সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ওয়াগনার বিদ্রোহে আমেরিকা বা ন্যাটোর কোনও হাত নেই। সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে সোমবার সাফ জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পালটা তাঁর দাবি, রাশিয়ার অন্দরেই বড়সড় সংঘাত চলছে।
গত শনিবারই ভাড়াটে ওয়াগনার (Wagner) বাহিনীর প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন রুশ সামরিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেন। তিনি হুঙ্কার দেন, ‘আনুষ্ঠানিক ভাবে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে গিয়েছে।’ ভাড়াটে বাহিনীর টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে আরও বলা হয়, ‘আমরা দেশভক্ত। মাতৃভূমির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার মতো মারাত্মক ভুল করা হয়েছে।’ এরপরই ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্কের রেশ। যদিও শেষ পর্যন্ত বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্দার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি আয়ত্তে আসে বলে খবর। প্রিগোজিন জানিয়ে দেন, তিনি মস্কো অভিযান স্থগিত রেখেছেন। বেলারুশে চলে যাচ্ছে তাঁর বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দাবি করেছিলেন, রাশিয়াকে বিপন্ন করতে এটা বৃহত্তর ষড়যন্ত্র। এর নেপথ্যে পশ্চিমের হাত রয়েছে।
গতকাল সেই বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে বাইডেন জানান, ওয়াগনার বিদ্রোহে আমেরিকা বা ন্যাটোর কোনও হাত নেই। জোট সঙ্গীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমরা একমত হয়েছি যে রাশিয়াকে দোষারোপের কোনও সুযোগ দেওয়া চলবে না। কোনওভাবেই যাতে এই ঘটনার (ওয়াগনার বিদ্রোহ) দায় পশ্চিম বা ন্যাটোর উপর চাপাতে না পারেন পুতিন তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এর সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।” মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কারবি সাংবাদিকদের জানান, বিভিন্ন কূটনৈতিক মাধ্যমে মস্কোকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে এই বিদ্রোহে কোনওভাবেই জড়িত নয় ওয়াশিংটন।
[আরও পড়ুন: আগেও জলের গভীরে বিপদে পড়েছিল টাইটান! ‘জানতাম একদিন হবেই’, বলছেন প্রাক্তন যাত্রী]
উল্লেখ্য, ‘সেনা অভ্যুত্থান’ থমকে যাওয়ায় আপাতত স্বস্তিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)। কিন্তু রাশিয়ার (Russia) ভাড়াটে সেনার এই বিদ্রোহের কথা আগেই জানত আমেরিকা! মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি অন্তত তেমনই। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার কাছে খবর ছিল ২৪ ঘণ্টা আগে থেকেই। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের মাঝেই রাশিয়ায় যে চাঞ্চল্য তৈরি হতে চলেছে, তা জানতে পেরে গিয়েছিল হোয়াইট হাউস। শুধু তাই নয়, জুনের মাঝেই নাকি প্রিগোজেনের ওয়াগনার বাহিনীর বিদ্রোহের কথা জানতে পেরে গিয়েছিলেন সিআইএ কর্তারা। আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন। এই বিদ্রোহের পিছনে কি রয়েছে আমেরিকার উসকানি? যদিও মার্কিন গোয়েন্দাদের দাবি, বিদ্রোহের খবর কেবল আমেরিকা জানত, তাই নয়। পুতিন নিজেও জানতেন তাঁর একসময়ের সঙ্গী এই যুদ্ধের সময়ই বিদ্রোহ ঘোষণা করতে চলেছেন।