shono
Advertisement
Medicines

৬০০-১,১০০% পর্যন্ত বেড়ে যাচ্ছে ওষুধের দাম, বিপাকে ক্রমিক অসুখে ভোগা রোগী

আদতে আতান্তরে সেই সাধারণ মানুষ।
Published By: Kishore GhoshPosted: 08:12 PM Dec 19, 2025Updated: 08:12 PM Dec 19, 2025

৬০০-১,১০০ পর্যন্ত বেড়ে যাচ্ছে ওষুধের দাম, ‘এমআরপি’ উৎপাদন মূল্যের চেয়ে। এর ফলে সবচেয়ে বিপাকে– ক্রমিক অসুখে ভোগা মানুষজন।

Advertisement

বিশ্বে এখন নানা কারণে মৃত্যুহার অনেক কমেছে। উন্নত চিকিৎসা-ব্যবস্থার ফলে প্রবীণদের মৃত্যু কমেছে, বেড়েছে মানুষের গড় আয়ু। কিন্তু পাল্লা দিয়েই বাড়ছে নানা ধরনের অসুস্থতা। দূষণ, জীবনযাত্রার পরিবর্তনে দেখা দিচ্ছে বহু রোগ-ব্যাধি। প্রবীণ থেকে শুরু করে যে কোনও বয়সেই তার প্রভাব পড়ছে। ফলে রোগ নিরূপণ ও চিকিৎসা– দুই ক্ষেত্রে মানুষের খরচ বাড়ছে। আর, সাধারণ মানুষের যন্ত্রণা বেড়েছে ও বাড়ছে বিভিন্ন ওষুধ, বিশেষত, জীবনদায়ী ওষুধের দাম মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায়।

ওষুধের দাম গত কয়েক বছরে কী হারে বেড়েছে, প্রতিটি ভুক্তভোগী মানুষ বিলক্ষণ জানেন। সেই দামে রাশ টানতে সরকারের তরফে কার্যকর ভূমিকা চোখে পড়েনি। এটা শুধু আমজনতার মনের কথা নয়, কেন্দ্রীয় ফার্মাসিউটিক্যালস মন্ত্রককে এই মর্মে রিপোর্ট দিয়ে কার্যত তুলোধোনা করেছে রসায়ন ও সার বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

তাদের পরামর্শ, ২০১৩ সালের ‘ড্রাগ প্রাইস কন্ট্রোল অর্ডার আইন’-এর সংশোধন করে ‘ট্রেড মার্জিন রেশনাইলেজশন’-এর (‌‘টিএমআর’) অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যাতে শুধু ‘এমআরপি’ বা ‘সর্বোচ্চ খুচরো মূল্য’ নয়– উৎপাদন, পাইকারি বিক্রি, বণ্টন– সব স্তরেই ঊর্ধ্বসীমা ধার্য করা যায়। এ বিষয়ে পাইলট প্রোজেক্টের অভিজ্ঞতা, সব স্তরে লাভের সীমা বেঁধে দিলেও সর্বশেষ বাজারদর উল্লেখযোগ্য হারে কমানো সম্ভব।

কিন্তু তারপরেও এই পদক্ষেপ না-করা, কমিটির মতে, ‘গুরুতর প্রশাসনিক ব্যর্থতা’। এই নিয়ন্ত্রণ না-থাকায় বহু ক্ষেত্রে ওষুধের ‘এমআরপি’ উৎপাদন মূল্যের চেয়ে ৬০০ থেকে ১,১০০% পর্যন্ত বেড়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ক্রনিক রোগে ভোগা মানুষজন, যাঁদের নিয়মিত, টানা ওষুধ খেতে হয়।

ছোট-বড় নানা ওষুধ সংস্থা কীভাবে মুনাফা করে, তা বহুল চর্চিত এখন। গুণমানের সঙ্গে আপস, এক শ্রেণির চিকিৎসকের সঙ্গে অশুভ আঁতাঁত, উপহার ও কাঞ্চনমুদ্রা যোগে অপ্রয়োজনীয় ওষুধ লেখা– কিছুই বাকি নেই। সেজন্যই বিপুল দাম বাড়িয়ে মুনাফার ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা। সরকারের কাছেও তা অজানা নয়। তা সত্ত্বেও দাম নিয়ন্ত্রণে নিষ্ক্রিয় থাকা কি শুধুই ব্যর্থতা? না কি ওষুধ সংস্থার অর্থ, নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে, বা ঘুরপথে, দলীয় তহবিলে ঢোকে বলে এই জেগে ঘুমানোর ভান!

কারণ যাই হোক, আদতে আতান্তরে সেই সাধারণ মানুষ। যে জনতা-জনার্দনের সেবা করার অদম্য স্পৃহায় নেতারা রাজনীতির ময়দানে অবতীর্ণ হন, ক্ষমতা পেলে তঁাদের কীভাবে নাগপাশে বেঁধে ফেলা হয়, ওষুধের দাম বৃদ্ধি– তারই এক জ্বলন্ত নিদর্শন। সুসভ্যতার মানদণ্ড নির্ণয়ের যেসব ‘ইনট্যানজিবল’ বা অদৃশ্য সংজ্ঞা রয়েছে– দুর্নীতি এড়িয়ে চলা, দুর্নীতি-মুক্ত হওয়া তার মধ্যে অবশ্যই একটি। খাদ্যে ভেজাল, ওষুধে ভেজাল দিয়ে দাম নিয়ন্ত্রণ করার অনৈতিক পন্থাটি নিয়ে নানা কানাঘুষোও শোনা যায়। তবে সেই অনবদমিত লোভ ও উচ্চাশাকে বাগে আনার দায় সাধারণ মানুষেরও।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ওষুধের দাম গত কয়েক বছরে কী হারে বেড়েছে, প্রতিটি ভুক্তভোগী মানুষ বিলক্ষণ জানেন।
  • ছোট-বড় নানা ওষুধ সংস্থা কীভাবে মুনাফা করে, তা বহুল চর্চিত এখন।
Advertisement