দেব গোস্বামী, বোলপুর: ভাঙল অচলায়তন। পর্যটকদের জন্য ফের খুলে দেওয়া হল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের দরজা। অতি সম্প্রতি বিশ্বভারতীতে স্থায়ী উপাচার্য পদে নিযুক্ত হয়েছেল প্রবীরকুমার ঘোষ। তারপরই এই নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। করোনা আবহে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্ত ভাবনাচিন্তাকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। পড়াশোনার পাশাপাশি ক্যাম্পাসে ঘোরাফেরাতেও কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিল না। পর্যটকদেরও ক্যাম্পাসে ঢোকার ক্ষেত্রে কোনও বাধা ছিল না। করোনা আবহের পরে সেই দরজা বন্ধ হয়ে যায়। পর্যটকদের ক্যাম্পাসে ঢোকা নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেসময় বিশ্বভারতীর উপাচার্য পদে ছিলেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। করোনা আবহ কাটলেও পর্যটকদের জন্য ক্যাম্পাসের দরজা খোলা হয়নি। নিরাপত্তা-সহ একাধিক ইস্যুতে বাইরের কোনও ব্যক্তি ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারবেন না। সেই নির্দেশই এতদিন ধরে বহাল ছিল। পর্যটকরা কেবল বিশ্বভারতীর মিউজিয়ামে ঢুকতে পারতেন টিকিট কেটে। এই সিদ্ধান্তের কারণে শান্তিনিকেতনের বাসিন্দাদের মধ্যেও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল। আবাসিক ও প্রাক্তনীরাও এই সিদ্ধান্তের বিরোধী ছিলেন বলে খবর। যদিও নিজের সিদ্ধান্ত থেকে একচুলও সরে আসেননি বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
কিন্তু উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করার পরেই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেন প্রবীরকুমার ঘোষ। জানিয়ে দিলেন, ক্যাম্পাসের দরজা ফের খুলে দেওয়া হল পর্যটকদের জন্য। ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। ফলে পর্যটকদের মধ্যে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখার জোরালো দাবিও উঠছিল। পর্যটনের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। পাঁচ বছর পরে ফের খুলে দেওয়া হল বিশ্বভারতীর দরজা। এই বিষয়ে উপাচার্য প্রবীরকুমার ঘোষ জানিয়েছেন, হেরিটেজ ও পর্যটনকে একসঙ্গে যোগ করতে হবে। অতীতে কী হয়েছে, সেই বিষয়ে এখন আর কথা নয়। পর্যটনের পাশাপাশি নিরাপত্তার দিকটিও খতিয়ে দেখা হবে।
দুই ঘণ্টা ধরে বিশ্বভারতীর অধ্যাপকদের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে উপাচার্যের। সেখানেই এই সিদ্ধান্তে সকলে একমত হয়েছেন। পর্যটন ও নিরাপত্তার বিষয়ে রাজ্য সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলা হবে। এই কথা জানিয়েছেন উপাচার্য।