shono
Advertisement
Nuclear Weapons

নির্বোধ আস্ফালন, আণবিক অস্ত্রের হুঁশিয়ারি পাকিস্তানের

পারমাণবিক যুদ্ধের পর পৃথিবী কি বাসযোগ্য থাকবে?
Published By: Kishore GhoshPosted: 08:27 PM Apr 30, 2025Updated: 08:27 PM Apr 30, 2025

পাকিস্তান ভারতকে বলেছে, সমস্ত আণবিক অস্ত্র নিয়ে তারা যুদ্ধে প্রস্তুত। কিন্তু পারমাণবিক যুদ্ধের পর পৃথিবী কি বাসযোগ‌্য থাকবে কারও জন‌্য?

Advertisement

১৯৫৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স‌্যর উইনস্টন চার্চিল। লেখার মূল বিষয়– দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। তবে তাঁকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হল তিনটি কারণে– তাঁর ইতিহাস-চেতনা, যেসব মানুষের বিষয়ে তিনি লিখেছেন তাঁদের বিশ্লেষণে তাঁর সততা ও গভীরতা, এবং তাঁর সমর-দর্শন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, এক ভয়ংকর যুদ্ধ ঘনিয়ে আসছে বিশ্বজুড়ে। এবং যুদ্ধ প্রসঙ্গে সেই অবিস্মরণীয় লেখার নাম দিয়েছিলেন ‘দ‌্য গ‌্যাদারিং স্টর্ম’। দুই বিশ্বযুদ্ধ ছাড়া যুগে-যুগে পৃথিবীতে ঘটেই চলেছে যুদ্ধ। মানুষের সভ‌্যতা ও মানুষে-মানুষে যুদ্ধ, এ তো অঙ্গাঙ্গি। এই মুহূর্তে পৃথিবীতে একটি দিনও আমরা কি ভাবতে পারি যেদিন সম্পূর্ণ যুদ্ধমুক্ত? পৃথিবীর কোথাও কেউ সেদিন শিকার হল না বুলেট কিংবা বোমার উত্তাল রণক্ষেত্রে?

ভাবতে আশ্চর্য লাগে, এই রণক্ষেত্রেই ভারতে জন্মেছিল ‘গীতা’। হিন্দু ধর্ম ছাড়া এমন একটি ধর্মও কি ভাবা যায় যে-ধর্মবিশ্বাস জন্ম দিতে পারে গীতার অনাসক্ত কর্মবাদ ও যুদ্ধদর্শনের? বুদ্ধদেব বসুর ‘প্রথম পার্থ’ কাব‌্যনান্যে গীতার যুদ্ধদর্শন তাঁর ভাষায় কৃষ্ণর মুখে এইভাবে উচ্চারিত হয়েছে, ‘এই যুদ্ধে সকলেই পরাজিত হবে, কর্ণ, জয়ী, বিজিত, হত, উদ্বৃত্ত –সকলেই।’ তবু কৃষ্ণর এই বাণী, থামাতে পারেনি যুদ্ধ। যদিও এই প্রশ্ন যুদ্ধদর্শনের পাতায়-পাতায় প্রবহমান, যুদ্ধে জয়-পরাজয় কি সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত হতে পারে? এই প্রসঙ্গে কারও-কারও মনে পড়তে পারে ‘ওয়ার অ‌্যান্ড পিস’ উপন‌্যাসে টলস্টয়ের যুদ্ধদর্শনে ফুটে ওঠা স্বয়ং নেপোলিয়নের এই ছবি: যুদ্ধ জয়ের শেষে কোমরে হাত দিয়ে সদম্ভে দাঁড়ালেন নেপোলিয়ন আকাশের দিকে তাকিয়ে। আকাশ কী অন্তহীন বিপুল! নেপোলিয়ন কী শোচনীয় ক্ষুদ্র!

পাকিস্তান বিপুল অহংকারে ভারতকে ভয় দেখিয়ে বলেছে, তাদের সমস্ত আণবিক অস্ত্রের মুখ ভারতের দিকেই ঘুরে– ওগুলি খেলনা-অস্ত্র নয়। ভারতকে ধ্বংস করতেই তা সাজিয়ে রাখা।
ভারতের পারমাণবিক অস্ত্র ও শক্তি পাকিস্তানের থেকে বেশি। তবু সেই শক্তির বড়াই ভারত করেনি। এখানেই বোঝা যায় দেশের বোধ, সহনশীলতা এবং সাধারণ মানুষের প্রতি ভারতের দয়ামায়া, মমতা, মাঙ্গলিকবোধ। অ‌্যাটম বা হাইড্রোজেন বোমার যুদ্ধ দু’টি পাশাপাশি দেশের কাউকেই পালাতে দেবে না ব‌্যাপ্ত ধ্বংস ও সুদূরপ্রসারী সর্বনাশ থেকে। ধর্মান্ধ পাকিস্তানের এই জ্ঞানটুকু নেই যে, পারমাণবিক যুদ্ধের পরে পৃথিবীটাই আর বাসযোগ‌্য থাকবে না। অলডাস হাক্সলি এই কথাটাই সোচ্চারে বলে গিয়েছেন তঁার ‘এপস্‌ অ‌্যান্ড এসেন্স’ উপন‌্যাসে। পারমাণবিক যুদ্ধে কে জিতল, কে হারল, তা বোঝার উপায় থাকে না।

হার-জিত একাকার হয় মানবজাতির পরিব‌্যাপ্ত সর্বনাশে। একটি ধর্মান্ধ দেশের হাতে যদি ব‌্যাপ্ত ধ্বংসের শক্তি থাকে, তা সমস্ত পৃথিবীর পক্ষেই দুঃস্বপ্ন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ভাবতে আশ্চর্য লাগে, এই রণক্ষেত্রেই ভারতে জন্মেছিল ‘গীতা’।
  • ভারতের পারমাণবিক অস্ত্র ও শক্তি পাকিস্তানের থেকে বেশি।
Advertisement