সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দশ বছর ধরে বৃদ্ধা মাকে বাড়ির ভিতরে ‘বন্দি’ করে রেখেছিল দুই ‘গুণধর’ ছেলে। দেখভাল দূর অস্ত, সপ্তাহে একদিন খাবার আর বিস্কুট পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল তারা। আর বৃদ্ধাকে মাঝে মাঝে জানালা দিয়ে খাবার জল দিতেন প্রতিবেশীরা। সম্প্রতি জ্ঞানজ্যোতি নামের ৭২ বছরের ওই বৃদ্ধাকে তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) কাবেরীনগরের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন সমাজকল্যাণ দপ্তরের কর্মীরা।
বয়স্ক মাকে দেখভাল না করা এবং ঘরে বন্দি করে রাখার অভিযোগে তাঁর দুই ছেলের বিরুদ্ধে বর্ষীয়ান নাগরিক আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃদ্ধার বড় ছেলে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার আর ছোট ছেলে দূরদর্শনের কর্মী। জেলার এক শীর্ষকর্তা আগেই তাঁর পুত্রদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের দাবি তুলেছিলেন।
[আরও পড়ুন: মহেশতলায় বাড়িতে অগ্নিকাণ্ড, পুড়ে মৃত্যু একই পরিবারের ৩ সদস্যের]
কী করে প্রকাশ্যে এল বিষয়টি? সম্প্রতি অশক্ত ওই বৃদ্ধার নগ্ন হয়ে মাটিতে শুয়ে থাকার একটি ভিডিও দেখে এক ব্যক্তি ১৮১ নম্বরে ফোন করে সমাজকল্যাণ দপ্তরে জানান। এরপরই ওই দপ্তর থেকে তড়িঘড়ি দুই মহিলা কর্মী পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন। পুলিশ দরজা ভাঙতে তাঁরা বৃদ্ধাকে উদ্ধার করেন।
বিমলা নামে এক উদ্ধারকারী কর্মী জানাচ্ছেন, “বৃদ্ধা উঠে দাঁড়াতে পারছিলেন না। দীর্ঘদিন একাকী থাকতে থাকতে মানসিক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আমরা তাঁর কাছে যেতেই হিংস্র আচরণ শুরু করেন। তাই তাঁকে মনোবিদের কাছে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা শুরু করা হয়েছে।” জানা গিয়েছে, জ্ঞানজ্যোতির স্বামীও দূরদর্শনে কাজ করতেন। ২০০৯ সালে তাঁর মৃত্যুর পর মেয়ের কাছে থাকতেন। কিন্তু তার দু’বছর পরেই মৃত্যু হয় মেয়ের। এরপর মায়ের দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন ছেলেরা। তারপরই শুরু হয় নির্যাতন। বছরের পর বছর ধরে বাড়িতেই আটকে রাখা হয় তাঁকে। ঠিকমতো খাবারদাবারও দেওয়া হত না। অবশেষে পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতে বিস্মিত এলাকার বাসিন্দারা।