সঞ্জিত ঘোষ, নবদ্বীপ: বাঙালির যত পার্বণ, তত রীতি। এমনকী বিস্তীর্ণ বাংলার অঞ্চল বদলে পালটে যায় সেসব রীতিনীতি। এই যেমন শ্রীচৈতন্যের ভূমি নবদ্বীপে জামাইষষ্ঠীর নিয়ম ভিন্ন। এখানকার গোস্বামী বংশের জামাই স্বয়ং গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু (Gauranga Mahaprabhu)! জামাইষষ্ঠীতে তাঁকেই জামাই রূপে আদর-যত্ন করেন এখানকার মানুষজন। মেতে ওঠেন আনন্দ-উল্লাসে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হল না। বৃহস্পতিবার জামাইষষ্ঠী (Jamai Sasthi) উপলক্ষে নবদ্বীপের ঢামেশ্বর মহাপ্রভু মন্দিরে এই রীতি মেনেই গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুকে আশীর্বাদ করা হল। আনন্দে মাতলেন নারী-পুরুষ সকলে।
আসলে এই রীতি শ্রীচৈতন্যদেবের (Mahaprabhu Sree Chaitanya) স্ত্রী বিষ্ণুপ্রিয়ার বংশের। গোস্বামী পরিবারে গৌরাঙ্গ জামাতা। সেই ভাবনা থেকে জামাইষষ্ঠীতে আপ্যায়ণ করা হয় জামাই রূপী গৌরাঙ্গকে। গৌরাঙ্গ পত্নী বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর পরিবারের গোস্বামী বংশের সদস্যরা ষষ্ঠীর সকালে জামাই গৌরাঙ্গকে বরণ করার সমস্ত আয়োজন করেন। এদিন গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুকে জামাই বেশে সাজানো হয়। পরানো হয় গরদের ধুতি আর পাঞ্জাবি, গায়ে উত্তরীয়। গলায় বিভিন্ন ফুলের মালা, হাতে ফুলের বালা আর মাথায় হলুদ রঙের পাগড়ি। এই ভাবেই প্রথা (Ritual) মেনে ঘরের জামাই গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুকে সাজিয়ে তোলা হয়।
[আরও পড়ুন: ‘বলি ও ননদি, আর দু’মুঠো চাল ফেলে দে হাঁড়িতে’, গানে গানে শুভেচ্ছা জানালেন ‘জামাই’ মদন]
বৃহস্পতিবার জামাইষষ্ঠীর সকালে বিষ্ণুপ্রিয়ার পরিবারের গোস্বামী বংশের মহিলারা একে একে প্রথা মেনে ধান, দূর্বা, বাঁশ পাতা ইত্যাদি দিয়ে পাখার বাতাস দেন ঘরের জামাই গৌরাঙ্গকে। ঢামেশ্বর মহাপ্রভু মন্দিরের সহ সভাপতি তথা ট্রাস্টি সদস্য সুধীন গোস্বামী বলছেন, ”বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর বংশধর আমরা। যাদব আচার্য ও মাধব আচার্য, দুই পরিবার অর্থাৎ গোস্বামী পরিবারে যেহেতু গৌরাঙ্গই জামাই, তাই আমরা এই দিনে তাঁকে ঘিরেই জামাইষষ্ঠীর প্রথা পালন করি। তাঁকে সাজানো হয় জামাই রূপে।”