পলাশ পাত্র, তেহট্ট: কদিন পরই গোয়ায় ট্রেনিং-এ চলে যাওয়ার কথা ছিল নাকাশিপাড়ার হেথুয়াডহরির বছর বাইশের ছাত্র রাহুল বিশ্বাসের। তাঁর আগে বন্ধুদের আবদার মেটাতে পিকনিক, আর তাতেই বিপত্তি। পিকনিক শেষে নদীতে স্নান করতে যান ৯ বন্ধু। বাকিরা স্নান সেরে উঠে এলেও ভাগীরথীতে তলিয়ে যান রাহুল বিশ্বাস ও অরিন্দম দে নামের দুই যুবক। শনিবার সকালে রাহুলের দেহ উদ্ধার হয় ভাগীরথীর ধার থেকে।
[স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওষুধের পরিবর্তে রোগীদের ‘জল পড়া’র দাওয়াই, সিঙ্গুরে কুসংস্কারের ছায়া]
রাহুল-অরিন্দমদের বন্ধুমহলের একজন সদ্য নতুন মোটরবাইক কিনেছেন। বাইক কেনার খুশিতে বন্ধুদের খাওয়ানোর কথা জানান তিনি। ঠিক হয় এক জায়গায় গেট-টুগেদারের আয়োজন করা হবে। হোটেল ম্যানেজমেন্টের ছাত্র হওয়ার দরুন রান্নার হাত বেশ ভাল রাহুলের। তাই বন্ধুরা আবদার করে পিকনিকে রান্না রাহুলকেই করতে হবে। তাছাড়া কদিন বাদেই সে উড়ে যাবে গোয়ায় তাই শেষবারের মতো তাঁর হাতের সুস্বাদু খাবার খেতে চান বন্ধুরা। সেকারণেই রাহুলকে পিকনিকে যাওয়ার অনুমতি দেন তাঁরা বাবা উত্তম বিশ্বাস।
[বৈশাখ বা অক্ষয় তৃতীয়ায় নয়! আষাঢ়ে হালখাতা এখন আউশগ্রামের উৎসব]
রাহুলের বাবা উত্তম বিশ্বাস জানিয়েছেন, ওদের একজন বাদে কেউ সাঁতার জানে না। রাহুল দশটার সময় ভাত খেয়ে বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। বলে যায় এক বন্ধুর বাড়িতে যাবে। বন্ধুরা পিকনিক করবে। সেখানে ওকে রান্না করতে হবে। উত্তমবাবু বলেন,’ যদি জানতাম ওরা পাটুলিঘাটে যাবে তাহলে যেতে দিতাম না।‘ স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ন’জন পাটুলিঘাটের পাশে গাছের নিচে বসে খাবার খান। খাওয়া শেষে বিকেলে নদীতে নামেন। প্রথমে চারজন উঠে পড়েন। পাঁচজন তখনও নদীতে ছিলেন। এই পাঁচজনের মধ্যে একজন তলিয়ে যান। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আরেকজন তলিয়ে যান। শনিবার সকালে রাহুলের দেহ উদ্ধার হলেও এখনও নিখোঁজ অরিন্দম। ইতিমঘ্যেই শক্তিনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ওই পড়ুয়ার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ঘটনার পর এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
