দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: স্ত্রীকে 'খুন' করে থানায় গিয়ে নাটক? স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে, সেই কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। এদিন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার স্বামী! বৃহস্পতিবার থেকে নিখোঁজ থাকা এক গৃহবধূর বস্তাবন্দি পচাগলা দেহ শনিবার উদ্ধার হয়েছিল। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং থানার পাঙাসখালি এলাকায়। মৃতের নাম মৌসুমি সর্দার নস্কর (৩০)। ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হল মৃতার স্বামী তাপস নস্করকে। স্ত্রী পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে! দীর্ঘদিন ধরে সেই সন্দেহ করেছিল স্বামী। সেই সন্দেহ থেকেই স্ত্রীকে খুন করা হয়েছে। তেমনই মনে করছে পুলিশ।
ক্যানিংয়ের দিঘিরপাড় পঞ্চায়েতের উত্তর অঙ্গবেড়িয়া গ্রামের যুবক তাপস নস্করের সঙ্গে নিকারিঘাটা পঞ্চায়েতের পরানিখেকো গ্রামের বাসিন্দা মৌসুমির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রায় ১০ বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। ওই দম্পতির ৬ ও ৩ বছরের দুই সন্তান রয়েছে। পেশায় রাজমিস্ত্রি তাপস মাঝেমধ্যে বাইরে কাজে যেতেন। সম্প্রতি মাস দুয়েক আগে থেকে মৌসুমির সঙ্গে প্রতিবেশী যুবক ছোট্টু ওরফে শুকদেব সর্দারের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয় বলে অভিযোগ। সেই ঘটনা জানাজানি হতেই দম্পতির মধ্যে বচসা হয় বলে অভিযোগ। এসবের মধ্যেই বৃহস্পতিবার আচমকা বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান মৌসুমি। ক্যানিং থানায় তাপস স্ত্রীর নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করে।
গতকাল শনিবার পাঙাসখালি এলাকার একটি নির্জন জায়গায় খালের পাড়ে বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হয়। পরে পরিবারের লোকজন মৃতদেহ মৌসুমির বলে শনাক্ত করেন। তাপসের অভিযোগ, শুকদেব সর্দারের সঙ্গে স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। তারাই খুন করেছে। ধর্ষণের অভিযোগও তোলা হয়। মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকেই জেরা শুরু করে পুলিশ। জেরায় স্বামী তাপস নস্করের কথায় বেশ কিছু অসঙ্গতি পাওয়া যায় বলে অভিযোগ। এরপরেই ওই ব্যক্তিকে শুরু হয় ধারাবাহিক জেরা। একসময় জেরার ভেঙে পড়ে ওই ব্যক্তি।
পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে মাঝেমধ্যেই অশান্তি হত। সেই অশান্তি থেকেই কি খুন? খুনের ঘটনায় কি আরও একাধিক ব্যক্তি জড়িয়ে আছে? কোথায় খুন করা হয়েছিল? সেসব প্রশ্ন উঠছে।