নির্মল ধর: সিরিজের পরিচালকের নাম যখন কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, এবং ছবির নাম “রক্তপলাশ” (Raktapalash Review), তখন রাজ্যের কিছু অংশ জুড়ে মাওবাদী আন্দোলনের নামে যে সন্ত্রাসের পরিবহ সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে, তার বাইরে গিয়ে নিশ্চয়ই একটা পজিটিভ দিকে আঙুল তুলবেন, এমন প্রত্যাশা ছিল। গরীব, না কিছু পাওয়া মানুষদের জন্য যারা জান প্রাণ দিয়ে লড়ছেন, শহরের আরাম স্বাচ্ছন্দ্য ছেড়ে যারা মাটির মানুষের জন্য বুক পেতে দাঁড়াচ্ছে, তাদের ক্রিয়াকর্মের সদর্থক দিকটায় আলো ফেলবেন, এমনটাই প্রত্যাশা ছিল কমলেশ্বর বাবুর কাছে। তবে এই আট পর্বের সিরিজ “রক্তপলাশ” সেই প্রত্যাশা পূরণে কিছুটা ব্যর্থ!
তবে হ্যাঁ, ঝাড়গ্রামের জঙ্গলের মধ্যে এক রিসোর্টে এক রাতে প্রায় আট – ন’জন নারী পুরুষ পৌঁছে যেসব প্রেম,অপ্রেম, সমপ্রেম, অসম প্রেমের কান্ডকারখানা প্রদর্শন করলেন তা কিন্তু নজর কাড়বে। এখানে উল্লেখ করতে হয়, সিরিজের এক এপিসোডে রিসোর্ট মালিকের (শিলাজিৎ) আচমকা আবির্ভাব পরিবেশটাই পাল্টে দেয়। মাঝে মাঝে অবশ্য চিত্রনাট্য অফ ভয়েসে জানিয়ে দিয়েছে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস দুঘর্টনার জন্য ওখানে পুলিশি অত্যাচার অব্যাহত, সামরিক অপারেশন চলছে, চলছে মাওবাদীদের পাল্টা আক্রমণও।
[আরও পড়ুন: সার্থক নামকরণ! একেবারেই ভয় দেখায় না ‘ভয় পেও না’ ছবিটি, পড়ুন রিভিউ]
মাওবাদী দলের অন্যতম প্রধান দিবাকর মাস্টার (কমলেশ্বর) এখন পুলিশের কব্জায়! তাঁকে উদ্ধার করার জন্যই রিসোর্ট মালিকের ছদ্মবেশে দলের দ্বিতীয় নেতা হাজির। কিন্তু তিনি যে খেলার ছলে রিসোর্টবাসীদের সঙ্গে প্রত্যেকের মুখোশ খোলার কাজটি করেন সেটা গল্পের সবচেয়ে আসল জায়গা। তবে এটা বোঝাতে গিয়েই চিত্রনাট্য একটু দুর্বল হয়ে ওঠে। ছবির বিভিন্ন চরিত্রের মধ্যে দ্বিচারিতা, মুখোশের আড়ালে খসিয়ে প্রকৃত চেহারা বের করে আনার কাজ, আর আজকের জটিলতম রাজনীতির পরিবেশটি তিনি বেশ পরিষ্কার করেই দেখিয়েছেন। তবুও বলবো, কমলেশ্বরের (Kamaleshwar Mukherjee) কাছ থেকে আরও স্পষ্ট রাজনীতির দিক নির্দেশনার আশা ছিল। বাস্তব দেখিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু সিরিজের শেষে এসে সবটা যেন ঘেঁটে ফেলেন। শিলাজিতের সুন্দর স্বাভাবিক অভিনয় নজর কাড়ে। অন্যরাও তাঁর সঙ্গে একই লয়ে অভিনয় করেছেন। দেবদূত ঘোষ,অনন্যা সেনগুপ্ত, রোজা পারমিতা দে, উৎসব মুখোপাধ্যায়, মৌমিতা পণ্ডিত সবাই যথাযথ।