নন্দন দত্ত, সিউড়ি: দাদাকে পুড়িয়ে খুনের পর শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা দুই তরুণীর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সাঁইথিয়া হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে দুই অভিযুক্তকে। প্রতিবেশীদের আশঙ্কা, বিয়ে না হওয়ায় দাদাকে পুড়িয়ে খুন করেছে দুই বোন। অভিযোগ, দাদার মৃত্যুর পর সেই ঘরেই হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করে দুই তরুণী। তবে চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে তড়িঘড়ি তাদের হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। এই ঘটনায় তিন ভাইবোনের বাবাকে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার গভীর রাতে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের ময়ূরেশ্বরের ব্রাহ্মণ বহড়া গ্রামের ভাজুইতলা এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম বৃন্দাবন মণ্ডল(৩০)। তিনি মুরারই মারুটিয়া গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। জন্মাষ্টমীর ছুটিতে ময়ূরেশ্বরের বাড়িতে আসেন ওই যুবক। সেখানে বাবা প্রভাত মণ্ডল ও দু’বোন বাণেশ্বরী ও পিংকি মণ্ডল থাকে। অভিযোগ, রবিবার রাতে ওই বাড়ি থেকেই প্রভাতবাবুর চিৎকার শুনতে পান প্রতিবেশীরা। তড়িঘড়ি ছুটে গিয়ে দেখেন, আগুন জ্বলছে মণ্ডলবাড়িতে। ঘরের মধ্যে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছেন বৃন্দাবনবাবু। অদূরেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে পিংকি ও বাণেশ্বরী। তড়িঘড়ি তিনজনকে উদ্ধার করে সাঁইথিয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে বৃন্দাবনবাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে মৃতের দুই বোন। এদিকে দাদার অগ্নিদগ্ধ দেহের পাশে দুই বোনের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় রহস্য দানা বেঁধেছে। তাহলে কি দাদার মৃত্যুর নেপথ্যে সহোদরারাই জড়িত? দাদার গায়ে আগুন লাগালো কে? বৃন্দাবনবাবুকে না বাঁচিয়ে নিজেরা কেন আত্মহত্যার চেষ্টা করল? সব দেখেশুনে বাবা প্রভাতবাবু কেন এত দেরি করে প্রভাতবাবুদের সাহায্য চাইলেন? বৃন্দাবনবাবুর গায়ে আগুন যখন লাগল তখন কোথায় ছিলেন বাবা?
[একগুচ্ছ কর্মসূচি রূপায়নে চারদিনের পাহাড় সফরে মুখ্যমন্ত্রী]
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, আগুন দেখেই ময়ূরেশ্বর থানায় খবর দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ আসার আগেই আগুন নিভিয়ে ফেলেন বাসিন্দারা। দেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তে পাঠানোর পাশাপাশি বাড়িটিতে তালা মেরে দেওয়া হয়েছে। তাই আগুনের জেরে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কেউই জানেন না। এদিকে আগুন লাগার কারণ নিয়ে ধন্দে পুলিশ। তবে স্থানীয়দের বক্তব্য শোনার পর প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, অসন্তোষ থেকেই দাদাকে খুনের পরিকল্পনা করে দুই বোন। শিক্ষক দাদা বোনদের বিয়ের তোরজোর করছিলেন না। এই থেকেই অসন্তোষ ছড়ায় তাদের মধ্যে। দাদা বাড়িতে এলে নির্বিঘ্নে খুনের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে তারা উঠেপড়ে লাগে। এদিকে দাদার মৃত্যু হয়েছে বুঝতে পেরে ভয়ে বা অনুশোচনায় নিজেরা আত্মহননের পথ বেছে নেয়। দু’জনের অবস্থা এখনও গুরুতর, তাই জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে বাবা প্রভাত মণ্ডলকে আটক করে ঘটনার তল খোঁজার চেষ্টা করছে পুলিশ। এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
