সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিন কয়েক আগেই রাধাকৃষ্ণকে সাক্ষী রেখে বৃন্দাবনে কণ্ঠীবদল করে বিয়ের জন্য চর্চার শিরোনামে ঠাঁই পেয়েছিলেন 'মেম বউ'। তবে আচমকাই রটে যায়, এটা নাকি অভিনেত্রীর তৃতীয় বিয়ে। যার জেরে লাগাতার কটাক্ষের শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। এবার বিপাকে পড়ে বিনীতা চট্টোপাধ্যায় জানালেন, "আলাদা ব্যক্তির সঙ্গে নয়, একই পাত্রের সঙ্গে দু'বার গাঁটছড়া বেঁধেছি।"
ধোঁয়াশা সরিয়ে বিয়ে নিয়ে এবার 'সংবাদ প্রতিদিন'-এর কাছে আক্ষেপ করে মুখ খুললেন বিনীতা। প্রথমবার কেদারনাথ ট্রিপে গিয়ে গৌরীকুণ্ডের নীচে সোনপ্রয়াগের এক মন্দিরে বিয়ে করেছিলেন অভিনেত্রী। পাত্র বদ্রীনাথ বিশাল। বিনিতা আবার পেশায় সাংবাদিকও। সেই সংস্থারই মুখ্য আধিকারিক বিশাল। কীভাবে প্রেমটা হল? সেপ্রসঙ্গে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, একই সংস্থায় কাজ করার সুবাদে আলাপ। বিশাল বরাবরই তাঁকে পছন্দ করতেন। কিন্তু প্রথমটায় সাড়া দেননি বিনীতা। বছর খানেক বিশালকে ভালো করে পরখ করার পর তাঁরা সহকর্মীদের নিয়ে একসঙ্গে কেদারনাথে অফিস ট্রিপে যান। সেখানেই ঘটে যায় এক আশ্চর্যজনক ঘটনা! পর্দার ‘মেম বউ’ বলছেন, কেদারনাথ থেকে ফেরার পথে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়েন তাঁরা। একদল সেখান থেকে বেরিয়ে গেলেও আটকে পড়েন বিশাল-বিনীতা। কোনওমতে সোনপ্রয়াগে পৌঁছনর পর গাইডকে নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন এক স্থানীয় মন্দিরে। যে মন্দিরে সারা আলি খান ও সুশান্ত সিং রাজপুত কেদারনাথ ছবির শুটিং করেছিলেন। বৃষ্টি থামায় বিনীতা সেখানে ভ্লগ করা শুরু করেন। ঠিক সেইসময়েই মন্দিরের পুরোহিত তাঁদের জানান, এই মন্দিরেই নাকি সাক্ষাৎ বিষ্ণু হরগৌরীর বিয়ে দিয়েছিলেন। যে যজ্ঞের আগুন সেই পুরাকাল থেকেই মন্দিরে জ্বলছে। তাই ঈশ্বরের নির্দেশেই এই পবিত্র মন্দিরে জুটিতে এসে পড়েছেন বিশাল-বিনীতা। একথার পরই পুরোহিত জানতে চান, তাঁরা বিয়ে করবেন কিনা? তৎক্ষণাৎ রাজি হয়ে যান দুজনে। প্রথমে সেখানেই ধর্মীয় বিয়ে সারেন তাঁরা।
তার পর দ্বিতীয়বার বিশালকেই বৃন্দাবনের লোটাস টেম্পলে বিয়ে করেন। দেবকীনন্দন ঠাকুরের বিখ্যাত রাধাকৃষ্ণের মন্দিরে হয়েছে মালাবদল। এ বারেও পুরোহিতের নির্দেশেই এখানে তাঁদের কণ্ঠীবদল হয়। তার প্রাক্কালে যমুনাবক্ষে নৌকাবিহারে নিয়ম মেনে গায়ে হলুদ হয়। দুই বাড়ির কুল পুরোহিত বলেছিলেন, ২৩ মে কৃষ্ণ-একাদশীর দিন যদি বিনীতা-বিশাল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, তাহলে কোনওদিন এই বিয়ে ভাঙবে না। সেই কথা অনুযায়ী ২১ মে দুই বাড়ির মধ্যে পাকা কথা হয়। একদিনের মধ্যে সব আয়োজন হয়। এরপরই বৈদিক মতে গোধূলি লগ্নে বিয়ে করেন তাঁরা। আর তৃতীয় বিয়ে? যেটা নিয়ে গেল গেল রব উঠেছে সোশাল পাড়ায়, সেটা? সেপ্রসঙ্গে 'মেম বউ' বলছেন, "চলতি বছরের নভেম্বর মাসে বিড়লা মন্দিরে সামাজিক বিয়ের আয়োজন করা হবে। স্বয়ং নারায়ণের ইচ্ছেতেই আমরা এক হয়েছি।"
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সাল। বাঙালি পরিবারে বিদেশি বউমার আগমন টেলিদর্শকদের অন্দরমহলে শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। আধভাঙা বাংলা উচ্চারণ, মাথায় সোনালি পরচুলা দেখে বোঝার উপায় নেই যে তিনি আদতে বঙ্গকন্যা। শুধু বাংলা নয়, প্রবাসী বাঙালিরাও আপন করে নিয়েছিলেন স্টার জলসার ‘মেম বউ’কে। তবে ক্যারল ব্রাউনের চরিত্রে অভিনয় করার পর থেকে বিনিতা চট্টোপাধ্যায়কে আর সেভাবে পর্দায় দেখা যায়নি! মাঝে চলে গিয়েছে নয়টি বছর। এবার বৃন্দাবনে বিবাহ অভিযানের জেরে নতুন করে লাইমলাইটে অভিনেত্রী। জানা গেল, ব্যক্তিগত জীবনের পাশাপাশি কেরিয়ারেও নতুন ইনিংস শুরু করতে চলেছেন বিনীতা। সেটাও আবার নেটফ্লিক্সের হাত ধরে। তবে তার জন্য শারীরিক গড়নে বদল আনতে হবে। আর সন্তান নিয়ে পরিকল্পনা? বিনীতা বলছেন, ঈশ্বরের আশীর্বাদে একাধিক সন্তান হলেও আমার আপত্তি নেই। তবে পর্দায় কামব্যাক করে তবেই সন্তানের পরিকল্পনা করতে চাইছেন বিনীতা চট্টোপাধ্যায়।
