অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: হাওড়া পুরসভার এক সাফাই কর্মীর গলা কাটা রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে আতঙ্ক ছড়াল উত্তর হাওড়ার (Howrah) সালকিয়ার কুলতলা লেনে। শঙ্খ চট্টোপাধ্যায় ওরফে মধু নামে ওই ব্যক্তির গলায় গভীর আঘাতের চিহ্ন ছিল, দেহের পাশ থেকে পাওয়া গিয়েছে ভাঙা মদের বোতল ও ভাঙা কাঁচের গ্লাস (Glass)। দেহটি তাঁর বাড়ির একতলার ঘর থেকেই উদ্ধার হয়েছে। শঙ্খের পরিবারের অভিযোগ, বন্ধুর সঙ্গে মদ খাওয়ার সময় সেই মদের (Drink) আসরেই ওই ব্যক্তি শঙ্খকে খুন করে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মালিপাঁচঘড়া থানার পুলিশ। শঙ্খের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর পাশাপাশি রবিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা যান। তিনি খুন হয়েছেন কি না, যদি খুন হয়ে থাকেন তাহলে কে বা কারা তাঁকে খুন করলে, তা খতিয়ে দেখছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা।
শঙ্খের এক দাদা প্রভাস কুমার রবিবার জানালেন, শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ শঙ্খের কোনও এক বন্ধু (Friend) তাঁদের বাড়িতে আসে। তারপর শঙ্খের সঙ্গে একতলার ঘরে বসেই গল্পগুজব করছিল সে। দুপুরবেলা বাড়ির দোতলায় উঠে দুই বন্ধু শঙ্খের মায়ের কাছে মধ্যাহ্নভোজ (Lunch) সারে। তারপর আবার একতলার ঘরে বসে মদ খেতে শুরু করে দুই বন্ধু। শঙ্খের অপর এক দাদা দেখেন সন্ধে পর্যন্ত দুই বন্ধু ঘরে বসেই গল্পগুজব করছে ও মদ্যপান করছে। এরপর রাত ১০টা নাগাদ শঙ্খের ওই দাদাই দেখেন, শঙ্খের ওই ঘরের আলো, পাখা জ্বলছে। দরজা ভেজানো রয়েছে। ঘরে ঢুকে তিনি দেখেন মেঝেতে শঙ্খের রক্তাক্ত দেহ (Deadbody) পড়ে রয়েছে। মেঝেতে ভাঙা মদের বোতল, কাঁচের গ্লাসের পাশাপাশি ওই ঘরের খাটে পড়ে রয়েছে আপেল ও একটি চশমা।
[আরও পড়ুন: গাড়ি চালানো শেখার সময় শিশুকে পিষে দিল যুবক, রণক্ষেত্র ময়নাগুড়ি]
শঙ্খের দাদা প্রভাস কুমার আরও জানালেন, শঙ্খের চশমা পরতেন না। ওই চশমাটি তাঁর বন্ধুরই। দাদার অভিযোগ, মদের কাঁচের গ্লাস ভেঙে সেই ভাঙা অংশ গলায় চালিয়ে তাঁর ভাইকে খুন করা হয়েছে। শঙ্খের পরিবারের তরফে আরও জানানো হয়েছে, বন্ধু তাঁর সঙ্গে মদ খেতে এসেছিল আহিরিটোলা থেকে। ওই বন্ধু নিয়মিত শঙ্খদের বাড়িতে আসতেন না বলেও তাঁর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে। পুলিশ মৃতের পরিবারের সমস্ত বক্তব্য খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করেছে। প্রসঙ্গত, হাওড়া পুরসভার (Howrah Municipality) সাফাই কর্মী শঙ্খ জেলাশাসকের বাংলোয় কর্তব্যরত ছিলেন। বিয়ে করেননি শঙ্খ। মায়ের সঙ্গে সালকিয়ার ওই বাড়িতেই থাকতেন। তাঁর কোনও শত্রু ছিল না বলেই প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন। তা সত্ত্বেও কেন তাঁর এই পরিণতি হল তা কেউই বুঝে উঠতে পারছেন না।