শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: গারদের ওপারে আর নিকষ অন্ধকার নয়। ওখানেও মুক্তধারা। উপলক্ষ্য মাতৃবন্দনা। দুর্গাপুজোর আয়োজনের মধ্যে দিয়ে আঁধারের জীবন থেকে একটু ভাল থাকার রসদ। জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের বন্দিদের জন্য পুজোর আমেজ পৌঁছে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পুজো উপলক্ষ্যে রয়েছে হরেক রকম অনুষ্ঠান। পাশাপাশি বন্দিদের জন্য রয়েছে ভুরিভোজের ব্যবস্থা।
[মায়ের ডাক বলে কথা, ভিক্ষা করেই দশভুজা বন্দনার আয়োজন]
তাই পঞ্চমীতেই পুজো শুরু হয়ে গিয়েছে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। সেদিন বিকেলে পৌঁছে যায় প্রতিমা। এই মুহূর্তে ১৪৫২ জন বন্দি রয়েছে জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল জেলে। এর মধ্যে মহিলা বন্দির সংখ্যা ৭৮ জন। জেল সুপার শুভব্রত চট্টোপাধ্যায় জানান, পুজোকে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই থাকছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাইরের শিল্পীদের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন জেলবন্দিরাও। পুজো বলে কথা, তাই মেনুতেও এসেছে বদল। রুটি, ভাত তরকারি নয়, দিনের নানা সময়ে রয়েছে নানারকম পদ। ব্রেকফাস্টে দেওয়া হবে কেক প্যাটিস, ডিম, কলা। দুপুরের খাবারে মাছ, মাংস থাকছে সেই সঙ্গে থাকছে মিষ্টি। রাতেও ভাল খাবারের আয়োজন।
[শহরের বনেদিয়ানায় আজও অটুট সাবর্ণদের ‘আটচালার পুজো’]
জেলের ভিতরে মহামায়ার আরাধনাকে কেন্দ্র করে মিষ্টি তৈরিতে হাত লাগিয়েছে বন্দিরাই। তৈরি হচ্ছে বোঁদে, গজা, পানতুয়া। সব মিলিয়ে পুজোর আবহ জেলের ভিতর। সুপারের সংযোজন, চার দেওয়ালই ওদের জীবন। পরিবার থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন। পুজোয় যাতে বন্দিরা উৎসবের আমেজ পায় তার জন্যই এমন আয়োজন। এবার পুজোর সঙ্গে থাকছে ধুনচি নাচের প্রতিযোগিতাও। ঢাক বাজাবে জেলবন্দি দীপক বর্মন। পঞ্চমীর বিকেল থেকেই বাজছে ঢাক। বিসর্জনের বিকেল পর্যন্ত চলবে দেবী বন্দনা। অন্ধকারের বারোমাস্যা থেকে চারদিন একটু অন্যরকম সুযোগ। সব ভুলে এখন ক্ষণিকের আনন্দে ব্যস্ত বন্দিরা।
The post সংশোধনাগারেও মুক্তধারা, মহাপুজোয় মেতেছে বন্দিরা appeared first on Sangbad Pratidin.
