সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যাওয়া এবং ভোরে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠা – সুস্থসবল স্বাস্থ্যের এই গোড়ার কথা কে না জানে? কিন্তু মেনে চলেন ক’জন? বিশেষত আজকের দ্রুতগতির জীবনে রাত ১০টায় ঘুমোতে গিয়ে ভোর ৫টায় ওঠার রুটিনে বাঁধা জীবন বোধহয় সম্ভব নয় বেশিরভাগ চাকরিরতদের পক্ষেই। শুধু কী তাই? কাজের চাপে হয়ত ৮ ঘণ্টার নিশ্চিন্ত ঘুমও হয়ে ওঠে না কখনও কখনও। কিন্তু জানেন কি, ঘুমের সময় আপনি যত কমাবেন, ততই আপনার শরীরে প্রবেশের পথ সুগম হবে নোভেল করোনা ভাইরাসের (Coronavirus)? কোভিড পরিস্থিতিতে এমনই সতর্কবার্তা দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
রাতে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টার নির্বিঘ্ন ঘুম এমনিতেই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম। এই সময়ে তেমন প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হলে তা অনায়াসে কোভিড যুদ্ধের শরীরকে অনেকটা এগিয়ে রাখবে। ভারতের কয়েকটি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্তারা এ নিয়ে পড়াশোনা, পর্যবেক্ষণের পর এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে পর্যাপ্ত ঘুম যেভাবে শরীরকে নতুন করে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত করে তোলে, তা অন্য কোনও কিছুতেই হয় না। শরীরের প্রতিটি কোষ, কলা, পেশি পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায়। ফলে ধীরে ধীরে ক্লান্তি উপশম হয়। আর এটাই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে নতুন করে শক্তি জোগায়। আরও গভীরে গিয়ে তাঁদের পর্যবেক্ষণ, দেহের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিকভাবে জীবাণু ধ্বংসকারী সাইটোটক্সিক (cytotoxic), ক্ষত নিরাময়ের জন্য প্রয়োজনীয় সাইটোকিন (cytokines) সবই উদ্দীপিত হয় ঘুমের সঙ্গে সঙ্গে। তাই তাঁদের পরামর্শ, ঘুমের সময়ের সঙ্গে কোনও সমঝোতা নয়।
[আরও পড়ুন: কাজের চাপে বন্দি কলকাতা, নগরবাসীর মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি, সতর্কবার্তা সমীক্ষায়]
সময়ের সঙ্গে দৌড়তে গিয়ে যাঁরা দিনে ৫ ঘণ্টারও কম সময় পাচ্ছেন ঘুমের জন্য, তাঁদের কিন্তু সমুহ বিপদ। এভাবে চলতে থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমশ দুর্বল হতে থাকবে এবং তার ফাঁক গলে থাবা বসাবেই করোনা ভাইরাস। চিকিৎসকরা বলছেন, যতই মাস্ক পরুন আর বারবার হাত ধোয়ার অভ্যেস তৈরি করুন, ঘুম ঠিকমতো না হলে কিন্তু কিছুতেই করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। অসুস্থ কারও সংস্পর্শে এলে, এঁরাই দ্রুতহারে সংক্রমিত হয়ে পড়েন এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হওয়ায় রোগ সারতেও সময় লেগে যায়। ফলে ঘড়ি ধরে ঘুমের জন্য ৮ঘণ্টা সময় অবশ্য রাখুন। খুব সহজেই করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে এগিয়ে থাকবেন অনেকটা।