shono
Advertisement

সদ্যোজাত কন্যাকে জীবন্ত কবর! চিৎকার শুনে খুদের প্রাণ বাঁচালেন প্রতিবেশীরা

অমানবিক ঘটনায় কাঠগড়ায় শিশুটির মা, বাবাই।
Posted: 06:51 PM Dec 31, 2020Updated: 06:51 PM Dec 31, 2020

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: পরপর তিন কন্যা সন্তান। তাই সদ্যোজাত কন্যাকে জীবন্ত কবর দিয়ে খুনের পরিকল্পনা করে মা, বাবা। কিন্তু পরিকল্পনা সফল হওয়ার আগেই দিন দশের খুদে নিজের কান্না দিয়ে যেন অপরাধের কথা জানিয়ে দিল। ঘটনা ঘিরে দিনভর উত্তপ্ত রইল দুর্গাপুরের (Durgapur) নিশানহাট বসতি এলাকা। শেষমেশ শাস্তির ভয়ে নিজেদের অপরাধের কথা পুলিশের কাছে কবুল করে রুইদাস দম্পতি। কৃতকর্মের জন্য ক্ষমাও চেয়ে নেয়।

Advertisement

একবিংশ শতকে দাঁড়িয়েও কন্যা হয়ে জন্ম নেওয়া যেন অপরাধের শামিল। তাই তো দুর্গাপুরের নিশানহাট বসতির সুনীল রুইদাস এবং স্ত্রী সদ্যোজাত কন্যাকে (New born baby) জীবন্ত কবর দেওয়ার চেষ্টা করছিল। স্থানীয় শিশুরা কান্না শুনে উদ্ধার করে ওই সদ্যোজাতকে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিশানহাটের বাসিন্দা সুনীল রুইদাস পেশায় রিকশা চালক, চার সন্তানের বাবা। দিন দশেক আগে ফের রুইদাস দম্পতির এক কন্যা সন্তান হয়। আগেও দুই কন্যা সন্তান থাকায় তারা এই সন্তানকে ‘হত্যা’র ছক কষেন বলে অভিযোগ।

[আরও পড়ুন: সন্তানের অস্ত্রোপচারের সামর্থ্য নেই, আবেদনের ১ ঘণ্টার মধ্যে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতে পেলেন দম্পতি]

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার ভোরে সদ্যোজাতকে একটি ব্যাগে ঢুকিয়ে বসতির একটি ফাঁকা মাঠে ১০ দিনের খুদেকে রুইদাস দম্পতি জীবিত অবস্থায় পুঁতে দেয়। সকালে আশপাশের ছোট ছেলেমেয়েরা মাঠে খেলার সময় ওই শিশুর কান্নার আওয়াজ পেয়ে ছুটে যায় গর্তের সামনে। দেখা যায়, বস্তাবন্দি অবস্থায় কাঁদছে শিশু। সঙ্গে সঙ্গে ওই ছোটরাই ডেকে আনে বড়দের। স্থানীয় যুবক কুন্দন সিং ও শিশুরা ব্যাগবন্দি খুদেকে উদ্ধার করে। সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্যরা মিলে তড়িঘড়ি দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভরতি করান। স্থানীয় বাসিন্দা অতুল বাগদির কথায়, “চার সন্তানের পর ফের কন্যা সন্তান হওয়ায় তাকে মেরে ফেলার উদ্দেশেই পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। অমানবিক এই ঘটনা বাবা মা-ই চক্রান্ত করে করেছে।”

[আরও পড়ুন: একুশে নজরে মতুয়া ভোট, শান্তনু ঠাকুরের দাবি মেনে বনগাঁ নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত বিজেপির]

এদিন সকালে বিষয়টি এভাবে জানাজানি হতে স্থানীয় এক মহিলা রুইদাস দম্পতির কাছে গিয়ে বস্তাবন্দি সদ্যোজাতকে ঘরে নিয়ে আসার অনুরোধও জানান। কিন্তু তাঁরা দু’জনই যাবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এরপর তাঁদের পুলিশের ভয় দেখানো হলে তখন হুঁশ ফেরে। কিন্তু ততক্ষণে সদ্যোজাতকে উদ্ধার পর স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ গিয়ে পড়ে বাবা মায়ের উপর। প্রবল উত্তেজনাকর পরিস্থিতি হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে নিশানহাট বসতিতে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে। পুলিশ ও প্রতিবেশীদের সামনে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেয় রুইদাস দম্পতি। তারপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement