। শুকিয়ে খটখটে জঙ্গলের মধ্যে থাকা শুকনো কাঠ, ঝরা পাতার স্তূপ। কোনওভাবে আগুন লেগে এই দাবানলের চেহারা নিয়েছে বলে বনবিভাগের প্রাথমিক অনুমান। তাহলে কি এই জঙ্গলে ঢোকার মুখে দেহ তল্লাশি হচ্ছে না? হচ্ছে না নাকা চেকিং? নাকি বন্যপ্রাণ মারতেই চোরাশিকারিরা এইভাবে চোরাগোপ্তা আগুন লাগাচ্ছে? সব প্রশ্নগুলিই খতিয়ে দেখছে বনদপ্তর।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup রাজধানী এক্সপ্রেস toolbarvideo ISL10 toolbarshorts রোববার