সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সদ্যই মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন। তৃণমূলের পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা (Laxmiratan Shukla)। তারপর থেকেই তাঁর দলবদলের জল্পনায় মুখর রাজনৈতিক মহল। তবে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে জল্পনার অবসান ঘটালেন স্বয়ং প্রাক্তন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। আপাতত রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ালেও কোনও দলে যাওয়ার প্রশ্ন নেই বলে সাফ জানিয়ে দিলেন তিনি।
বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election 2021) আগে ভাঙার খেলা চলছে তৃণমূলে। সদ্যই দলবদল করেছেন শুভেন্দু অধিকারী-সহ অনেকেই। হাওড়ার সংগঠনের পরিস্থিতিও বেশ টলমল। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ‘বেসুরো’ হিসাবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন বারবার। এই পরিস্থিতিতে কোনও ইঙ্গিত না দিয়ে আচমকাই মঙ্গলবার মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। ছাড়েন ঘাসফুল শিবিরের পদও। তারপর থেকে অনেকেই বলছেন, শুভেন্দুর মতো হয়তো বিজেপিতেই যোগ দিতে চলেছেন লক্ষ্মী।
মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর প্রথমবার সাংবাদিক বৈঠকে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন তিনি। সাফ জানিয়ে দিলেন, একজন ক্রীড়াবিদ হিসাবেই তিনি পরিচিতি পেয়েছেন। আবার ক্রীড়াক্ষেত্রে পুরো সময় দিতে চান। তাই কিছুদিনের জন্য রাজনীতি থেকে ‘সন্ন্যাস’ নিচ্ছেন। তবে অন্য কোনও দলে যোগদানের কোনও ভাবনাচিন্তা নেই তাঁর। মন্ত্রিত্ব এবং তৃণমূলের পদ ছেড়েছেন ঠিকই। তবে এখনও বিধায়ক রয়েছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এখনও বিধায়ক পদ ছাড়িনি। রাস্তায় বেরোব।”
[আরও পড়ুন: ‘উনিশে ফোটা পদ্ম একুশে বানের জলে ভেসে যাবে’, দঃ দিনাজপুরের সভায় চ্যালেঞ্জ অভিষেকের]
মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরই বিভিন্ন মহলে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল, তৃণমূলের (TMC) অন্দরে ঠিকমতো কাজ করার সুযোগ পাচ্ছিলেন না প্রাক্তন ক্রিকেটাের। সরাসরি সে বিষয়ে মুখ খোলেননি ঠিকই। একথা নিছকই ভিত্তিহীন, তা নিজের হাবেভাবে প্রকাশ করে দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী। তাঁর দাবি, “যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি তাঁদের এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানাই। উনি বলেছেন আমি ভাল ছেলে। এটাই বড় প্রাপ্তি।” বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও ক্ষোভ নেই বলেও জানান তিনি। তাঁর কথায় “আমি খুব সাদামাটা মানুষ। ক্রীড়াবিদ হিসাবে আমার সবচেয়ে বড় পরিচয়। ম্যাচের আগে সবাই জেতার চেষ্টা করি। তারপর সকলে বন্ধু হয়ে যাই।”
হিংসা থেকে সকলকে দূরে থাকারও বার্তা দেন লক্ষ্মী। তাঁর কথায় “আমরা বাংলায় হিংসা, প্রতিহিংসা দেখতে চাই না। নিজের, নিজের পরিবার, সমাজের খেয়াল রাখুন। হিংসা থেকে দূরে থাকুন।” দলবদলের জল্পনা ওড়াতে লক্ষ্মীর দেওয়া যুক্তি রাজনৈতিক মহলের অনেকেই বিশ্বাস করতে নারাজ। রাজনীতি থেকে সরে আসার নেপথ্যে কোনও না কোনও গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে বলেই দাবি ওয়াকিবহাল মহলের।