ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: করোনার প্রভাব এবার পড়তে চলেছে সর্বত্র। ব্যবসা বাণিজ্য থেকে কলকারখানা, এমনকী দুর্গাপুজোয় তার প্রভাব ব্যাপকভাবে পড়তে চলেছে। এতদিন জেলার মৃৎশিল্পীদের কাছে প্রতিমার অর্ডার আসতে শুরু করে। কিন্তু এবছর ব্যতিক্রম। এতদিন খবর পাওয়া যাচ্ছিল, বিদেশের অর্ডার বাতিল হয়েছে মৃৎশিল্পীদের। কিন্তু এবার স্থানীয় অর্ডারও বাতিল হতে শুরু করেছে। গত বছর যে সব ক্লাব অর্ডার দিয়েছিল, তারাও অর্ডার বাতিল করতে শুরু করেছে সম্প্রতি। আর এতেই মাথায় হাত শিল্পীদের।
করোনা সতর্কীকরণে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার জমায়েত নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। দেশজুড়ে লকডাউন জারি হয়েছে। লকডাউন উঠে গেলেও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে তা জানিয়ে দিয়েছে সরকার। আর এতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে প্রতিমা শিল্পীরা। গত কয়েক দিনে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিমা অর্ডার দিয়েও বাতিল করে দিয়েছে বেশ কিছু ক্লাব। অর্ডার বাতিল হওয়ায় বেশ সমস্যায় পড়েছে বোলপুর মহকুমা-সহ জেলার মৃৎশিল্পীরা।
[ আরও পড়ুন: উত্তর ২৪ পরগনায় আরও ২ জন করোনা পজিটিভ, কোয়ারেন্টাইনে পরিবারের সদস্যরা ]
লাভপুরের মৃৎশিল্পী অমিত পাল গত ২০১০ থেকে এই পেশাকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে আছেন। প্রথম দিকে প্রতিমার অর্ডার পেতে সমস্যা হলেও বিগত কয়েক বছর ধরেই প্রতিমা তৈরির বরাত বেশ ভালই পাচ্ছিলেন। প্রতিমার কাঠামোয় মাটির প্রলেপ থেকে শুরু করে, তুলির টান সবেতেই তিনি দক্ষ প্রশংসা পেয়েছেন। কিন্তু করোনায় এলোমেলো হয়ে গিয়েছে পরিস্থিতি। পুরনো অর্ডারের পাশাপাশি নতুন অর্ডার বেশ ভালই পাচ্ছিলেন। সেই মতো কাজও শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু লকডাউনে প্রতিমা বানিয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। বেশ কয়েকটি ক্লাব তাঁকে জানিয়ে দিয়েছে কাজ বন্ধ রাখতে।
একই অবস্থা বোলপুরের পাশে প্রান্তিকের মৃৎশিল্পী কাঞ্চন দাসের। তিনি বলেন, ‘ক্লাবগুলি এখন বাজেট নিয়ে সমস্যায় পড়েছে বলে জানিয়ে দিয়েছে। তাই তাদের এবছরের পুজো বাতিল করতে হতে পারে বলেও জানিয়েছে। আমি প্রতিমা তৈরির কাজ বন্ধ রেখেছি।’ এই বিষয়ে বোলপুরের এক ক্লাব সদস্য বলেন, ‘করোনার জন্য মানুষ এখন চরম অর্থনৈতিক সংকটে। তাই পুজো করব কিনা তা নিয়ে আমাদের ভাবতে হচ্ছে। করলেও খুব ছোট করে হবে। বড় প্রতিমা করতে পারব না।’
[ আরও পড়ুন: কাকদ্বীপে করোনা আক্রান্ত ৩, সংস্পর্শে আসায় কোয়ারেন্টাইনে শতাধিক বাসিন্দা ]
The post একের পর এক বাতিল প্রতিমার অর্ডার, মাথায় হাত বোলপুরের মৃৎশিল্পীদের appeared first on Sangbad Pratidin.
