আলাপন সাহা: চব্বিশ ঘণ্টা পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে (Champions Trophy 2025) অভিযান শুরু করতে চলেছে রোহিত শর্মার ভারত। সামনে বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক সময় ভারত বনাম পাকিস্তানের পর যে ম্যাচ সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা ছড়ায়, সেটা ভারত বনাম বাংলাদেশ। গত এক দশক ধরেই যা চলে আসছে। এবং ভারতের বিরুদ্ধে নামার আগে হুস্কার এল বাংলাদেশ থেকে। দিলেন পদ্মাপারের প্রাক্তন অধিনায়ক হাবিবুল বাশার। 'সংবাদ প্রতিদিন'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যা বললেন তিনি..।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শুরুটা করছে ভারতের বিরুদ্ধে। কী মনে হয়, লড়াইটা কঠিন হয়ে গেল টিমের কাছে?
বাশার: ভারত সবসময়ই প্রচণ্ড কঠিন প্রতিপক্ষ। ইদানিং খুব ভালো ফর্মেও রয়েছে ওরা। অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ হেরে আসার পর ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় টিম। রোহিত শর্মা ফর্মে ফিরেছে। বিরাট কোহলি রান করেছে। অবশ্য শুধু রোহিত-বিরাট নয়, পুরো দলটাই ওদের অসম্ভব ব্যালান্সড। ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ সবসময়ই কঠিন। কিন্তু একটা ব্যাপার মনে রাখবেন।
প্রশ্ন: কী?
বাশার: বাংলাদেশ দল যে কোনও সময় চমকে দিতে পারে। এই টিমটার মধ্যে সারপ্রাইজ এলিমেন্ট রয়েছে। তাই কোন দিন কী করবে, সেটা কেউ জানে না। নিজেদের ভালো দিনে বাংলাদেশ বিশ্বের সেরা টিমকে হারাতে পারে।
প্রশ্ন: তাহলে বাংলাদেশ ভারতকে হারিয়ে দিতে পারে বলছেন?
বাশার: কেন নয়? আমরা হারাতেই পারি। তবে ভারতকে হারাতে গেলে বাংলাদেশকে শুধু ভালো খেললে চলবে না, অসম্ভব ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ কতটা কী পারফর্ম করবে, সেটা প্রথম ম্যাচের উপর অনেকটা নির্ভর করবে। যদি আমরা ভারতকে হারাতে পারি, তাহলে বাকি টুর্নামেন্টে যে আরও চমক দেব, এখনই বলে দিতে পারি।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ টিমটা সেভাবে প্রস্তুতির সুযোগই পায়নি। বিপিএলের জন্য দিন কয়েক প্র্যাকটিস করতে পেরেছেন শান্তরা। সেটা পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলতে পারে?
বাশার: দেখুন, এখন ক্রিকেট অনেক বদলে গিয়েছে। সাদা বলের ক্রিকেটে মোটামুটি সবাই মানিয়ে নেয়। তাছাড়া ওরা জানে কোন পরিস্থিতিতে কী করতে হবে? আশা করি ওদের মানিয়ে নিতে কোনও অসুবিধে হবে না। তবে কয়েকটা ম্যাচ পেলে ভালো হত।
প্রশ্ন: আপনার মতে এই বাংলাদেশ দলটার এক্স ফ্যাক্টর কী?
বাশার: টপ অর্ডার ব্যাটিং। আমাদের টপ অর্ডারে প্রচুর প্রতিভা রয়েছে। যে কোনও টিমকে চমকে দিতে পারে। বাংলাদেশ টুর্নামেন্টে কেমন রেজাল্ট করবে, সেটা নির্ভর করছে টপ অর্ডার ব্যাটিংয়ের উপর। টপ অর্ডার যদি ভালো পারফর্ম করতে পারে, তাহলে টিম ভালো খেলবে। না হলে নয়।
প্রশ্ন: জশপ্রীত বুমরাহ নেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। বাংলাদশ টিমের কাছে কতটা সুবিধে এটা?
বাশার: বুমরাহ এখন বিশ্বের সেরা পেসার। ওর মতো বোলার না থাকা যে কোনও টিমের কাছেই সুবিধের। তবে আগেই বললাম ভারতীয় দলটা অসম্ভব শক্তিশালী। বুমরাহ না থাকলেও মহম্মদ শামি রয়েছে। তাছাড়া দুবাইয়ে সাধারণত স্লো উইকেট হয়। স্পিনাররা বেশি সুবিধে পাবে হয়তো। ভারতীয় স্পিন অ্যাটাক যথেষ্ট শক্তিশালী। রবীন্দ্র জাদেজা রয়েছে। অক্ষর প্যাটেল রয়েছে। কুলদীপ-বরুণ রয়েছে।
প্রশ্ন: শেষ প্রশ্ন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির টিমে শাকিব-আল-হাসান আর লিটন দাসের মতো তারকা ক্রিকেটারের না থাকা বাংলাদেশের কাছে কতটা ক্ষতি?
বাশার: অবশ্যই টিমের কাছে এটা ধাক্কা। শাকিবের মতো অলরাউন্ডার এখন বিশ্ব ক্রিকেটে খুব কম রয়েছে। শাকিবের থাকা মানে দশ ওভার বোলিং করবে। আর ব্যাটিংয়ের ভরসা দেবে। এখন শাকিব না থাকায় সেই ব্যালান্স থাকবে না। আর আমি মনে করি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে লিটনের থাকা খুব দরকার ছিল। ওর আইসিসি টুর্নামেন্টে রেকর্ড অসম্ভব ভালো।
