সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অভিষেকে জব্দ বাংলা। রবিবার হায়দরাবাদে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে সুপার সাইক্লোনিক ইনিংস খেললেন বিশ্বের এক নম্বর টি-টোয়েন্টি ব্যাটার অভিষেক শর্মা। ৩২ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে তিনি ভেঙেছেন একাধিক রেকর্ড। পাঞ্জাব অধিনায়কের ঝোড়ো ইনিংসের সৌজন্যে বঙ্গ ব্রিগেডের সামনে ৩১১ রানের বিশাল লক্ষ্য রাখে পাঞ্জাব। জবাবে বাংলার ইনিংস থামে ১৯৮ রানে।
রবিবার হায়দরাবাদ জিমখানা গ্রাউন্ডে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় পাঞ্জাব। প্রভসিমরন সিংয়ের সঙ্গে ওপেন নেমে তাণ্ডব শুরু করেন অভিষেক। বাংলা দলে ছিলেন মহম্মদ শামি, আকাশ দীপের মতো বোলার। তাঁদের একেবারেই রেয়াত করেননি অভিষেক। বিধ্বংসী ব্যাটিং করে ১২ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন। প্রভসিমরনও কম যাননি। ২৪ বলে অর্ধশতরান হাঁকান তিনি। প্রথম ছ'ওভারে পাঞ্জাব পৌঁছে যায় ৯৩ রানে।
কিছুতেই বাগে আনা যায়নি দুই ব্যাটারকে। এরই মধ্যে ৩২ বলে সেঞ্চুরি করেন অভিষেক। বাংলার বোলারদের বাঁহাতি ব্যাটারের সামনে অসহায় লাগছিল। একটা সময় মনে হচ্ছিল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ডবল সেঞ্চুরির লক্ষ্য নিয়ে খেলছেন। শেষ পর্যন্ত ৫২ বলে ১৪৮ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে আকাশ দীপের বলে ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরলেন। তাঁর ইনিংস সাজানো ৮টি চার ১৬টি ছক্কা দিয়ে। তিনি যখন আউট হলেন, পাঞ্জাবের রান তখন ১২.৩ ওভারে ২০৫। এমন ঝোড়ো ইনিংসের পর একাধিক নজির গড়েন 'শর্মাজি কা বেটা'। শেষ পর্যন্ত পাঞ্জাব তুলল ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩১০ রান। প্রভসিমরন করলেন ৩৫ বলে ৭০ রান। বাংলার সব বোলারই বেধড়ক মার খেলেন। শামি ১ উইকেট পেলেও ৪ ওভারে দিলেন ৬১ রান। আকাশ দীপ ৫৫ রানে ২ উইকেট পেলেন।
তাঁর 'গুরু' যুবরাজ সিংও ১২ বলে হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন। রবিবার অভিষেক শর্মাও ১২ বলে এই হাফসেঞ্চুরি করলেন। যা ভারতীয়দের মধ্যে এটাই দ্বিতীয় দ্রুততম অর্ধশতরানের নজির। তালিকায় প্রথমে রয়েছেন অরুণাচল প্রদেশের আশুতোষ শর্মা। তিনি রেলওয়ের বিপক্ষে ১১ বলে পঞ্চাশ করেছিলেন। মাত্র ৩২ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেও রেকর্ড গড়লেন অভিষেক। যা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারতীয়দের মধ্যে দ্রুততম সেঞ্চুরির তালিকায় তৃতীয়। তাছাড়াও প্রভসিমরনের সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে ২০৫ রান যোগ করেন অভিষেক। যা সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফির ইতিহাসে প্রথম উইকেটে সর্বোচ্চ রান। এছাড়াও এই টুর্নামেন্টের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোরও করেন অভিষেক। তাছাড়াও দ্বিতীয়বারের মতো কোনও দল ৩০০-র বেশি রানের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। মুস্তাক আলি ট্রফির ইতিহাসে ২০২৩ সালে সিকিমের বিপক্ষে ৩৪৯ রান করেছিল বরোদা।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকে বাংলা। ১.৪ ওভারের মধ্যে সাজঘরে ফেরেন অভিষেক পোড়েল (৬), করণ লাল (১), শাহবাজ আহমেদরা (০)। একটা সময় ৮৯ রানে ৭ উইকেট পড়ে গিয়েছিল বাংলার। একা কুম্ভ হয়ে ৬৬ বলে ১৩০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেও হার এড়াতে পারলেন না বাংলার অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণ। ৮ ব্যাটার ফিরলেন এক অঙ্কের স্কোরে। পাহাড়প্রমাণ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলার ইনিংস থামল ১৯৮ রানে। ১১২ রানে হেরে গেল অভিমন্যুর দল। তিন ম্যাচে প্রথমবার হারের মুখ দেখল বাংলা।
