অর্ণব দাস, বারাকপুর: বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের একমাত্র বিজেপি বিধায়ক অর্জুনপুত্র পবন সিং নৈহাটি উপনির্বাচনের প্রচারে অনুপস্থিত। বিষয়টি নজরে পড়তেই বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এবার নামমাত্র উপস্থিতির জন্য বর্তমান সাংসদ পার্থ ভৌমিকের কটাক্ষের মুখে পড়তে হল প্রাক্তন অর্জুন সিংকে। পার্থবাবুর মতে, অর্জুনের ভাবমূর্তির কারণেই এখানে ভোট কমতে পারে। তাই তাঁকে প্রচারে নামাচ্ছে না বিজেপি।
নৈহাটি উপনির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী রূপক মিত্রর হয়ে ইতিমধ্যেই প্রচার সেরেছেন দিলীপ ঘোষ, শান্তনু ঠাকুর, রুপা গঙ্গোপাধ্যায়, শমীক ভট্টাচার্য, তাপস রায়, ফাল্গুনী পাত্র, শীলভদ্র দত্ত, বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ-সহ একাধিক নেতৃত্ব। কিন্তু চব্বিশের লোকসভা ভোটে বিজেপির প্রার্থী প্রাক্তন সাংসদের ভোটপ্রচারে 'থেকেও না থাকা' অর্থাৎ ছায়া উপস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়েছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। বিজেপি সূত্রে খবর, প্রার্থী সঙ্গে মাত্র তিনবার প্রচার করতে দেখা গিয়েছে অর্জুন সিংকে। প্রথমদিন মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়, দ্বিতীয় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রচারের দিন আর তৃতীয় ছট পুজোয় গঙ্গা বক্ষে রূপক মিত্রর সঙ্গে প্রচারে। বিজেপির একটি গোষ্ঠীর মত, অর্জুনের মনোনীত 'মাস্টারমশাই'কে প্রার্থী না করার ক্ষোভেই তাঁর এবং পুত্রের এই নিষ্ক্রিয়তা। এনিয়ে আবার কর্মীদের ক্ষোভ, আর জি কর আবহে একজোট হয়ে না লড়ে অর্জুন সহ তাঁর অনুগামীদের অনুপস্থিতি সমর্থকদের কাছে বিরূপ বার্তা দিচ্ছে। ফলে অনেকেই দাপুটে তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দে-র বিরুদ্ধে লড়তে মনোবল হারাচ্ছেন।
এমনই আবহে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের এই ইস্যু সুকৌশলে উস্কে দিয়েছেন বারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক। তিনি বলেছেন, "নৈহাটির প্রচারে অর্জুন সিংকে দেখতে পাচ্ছি না কেন? তাহলে কি বিজেপিও মনে করতে অর্জুন সিং ক্রিমিনাল, তাকে প্রচারে নামলে ভোট কমে যাবে? সেই কারণেই কি উপনির্বাচনে নৈহাটিতে ওকে প্রচার করতে দেওয়া হচ্ছে না?" অর্জুন সিংয়ের নামমাত্র উপস্থিতির প্রশ্নে সিআইডি তলবের প্রসঙ্গও উঠে আসছে। যদিও এসবের সপাট জবাব দিয়েছেন অর্জুন সিং। রবিবার ফোনে তিনি জানিয়েছেন, ''বিজেপি নিয়ে পার্থ ভৌমিককে এত চিন্তা করতে হবে না। আমাদের পার্টি যাকে যেই কাজ দেয়, সে সেই দায়িত্ব পালন করে। এদিনও নৈহাটিতে আছি, বুথে যারা বসবে তাদের সঙ্গে মিটিং করেছি। আর আমার নামে ১৬৫টি মামলা করা হয়েছে। তাই সিআইডি কী নোটিস দিল, তাতে আমার কিছুই যায় আসে না।''