দক্ষিণ আফ্রিকা: ২৭০-১০ (ডি'কক ১০৬, বাভুমা ৪৮, প্রসিদ্ধ ৪-৬৬, কুলদীপ ৪-৪১)
ভারত: ২৭১-১ (যশস্বী ১১৬, রোহিত ৭৫, বিরাট ৬৫)
ভারত ৯ উইকেটে জয়ী।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ যেন পুরনো টিম ইন্ডিয়া। যে দলটা যে কোনও প্রতিপক্ষকে স্রেফ দুরমুশ করে দিত। আক্রমণাত্মক ক্রিকেটে স্রেফ উড়িয়ে দিত বিপক্ষকে। যে ভারত বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছিল, যে ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিল। ভাইজ্যাগে যেন সেই অদম্য ভারতীয় দলকে দেখা গেল। শেষ ম্যাচে প্রোটিয়াদের ৯ উইকেটে একপ্রকার উড়িয়ে দিয়ে সিরিজ পকেটে পুরল ভারত। কে বলবে কদিন আগেই এই দলটা টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে হেরে মুষড়ে পড়েছিল। তারপর ওয়ানডে দলে বড় বদল শুধু দুই মহারথীর আগমন। যাতে রাতারাতি বদলে গিয়েছে টিমের পরিবেশ।
শনিবার ২০ ম্যাচ পর শনিবার ভাইজ্যাগে টস জেতেন ভারত অধিনায়ক রাহুল। প্রত্যাশিতভাবেই তিনি প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিলেন। প্রথমে বল করতে গিয়ে শুরুটা ভালোই হয় টিম ইন্ডিয়ার। প্রথম ওভারেই অর্শদীপের বলে ফেরেন ওপেনার রিকেলটন। তারপরই অবশ্য পালটা মার শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। অধিনায়ক বাভুমা এবং ডি’কক ১১২ রানের জুটি বাঁধলেন। বাভুমা আউট হওয়ার পরও ব্রিৎজকের সঙ্গে জুটি বাঁধেন ডি’কক। সেই জুটিও তোলে ৬৪ রান। ততক্ষণে ৬ রানের কাছাকাছি গড়। সেঞ্চুরি করে ফেলেছেন ডি’কক। দেখে মনে হচ্ছিল অন্তত সাড়ে তিনশো পেরোবে দক্ষিণ আফ্রিকা। তারপরই প্রত্যাঘাত প্রসিদ্ধর। এক ওভারে তিনি ফিরিয়ে দিলেন ডি’কক এবং মার্করামকে। দুজনেই প্রোটিয়া ব্যাটিংয়ের স্তম্ভ। ফলে কোমর ভেঙে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার। এরপর শুরু হয় কুলদীপের ম্যাজিক। একে একে তিনি আউট করে দেন ব্রেভিস, জ্যানসেন, বশ এবং এনগিডিকে। এর মধ্যে এক ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই বিধ্বংসী ব্যাটার ব্রেভিস ও জ্যানসেনকে ফেরান তিনি। শেষ পর্যন্ত প্রোটিয়ারা অলআউট হয়ে যায় ২৭০ রানে। প্রসিদ্ধ এবং কুলদীপ দুজনেই চারটি করে উইকেট পান।
জবাবে ভারতীয় ওপেনিং জুটি শুরুটা ধীরেসুস্থে করে। কিন্তু ওভার আটেক পর থেকেই শুরু হয় মহাপ্রহার। একদিকে রোহিত শর্মা, অন্যদিকে যশস্বী জয়সওয়াল দুজনেই প্রোটিয়া বোলারদের নির্মমভাবে পেটানো শুরু করেন। চতুর্থ ভারতীয় হিসাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২০ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন রোহিত শর্মা। তিনি আউট হন ৭৩ বলে ৭৫ রান করে। রোহিত সেঞ্চুরি মাঠে ফেলে এলেও ভুল করেননি যশস্বী। ভাইজ্যাগে তিনি কেরিয়ারের প্রথম ওয়ানডে শতরানটি হাঁকিয়ে ফেলেন। পিছিয়ে ছিলেন না ৩ নম্বরে নামা কোহলিও। তিনি মাত্র ৪৫ বলে অপরাজিত ৬৫ রানের ইনিংস খেলেন। বিরাট ভক্তদের আক্ষেপ, হাতে আর ক'টা রান থাকলে হয়তো বিরাটের ব্যাটে আরও একটা সেঞ্চুরি দেখা যেত। শেষ পর্যন্ত মাত্র এক উইকেট খুইয়ে ৬১ বল বাকি থাকতেই জিতে নেয় টিম ইন্ডিয়া।
জয়ের ফলে ৩ ম্যাচের সিরিজ ভারত জিতল ২-১ ম্যাচের ব্যবধানে। টেস্ট সিরিজের হতাশা ভুলে এই সিরিজ জয় ভারতকে কিছুটা হলেও চাঙ্গা করবে। এই সিরিজ জয়ের ফলে ঘরের মাঠে সাদা বলের ক্রিকেটে এখনও অপরাজিত রয়ে গেলেন কোচ গৌতম গম্ভীর। যে ভাবে দলের ৪-৫ জন প্রথম সারির ক্রিকেটার ছাড়া ভারত সিরিজ জিতল, সেটা প্রশংসনীয়।
