সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোটা দেশ বর্তমানে 'ধুরন্ধর' জ্বরে কাবু। পঁচিশের বক্স অফিস নম্বরের নীরিখেও দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে আদিত্য ধর পরিচালিত সিনেমা। মাত্র এক সপ্তাহেই জাতীয় স্তরে ২০০ কোটির ব্যবসা করে ফেলেছে, আর আন্তর্জাতিক আঙিনায় ৩০০ কোটি ছুঁইছুই 'ধুরন্ধর'-এর। দক্ষিণী সিনেমার রমরমার বাজারে বলিউডের জন্য যে এটা নিঃসন্দেহে নতুন মাইলস্টোন, তা বলাই বাহুল্য। সেই প্রেক্ষিতেই হিন্দি সিনেদুনিয়ার তারকারা প্রশংসায় ভরিয়ে দিচ্ছেন এই ছবিকে। এমন আবহে মধ্যপ্রাচ্যে মুক্তির আলো দেখতে পারল না 'ধুরন্ধর'।
আইনি জটিলতা, বিতর্ক সঙ্গী করে গত ৫ ডিসেম্বর, দেশজুড়ে পাঁচ হাজার স্ক্রিনে মুক্তি পেয়েছে রণবীর সিং, অক্ষয় খান্না অভিনীত সিনেমা। ছবিতে পাকিস্তানের প্রাচীন শহর লিয়ারির গ্যাংস্টারদের বাড়বাড়ন্ত এবং এক ভারতীয় গুপ্তচরের সেই গোষ্ঠীগুলিকে নিকেশ করার কাহিনি তুলে ধরেছেন পরিচালক আদিত্য ধর। 'হামজা আলি'র (রণবীর সিং) সেই মিশন বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রশংসা কুড়োচ্ছে। কিন্তু পাকিস্তান বিরোধী প্রেক্ষাপট থাকায় মধ্যপ্রাচ্যের কোনও দেশ এই সিনেমা রিলিজ করতে নারাজ। আর সেই প্রেক্ষিতেই একাধিক দেশে মুক্তির ছাড়পত্র পেল না 'ধুরন্ধুর'। বলিউড মাধ্যম সূত্রে খবর, বাহারিন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর মতো দেশগুলি পাকিস্তান বিরোধী বার্তা দেওয়ার জন্য 'ধুরন্ধর'কে নিষিদ্ধ করেছে। অতীত কাহিনি মাথায় রেখে আশঙ্কা আগেই করা হয়েছিল, এবার সেটাই ফলে গেল। সিনেমা মুক্তির প্রাক্কালে ট্রেলারে 'লিয়ারি'র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের দৃশ্য দেখে আপত্তি তুলেছিল পাকিস্তানের একাংশ। আবার বালোচদের সঙ্গে কুমিরের তুলনা টানায় 'ভারতবন্ধু' বালোচিস্তান থেকেও ধেয়ে এসেছিল কটাক্ষ।
উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে নেটভুবন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অক্ষয় খান্নার বালোচিস্তানের এন্ট্রি সিকোয়েন্সে ব্যবহৃত FA9LA ব়্যাপ। যে গানটি আরবি ভাষার সঙ্গে ধুন্ধুমার ব়্যাপ জুড়ে তৈরি করেছেন বাহারিনের ব়্যাপার হুসাম অসীম। যে ব়্যাপে বর্তমানে বুঁদ আট-আশির প্রজন্ম। ছবির একাধিক দৃশ্যেও মধ্যপ্রাচ্যের সুদৃশ্য লোকেশন দেখানো হয়েছে। আর সেই সিনেমা থেকেই কিনা মধ্যপ্রাচ্যের দর্শকমহল বঞ্চিত! যদিও তাতে তাঁদের আটকে রাখা যায়নি। কারণ পাকিস্তান এবং বালোচিস্তানে 'ধুরন্ধুর'-এর গান নিয়ে তুমুল চর্চা বর্তমানে।
এই অবশ্য প্রথম নয়। অতীতে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এহেন গেরোয় পড়তে হয়েছে 'স্কাই ফোর্স', 'দ্য ডিপ্লোম্যাট', 'আর্টিকেল ৩৭০', 'টাইগার ৩', এবং 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস'-এর মতো ছবিগুলিকেও। এমনকী হৃতিক রোশন এবং দীপিকা পাড়ুকোন অভিনীত 'ফাইটার'কেও এহেন বিধিনিষেধের মুখোমুখি হতে হয় সেখানে। পরবর্তীতে কিছু সংলাপ, দৃশ্য ছেঁটে নতুন সংস্করণ মুক্তি পায় মধ্যপ্রাচ্যে। এবার আদিত্য ধরের 'ধুরন্ধুর'ও সেই পথ অনুসরণ করবে কিনা, নজর থাকবে সেদিকে।
