shono
Advertisement

ভোটে কন্ডোম

ভোটপ্রচারে কন্ডোম বিতরণ করা ঘিরে অন্ধ্র-রাজনীতি উত্তাল।
Posted: 01:20 PM Feb 29, 2024Updated: 01:20 PM Feb 29, 2024

অ্যাডল্‌ফ হিটলার সেক্স ডলের অর্ডার দিয়েছিলেন। তবে ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য নয়, নাৎসি বাহিনীর সেনাদের জন্য, যাতে তারা যৌন রোগে আক্রান্ত হয়ে না পড়ে। সেসব সেক্স ডল, ভাবা হয়েছিল, সিলিকন দিয়ে তৈরি হবে, আর সেগুলি হবে প্রমাণ মানুষী মাপের চেয়ে ছোট। নামও রাখা হয় তার– ‘গাইনয়েডস’। কথিত, হাঙ্গেরীয় অভিনেত্রী ক্যাথে ভন ন্যাগি-কে উপর্যুপরি অনুরোধ করা হয়েছিল– তিনি যেন এই সেক্স ডলের ‘মডেল’ হতে রাজি হন, তবে ন্যাগি সেই উপরোধ রাখেননি।

Advertisement

ভাবা হয়েছিল– সেক্স ডলের চুল হবে সোনালি, চোখের মণি হবে নীলাভ, ত্বক হবে মসৃণ। যাতে সেনাদের যৌন কল্পনা বা ‘সেক্সুয়াল ফ্যান্টাসি’ আড়ে-বহরে প্রবৃদ্ধি পায়, পরিপুষ্টি অর্জন করে। কিন্তু এত তামঝাম কেন? ‘মুসোলিনিস বারবার’ বইয়ে গ্রিম ডোনাল্ড জানিয়েছেন, এই সেক্স ডল প্রোজেক্ট নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয় ১৯৪০ সালে। সেই সময় নাৎসি বাহিনী উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের দখল নিচ্ছে, যে-ভৌগোলিক পরিসরের অংশ ছিল ফ্রান্সও। আর, ফ্রান্সে সেই সময় অ্যাডলফ হিটলারের এসএস চিফ হাইন্‌রিখ হিমলার জানিয়েছিলেন, গণিকার ‘অনিয়ন্ত্রিত সমাবেশ’। বারে, নাচগানের আসরে, এমনকী খোলা রাস্তায় তারা নাকি কবজা করত ক্লায়েন্টদের। ফলে, নাৎসি বাহিনীর উপরমহলের মনে হয়েছিল, সেনাদের স্বাস্থ্যসুরক্ষার দায়িত্ব নেওয়া উচিত, তাদের শরীরের দাবি অক্ষুণ্ণ রেখেই। এভাবে সেক্স ডলের উৎপত্তি ইতিহাস জড়িয়ে গিয়েছে যুদ্ধ, সেনাদের একাকীত্ব, যৌনচাহিদা ও সুরক্ষিত যৌনতার চেতনার সঙ্গে। ট্রায়াল হয়েছিল জার্মানির সেনা ছাউনিতে। তবে বছর দুয়েকের মধ্যে এই পরিকল্পনার অপমৃত্য ঘটে।

অ্যাডলফ হিটলারের প্রতি নরম হওয়ার তেমন কারণ তাঁর যুদ্ধোন্মাদ চরিত্র থেকে উল-কাঁটার খেলায় তুলে মনে বুনে নেওয়া যায় না। তবে হিংসার প্রতি তাঁর সহজাত আসক্তি, বঞ্চনার ন্যারেটিভ দিয়ে জাতিবিদ্বেষের মুকুল ফোটানো, ‘আমরা-ওরা’ রেখা টেনে সামাজিক প্রসারকে খণ্ডিত করা যদি হিটলারসুলভ আচরণের প্রকাশ হয়, তাহলে সেক্স ডল সরবরাহ করে সেনাদের যৌন রোগের থেকে বঁাচাতে চাওয়া আদৌ হিটলারসুলভ নয়।

প্রসঙ্গটি এল, অন্ধ্রপ্রদেশের ভোটে ‘ওয়াইএসআরসিপি’ এবং ‘টিডিপি’-র কন্ডোম বিতর্কের প্রেক্ষায়। ভোট বড় বালাই। মাস্‌ল পাওয়ার থেকে কাঁচা টাকার বিস্ফোরণ ভোটে প্রভাব ফেলে। ভোটের পরের ঘোড়া কেনাবেচাও হয়। অর্থাৎ ‘ভোট সিস্টেম’ পঙ্কিল, ঘুণধরা। ক্ষমতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সংযুক্ত। এরপরে ভোটপ্রচারে যদি দলীয় চিহ্ন-সহ কন্ডোম বিতরণ করা হয়, মহাভারত কেন অশুদ্ধ হবে? অন্তত টাকা দিয়ে ভোট খরিদ করার চেয়ে তো ভাল। অবাক করে– দু’টি প্রতিষ্ঠিত দলই নিখরচায় কন্ডোম বিতরণ করেছে ভোট-লক্ষ্যে, আর পরস্পরকে দুষছে– সমাজ-দূষণের অভিযোগে। গল্প কি দঁাড়াচ্ছে আদৌ?

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement