shono
Advertisement

Breaking News

Vande Mataram

সংসদে 'বন্দে মাতরম' হল 'বন্দে ভারত', মোদির মুখে 'বঙ্কিমদা', উচ্চারণ কী কঠিন!

সংসদের বিশেষ অধিবেশনে কতখানি মর্যাদা পেলেন সাহিত্য সম্রাট?
Published By: Kishore GhoshPosted: 09:32 PM Dec 08, 2025Updated: 12:10 PM Dec 09, 2025

কিশোর ঘোষ: হিরক রাজার ছলে সদর্পে মাইক ফুঁকে ঘোষণা দিয়েছিল কেন্দ্র---সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘বন্দে মাতরম’ তাদের চোখের মণি। ফলে স্বাধীনতার মহামন্ত্র হয়েও হিন্দু জাতীয়তাবাদের জয়ধ্বনি ঘোষিত হয়েছিল ১৮৭৫ সালে রচিত যে গানে, তার দেড়শ বছরে দহরম-মহরম হবে। 'বন্দে মাতরম' এবং তাঁর স্রষ্টাকে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাতে সংসদে বিশেষ অধিবেশনেরও ডাক দিয়েছিল শাসকপক্ষ। হায়, তাতেই কিনা ল্যাজে-গোবরে হাল! 'বঙ্কিমচন্দ্র', 'চট্টোপাধ্যায়', এমনকী 'বন্দে মাতরম' উচ্চারণ করতে গিয়েও বিপদে পড়লেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং সম্প্রদায়!

Advertisement

বঙ্কিমচন্দ্র ১৮৭৫-এ ‘বন্দে মাতরম’ রচনা করলেও ১৮৮২-তে ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসে গানটিকে অন্তর্ভুক্ত করেন। এরপরেই পরাধীন ভারতে দ্রুত জনপ্রিয় হয় 'বন্দে মাতরম'। ১৯৪৭-এ স্বাধীনতার পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত 'জন গণ মন অধিনায়ক' জাতীয় সঙ্গীত (National Anthem) হলে বঙ্কিমের 'বন্দে মাতরম'কে জাতীয় গানের (National Song) মর্যাদা দেওয়া হয়। সেই গানের দেড়শ বছরে সংসদের আলোচনায় সোমবার হোঁচট খেলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে ‘বঙ্কিমদা’ বলে সম্বোধন করে বসলেন তিনি। উল্লেখ্য, বঙ্কিমের জন্ম ১৮৩৮ সালে, মোদির জন্ম ১৯৫০-এ। অর্থাৎ কিনা সাহিত্য কীর্তির কথা বাদ দিলেও কাঁচা অঙ্কের হিসাবে ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর তুলনায় ১১২ বছরের বড় সাহিত্য সম্রাট। স্বভাবতই মোদির 'বঙ্কিমদা' সম্বোধন নিয়ে সংসদেই তীব্র আপত্তি জানান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। শেষে ওই আপত্তির জেরে ভাষণের মাঝেই ভুল শুধরে ‘বন্দে মাতরম’-এর স্রষ্টাকে ‘বঙ্কিম বাবু’ বলে সম্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

ঋষি বঙ্কিমকে 'সম্মান' জানানোর পালা (যাত্রাপালাও বলা যেতে পারে) এখানেই শেষ হয়নি। আরেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত সাহিত্য সম্রাটের পদবী বদলে বলেন 'বঙ্কিম দাস চট্টোপাধ্যায়'। কারও কারও আবার 'চট্টোপাধ্যায়' বলতে গিয়ে দাঁত ভেঙে যাচ্ছিল প্রায়। অভিনব কাণ্ড করেছেন আরজেডির সাংসদ অভয় কুমার সিনহাও। যে বিষয় আলোচনা অর্থাৎ কিনা 'বন্দে মাতরম', তাও ঠিক মতো উচ্চারণ করতে পারেননি তিনি। 'বন্দে মাতরম'কে 'বন্দে ভারত' বলেন অভয়।

'বন্দে মাতরম' নিয়ে বিশেষ অধিবেশনে এমন 'সার্কাসে' আসরে নেমেছে বিরোধীরা। তারা বলছে---হৃদয় ভক্তি নেই মোটে, কেবল দেখনাইপনা। আসলে ধরা পড়ে গিয়েছে তঞ্চকতা। ব্যঙ্গের সুরে কেউ কেউ বলছেন, এরপর তো এরা বিবেকানন্দদা, রামকৃষ্ণদা, চাই কী চৈতন্যদাও বলে বসতে পারে! আর বাঙালির মনে পড়ছে রাজশেখর বসু ওরফে পরশুরাম রচিত 'বিরিঞ্চি বাবা' গল্পের কথা। সেই কাহিনির কেন্দ্রীয় চরিত্র ভণ্ড আধ্যাত্মিক গুরু বিরিঞ্চি বাবা দাবি করেছিলেন, কাশীর প্রতিষ্ঠা তাঁর চোখের সামনে হয়েছে। প্লেটো, আইনস্টাইন তো শিশু, এমনকী যিশুকেও তিনি 'ছোকরা' বয়সে দেখেছেন। উফ 'বন্দে মাতরম'! 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বঙ্কিমচন্দ্র ১৮৭৫-এ ‘বন্দে মাতরম’ রচনা করলেও ১৮৮২-তে ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসে গানটিকে অন্তর্ভুক্ত করেন।
  • 'বন্দে মাতরম' নিয়ে বিশেষ অধিবেশনে এমন 'সার্কাসে' আসরে নেমেছে বিরোধীরা।
Advertisement