শাড়ি নেহাত নারীশরীর ঘিরে থাকা কয়েক গজের বস্ত্রখণ্ড নয়। রেশম, সুতি, সিন্থেটিক প্রভৃতি হরেক সুতোর এই বুনন ভারতীয় উপমহাদেশে নারীর লজ্জা নিবারণ করেছে, তাকে প্রদান করেছে ব্যক্তিত্ব ও নমনীয়তা, সম্ভ্রম ও ঐতিহ্যের আলো। ২১ ডিসেম্বর ছিল বিশ্ব শাড়ি দিবস। লিখছেন চিরঞ্জীব রায়।
ত্রিভুবনের অস্তিত্বরক্ষার সে এক মহা মাহেন্দ্রক্ষণ! সমুদ্রমন্থন করে অমৃতের ভাণ্ড উঠেছে। সেই অমৃত পান করে অমরত্ব লাভ করতে উৎসুক দেব ও দানব দু’-পক্ষই। সে বিষম সংকটের পরিস্থিতি। কারণ, অমরত্বে দেবলোকের একাধিপত্য রাখতে হলে দানবদের নাগাল এড়িয়ে অমৃত কেবল দেবতাদেরই আস্বাদ করাতে হবে। সেই অসাধ্যসাধন করতে এগিয়ে এলেন বিষ্ণু। মোহিনী রূপে। নারায়ণের একমাত্র নারীরূপী অবতার। মূর্ত সম্মোহনী, লাস্যময়ী মোহিনী।
তঁার শরীরী বিভঙ্গ ও রূপের জাদুতে দানবদের বিবশ করে কেবল দেবতাদের অমৃতের ভাগীদার করলেন, এমনকী, দেবী এবং অপ্সরাদেরও ঈর্ষান্বিত করে তোলা, হীনমন্যতায় ভুগিয়ে ছাড়া মোহিনী। কী ছিল তঁার সম্মোহনী রূপের অস্ত্র? অপরূপা সেজে উঠতে বিষ্ণু সেদিন অন্য কোনও পরিধেয় নয়, শাড়িই বেছে নিয়েছিলেন! প্রখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী বেদবীর আর্যর বিচার অনুযায়ী, ১১ হাজার ২০৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দের ১৩ অক্টোবর ছিল নাকি সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। অর্থাৎ, ১৩ হাজার বছর আগেই শাড়ি তার ক্যারিশমা দেখিয়েছিল!
নারীশরীর আলিঙ্গন করে থাকা সাড়ে চার থেকে নয় গজের সেলাইবিহীন এক বস্ত্রখণ্ড।
রেশম, সুতি, সিন্থেটিক নানা সুতোর বুনন ভারতীয় উপমহাদেশ জুড়ে কেবল টুকরো কাপড়ে সীমাবদ্ধ না থেকে নারীসুলভ নমনীয়তা, কমনীয়তা, মান-সম্ভ্রম, ঐতিহ্যে অঙ্গাঙ্গী হয়েছে। উৎসবের আঙিনা বা রান্নাঘর, কর্পোরেট বোর্ডরুম থেকে মন্দির, মধ্যরাত্রি বা মধ্যদুপুর, শাড়ি নারীর সমস্ত অবস্থার স্বয়ংসম্পূর্ণা লজ্জাবস্ত্র, আত্মগরিমার নিশানও বটে। নারীত্বের নিশ্চিত অথচ নীরব নির্ঘোষ। আসমুদ্রহিমাচল বৈচিত্রকে একতায় বেঁধে দেওয়া, স্রেফ পোশাক নয়, এক চিরকালীন ঐতিহ্য।
৫,৫০০ থেকে ৩,০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মহাভারতে দুঃশাসন দ্রৌপদীর গাউন বা ঘাঘরা-চোলি নয়, শাড়ি হরণেরই অশ্লীলতা করেছিলেন। নারীবিদ্বেষী অথবা শাড়িবিদ্বেষী যঁারা প্রাচীনত্ব প্রসঙ্গে মহাভারত বা সমুদ্রমন্থনের মতো পৌরাণিক আখ্যান রম্যরচনা বলে উড়িয়ে দিতে চান, তঁাদের জন্য আছে পাথরে খোদাই করা মূর্তিমান ইতিহাস। প্রায় পঁাচ হাজার বছরের সিন্ধু সভ্যতায় অঙ্গে জড়ানো শাড়ি-সদৃশ বস্ত্রের অকাট্য প্রমাণ। যিশুর জন্মের ৫ সহস্রাব্দ আগেই তুলো চাষের, বস্ত্রবুননের হদিশ মিলছে। পাওয়া যাচ্ছে ইন্ডিগো থেকে নীল, মঞ্জিষ্ঠা থেকে লাল রং ও হলুদ ব্যবহারের তথ্য। মানুষ রেশম উৎপাদনের রহস্য ভেদ করে ফেলছে আড়াই হাজার খ্রিস্টপূর্বাব্দেই।
এই সমস্ত শৌখিনতার দোলায় শাড়ির অঁাচলেই হিল্লোল উঠে থাকতেই পারে। সাড়ে তিন হাজার বছর আগে ঋগ্বেদে সেলাইহীন অঙ্গবস্ত্রের উল্লেখ করছে। আর, শাড়ি যার অপভ্রংশ বলে ধরে নেওয়া হয়, সেই সংস্কৃত ‘সাতি’ বা ‘সাতিকা’ (বস্ত্রখণ্ড) শব্দটির সঙ্গে আমাদের পরিচিতি ঘটছে ষষ্ঠ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, বিভিন্ন হিন্দু এবং বৌদ্ধ পাঠ্যে।
সেখানেই উল্লেখ পাচ্ছি– উত্তরীয় এবং স্তনপট্টের; যেগুলি বিবর্তনে ‘অঁাচল’ এবং ‘ব্লাউজ’ হয়ে দঁাড়াল। সপ্তম শতাব্দীতে বাণভট্টর কাদম্বিনী অথবা তামিল মহাকাব্য ‘সিলাপ্পাদিকারম’-এর কালে শাড়ি ও নারী অবিচ্ছেদ্য হয়ে পড়ছে। সামাজিক, মানসিক পটভূমির পরিবর্তনে অমোঘ বৈচিত্র আসছে শাড়ি থেকে শাড়ি পরার ধরনে। কাদম্বিনীর কালে নাভি প্রদর্শন সৌন্দর্য ও উর্বরতার প্রতীক। পরে, ধর্মশাস্ত্র সে-প্রথাকে অশ্লীল তকমা দিল। নার্গিস থেকে ইন্দিরা গান্ধী, গায়ত্রী দেবী থেকে দ্রৌপদী মুর্মু যেমন পরিপাটি কুঁচি ও অঁাচল-সহ শালীন শৈলীর শাড়ি পরে থাকেন, তেমনই ‘নিভি’ নামের দক্ষিণি কেতার শাড়ি পড়া শুরু হয়েছিল মধ্যযুগে। উনবিংশ-বিংশ শতাব্দীতে ঔপনিবেশিক পোশাক-সংস্কৃতির ঢেউ নিয়ে এল পেটিকোট, ভিক্টোরিয়ান ব্লাউজ। দেশ যখন স্বাধীনতা যুদ্ধে একাগ্রচিত্ত, সংগ্রামী নারীর গর্বের পরিধেয় ছিল শাড়িই। স্বাধীনোত্তর ভারতে ভারতীয় কূটনীতির গাম্ভীর্য এবং সিনেমা জগতের গ্ল্যামার, ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার সুতো মিশিয়ে শাড়ি বুনে দিল।
কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা, কচ্ছ থেকে কোহিমা– এত ভিন্নধর্মী কৃষ্টি, সংস্কৃতি, রীতির, প্রথার বৈচিত্রময় যাপন জন্ম দিল তামিলনাড়ুর কাঞ্জিভরম থেকে উত্তরপ্রদেশের বেনারসির, মহারাষ্ট্রের পৈঠানি থেকে গুজরাতের পটন পটোলা, বাংলার দখিনা বাতাসের মতো প্রাণ-জুড়নো পরশের সুতি বা তঁাতের শাড়ি। পবিত্রতা চুঁইয়ে পড়া তসর অথবা আভিজাত্যে সিঞ্চিত বিশ্বজয়ী জামদানি-বালুচরি। জগন্নাথ দেবভূমির ইক্কত, বোমকাই ও সম্বলপুরি, গুজরাত-রাজস্থানের বঁাধনি ও আজরখ বা কোটা, পঞ্চনদের দেশের গরদ-গাত্রে ফুলকারি, অন্ধ্রের কলমকারি অথবা পুত্তাপাকা নামে তেলেঙ্গানার ইক্কত ও পচমপল্লি, কেরলের ঘিয়েরঙা জমির উপর সোনালি পাড়ের কাসাভু।
এর বাইরেও এলাকা, আবহাওয়া, ভাষা, সংস্কৃতি, জীবনযাপন, উপাদান, কারিগরি, শৈল্পিক কল্পনা ইত্যাদি নানা মাপকাঠির নিরিখে উপমহাদেশে আরও হাজারো শাড়ির সীমাহীন সম্ভার। তাই প্রিয় শাড়ি উল্লেখে অপারগ হলে মমতাময়ী নারী মাফ করবেন। আসলে, এ যেন এক রামধনু রঙিন অন্তহীন বাগান, যেখানে বিশ্বকর্মা-সদৃশ শিল্পীরা অসীম দক্ষতায় এবং সূক্ষতায় বিভিন্ন প্রজাতির সম্মোহনী ফুল ফুটিয়ে চলেছেন। সে ফুলচয়নে ও পরিধানে সৌন্দর্যপ্রিয় পৃথিবী মাতোয়ারা।
এত মাপ, উপাদান, ওজন ও নকশার শাড়ি আবহমান কাল ধরে সে সমস্ত পরাও হয়ে আসছে বিভিন্ন প্রাদেশিক, পেশা এবং জাতি ও সম্প্রদায়গত বৈশিষ্ট্যের প্রেক্ষিতে। ভারতজুড়ে অতএব অন্তত আশিরকম শাড়ি পরার ধরন আছে। সবথেকে প্রচলিত অবশ্যই যুগের উপযোগী, নিভি। বিষ্ণুপ্রিয়রা দাবি করেন দ্রাবিড়ের দেশ নয়, কৃষ্ণের মথুরা থেকে দ্বারকায় গমনকালে গোপিনীদের সঙ্গেই নিভি-র ধরনটিও সফর করে। সেখান থেকে কোমরে কুঁচি গোঁজার ধরনটি ছড়িয়ে পড়ে দক্ষিণে। শ্রীকৃষ্ণ ফিরে গেলেও তঁার বিরহে কাতর রমণী কূলরাধারাণী ও গোপিনীবর্গ শাড়ি পড়ার ধঁাচ অঁাকড়ে থাকে।
কাজেকর্মে সুবিধার জন্য মহারাষ্ট্রে ধুতির মতো করে শাড়ি পরা হয়। সে ধঁাচের নাম নওভরি। তামিল ব্রাহ্মণরা, বিশেষত ধর্মীয় আচারে, যেভাবে শাড়ি পরে থাকে, তাকে বলা হয় মাদিসারু। অসমের বৈশিষ্ট্য মেখোলা-চাডোর। নিম্নাঙ্গের পরিধেয় এবং অঙ্গ-আবরণী, দুই আলাদা বস্ত্রখণ্ড। গুজরাত, উত্তরপ্রদেশে চালু সিধা পাল্লু বা সোজা অঁাচল, পেশার সুবিধায় অন্ধ্রের মৎস্যজীবীদের পছন্দ কাপ্পুলু। আর, সব শৈলীর সেরা বাংলার ধরন, ‘আটপৌরে’। যেমন করে শাড়ি পরে অঁাচলে ছবির গোছা না বঁাধলে মা’-কে ঠিক যেন ‘মা’ মনে হবে না, মমতাময়ী সন্ধ্যারাণী আগুনের মতোই সর্বব্যাপী, জলের মতো সর্বত্রগামী।
পুরাণের দেবগাথা থেকে গৃহস্থের গেরস্থালি, কূটনীতির অলিন্দ থেকে বলিউডের আসর, শাড়ি ছাড়া নারী লবণহীন পদের মতো। গুরুভায়ুর থেকে উড়ুপি, তিরুপতি থেকে মাদুরাই, বিশেষত বিষ্ণু মন্দির এমনকী আমাদের বচ্ছরকার মা দুর্গার পুজোও প্রণামির শাড়ি ছাড়া অসম্ভব। স্রেফ মউ চুক্তি নয়, কূটনীতির বোর্ডে চালমাত করতে গেলে দ্বিতীয় রানি এলিজাবেথ থেকে বারাক-পত্নী মিশেল ওবামাকে ধনরত্ন নয়, তার থেকেও অমূল্য বাংলার কঁাথাস্টিচ বা মহারাষ্ট্রের পৈঠানি দেওয়াই ভারতের সুসংস্কৃত রেওয়াজ। ইন্দিরা গান্ধী থেকে নির্মলা সীতারমন, সুধা কৃষ্ণমূর্তি থেকে সুস্মিতা সেন– আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতীয় নারীর যে সসম্ভ্রম
ছবিটি ধরে রেখেছেন, তা শাড়ি পরিহিতা।
শাড়ির এই সশ্রদ্ধ ভাবমূর্তি বেদ থেকে পুরাণ হয়ে রোজকার ভক্তিভাবে বয়ে এসেছে। কমনীয় সৌন্দর্য, পবিত্রতা এবং নারীসুরক্ষার প্রতীক শাড়িই পার্বতীর শক্তি এবং মাতৃত্বের স্বরূপ, লক্ষ্মীর সমৃদ্ধির ও স্বচ্ছলতার বাহক এবং দুর্গার অশুভনাশিনী রূপের ধারক। শাড়ি মনে উর্বরতার নিশান, বৈবাহিক সুখের স্মারক। শাড়ি এবং আধ্যাত্মিকতার সৌরভ অঙ্গাঙ্গী হয়ে আছে। তামিলনাড়ুর আদি বাসিন্দা, জরিতে মোড়া যে কাঞ্জিভরম ছাড়া রেখা নাকি গত বহু বছর অন্য কোনও শাড়ির অঙ্গস্পর্শ করেননি, পুরাণে কথিত, স্বয়ং ব্রহ্মা ঋষি মার্কণ্ডেয়কে সেই দেবদুর্লভ শাড়ি বুনতে শিখিয়েছিলেন। প্রথম সৃষ্ট শাড়িটি ঋষি অর্ঘ্য দেন দেবী কামাক্ষীর পাদপদ্মে। মতান্তরে, দেবী স্বয়ং পদ্মের তন্তু থেকে কাঞ্জিভরম সৃষ্টি করেন। তাই নববধূর জীবনে দৈব আশীর্বাদ বয়ে আনতে কাঞ্জিভরম ছাড়া বিয়ে অসম্পূর্ণ। এমন করেই
দৈবের সঙ্গে লৌকিক জীবন গেঁথে দিয়েছে শাড়ি।
ওড়িশার মন্দির অনুপ্রাণিত বোমকাই এবং সম্বলপুরি দেবতাসৃষ্ট না হলেও তাতে রামায়ণ ও মহাভারতের বিভিন্ন কাহিনির পটচিত্র দৈনন্দিন জীবনচর্যায় সনাতনী প্রথা মিলিয়ে মিশিয়ে দেয়। এবং দৈবিক তাৎপর্যেই না থেমে শাড়ি অনায়াসে রঙিন আবেগের ঢেউ তোলে ভারতীয় সমাজে অপরিহার্য বলিউডের উঠোনে। মধুবালার খানিক যেন অন্যমনস্ক, অথবা মুমতাজের কুঁচিবিহীন শাড়ি পরার ধরন যদি ‘আইকনিক’ হয়ে থাকে, তাহলে ‘চঁাদনি’, ‘লমহে’ বা ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’-য় শ্রীদেবীর বন্ধনহীন অঁাচলের শিফন, ‘হাম আপকে হ্যায় কউন’-এ মাধুরী দীক্ষিতের ঝলমলে বেগুনি শাড়ি, ‘সিলসিলা’-র রেখার একমেবাদ্বিতীয়ম কাঞ্জিভরম অথবা ‘দেবদাস’-এ ঐশ্বর্য রাইয়ের বাহুল্যবর্জিত কালো শাড়ি কেবল দর্শকের কল্পনা রঞ্জিত করেনি, ভারতীয় আবেগের ছবি এঁকে গিয়েছে অকাতরে।
এবং সেই অবকাশে ভারতীয় সমাজকে এক গ্রন্থিতে বঁাধার এবং ভারতীয় নারীর ‘শাড়ি, নট সরি’ গোত্রীয় আত্মপরিচয় গড়ে তোলার সমান্তরালে, দেশের কোষাগার ও জীবিকাক্ষেত্র পুষ্ট করছে। সুপরিকল্পিত ব্র্যান্ডিং, মার্কেটিং এবং বিশেষত ই-কমার্সের সুবাদে ভারতীয় শাড়ির বাজারের বাণিজ্যিক মূল্য বছরে ১ লক্ষ কোটি। এর মধ্যে ২০ শতাংশ আসে মূলত আমেরিকা, সংযুক্ত আমিরশাহি, ব্রিটেন, কানাডা, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরে রফতানি থেকে। ভারত যে এখন বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পোশাক রফতানিকারক, তার জন্য হাততালি তো শাড়িরই প্রাপ্য। এখানেই শেষ নয়, শাড়ির বুনন প্রত্যক্ষভাবে দেশের প্রায় ৪০ লক্ষ মুখে অন্ন তুলে দেয়। আরও একটা স্বস্তির কথা, শাড়ি থেকে রোজগারের ৬০ শতাংশই যায় গ্রামীণ অর্থনীতিতে। অর্থাৎ, সমাজ থেকে সংস্কৃতি, ঐতিহ্য থেকে অর্থনীতির ধারক ও বাহক রূপে শাড়ি এককথায় অলরাউন্ডার।
‘সংসার সুখী হয় গৃহিণীর গুণে’। এই যে চিরন্তন গৃহিণী, এঁকে কি জিন্স-টপ, ঘাঘরা-চোলি, সালোয়ার-কামিজে ভাবা যায়? ওই কুঁচির ভঁাজে ভঁাজে, অঁাচলের পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে কতযুগের মাতৃত্বের সুঘ্রাণ, কৈশোর থেকে যৌবনে উত্তরণের রোমাঞ্চ, সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ এক বৈচিত্রমুখর ভূখণ্ডের সহস্রাব্দ-প্রাচীন ঐতিহ্য। শাড়ি তাই স্রেফ পোশাক মাত্র নয়, ভারতীয় আবেগের নাম। নারীত্বের নিটোল প্রকাশ। ভক্তি থেকে মমত্ব, নিখাদ ভালবাসা থেকে হৃদয়-শিরশির রোমাঞ্চ, নারীসুলভ কোমল অনুভূতির স্বচ্ছতোয়া স্রোতস্বিনীর নাম শাড়ি। তাই তো ‘এই সমীরণ, কী হচ্ছেটা কী!’... বাতাসকে এমন কপট ধমক দেওয়া যায় কেবল তখনই– যখন সে খুনসুটি করে শাড়ির অঁাচলের সঙ্গে।
(মতামত নিজস্ব)
লেখক প্রাবন্ধিক
chiranjibray67@gmail.com
