অরণী ভট্টাচার্য: নব্বইয়ের ধাঁচে প্রেম তবে ২০২৫ সালকেও যেন কোথাও গিয়ে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে ছবিতে। খুব ভাবুক না হয়ে শুধুমাত্র সময় কাটানোর জন্য একটা টাটকা প্রেমের গল্প দেখতে হলে এ ছবি উপযুক্ত। কিন্তু ছবির শুরু থেকে শেষ অবধি যে প্রেমের জমাট বুনোট তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছিল তা যেন কোথাও কোথাও গিয়ে হোঁচট খেয়েছে বললেও খুব ভুল হবে না। তবে ছবিতে ‘খুল্লমখুল্লা’ রোম্যান্সে মজতে দেখা গেল কার্তিক-অনন্যাকে। এই গল্প রে-রুমি নামের এক দুষ্টু মিষ্টি জুটিকে নিয়ে। রে’র চরিত্রে কার্তিক আর রুমির ভূমিকায় অনন্যা পাণ্ডে। স্ক্রিনজুড়ে নজর কাড়ল তারকা যুগলের মাখোমাখো রসায়ন। লেখিকা রুমি বরদান আর ওয়েডিং প্ল্যানার রে'র প্রেম খুব কিছু বিচার না করে দেখতে মন্দ লাগে না।
তবে ক্রোয়েশিয়া যাওয়ার পথে নায়ক-নায়িকার বিমানবন্দরে দেখা হওয়া, বইয়ের তাক থেকে বইয়ে হাত না পাওয়া, একই বিমানে নায়িকার সঙ্গে কাকতালীয় ভাবে সফর থেকে ক্রোয়েশিয়া পৌঁছে একই ইয়টে, একই কেবিনে থাকা এবং তারপর যা যা হওয়ার তা দর্শকের কমবেশি জানা। এ খানিক একঘেয়ে লাগে বইকি। সবমিলিয়ে যেন বারবার মনে হতে বাধ্য যে, এ বড্ড চেনা গল্প দর্শকের। এমনকী বিমানসেবিকাকে দেখে ফ্লার্ট করতে করতে যাওয়া ছবির নায়ককে দেখে বিরক্তি লাগে বইকি। তবে এসবের মাঝেও যা বেশ ভালো লাগে তা হল কার্তিক-আরিয়ানের মিষ্টি রসায়ন। দূরে গিয়েও বারবার ভালবাসার টানে ফিরে ফিরে আসার মতো গল্প খুব চেনা হলেও মন্দ লাগে না। বাস্তবজীবনের প্রাক্তন কার্তিক ও অনন্যার 'রিইউনিয়ন' বেশ নজরকাড়া। বিশেষ করে তাঁদের অন্তরঙ্গ দৃশ্য, ঠোঁটঠাসা চুমু, বিকিনি লুকে অনন্যার সাহসী লুক, বিদেশের মাটিতে জমে ওঠা প্রেম এসব দেখতে মন্দ লাগে না।
তবে এই ছবির শেষার্ধ একটু ভাবায় বললে ভুল হবে না। বর্তমান প্রজন্মের জন্য এ খুবই প্রাসঙ্গিক এক বিষয়। আর তা হল মা-বাবার জন্য চিন্তাশীল হওয়া। এই সময়ে বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে হলে সেই চিন্তা যেন কয়েক গুণ বেশি হয়। অনেকেই সেখান থেকে বিয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। সেই ঘটনাই ছবির শেষার্ধে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে। দুই বোন হওয়ার পরও ছবির রুমি ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করতে রাজি হয় না শুধুমাত্র বাবার দেখভাল করার জন্য। ছবির এই অংশ যে সময় অনুযায়ী বেশ প্রাসঙ্গিক তা বললে ভুল হবে না। অনন্যার বাবার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন জ্যাকি শ্রফ। অন্যদিকে পর্দায় কার্তিকের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন নীনা গুপ্তা। সব শেষে সেই চিরাচরিত 'হ্যাপি এন্ডিং' আর দু'জনের এক হওয়া দিয়েই শেষ হয়েছে ছবি। তবে যে কথা না বললেই নয় তা হল, অনন্যা পাণ্ডের বেশ ভালো অভিনয়। যে অনন্যার অভিনয়দক্ষতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছেন দর্শক সেই অনন্যাই মেজেঘষে যে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন অনেকটা তা বলতেই হয়। বলিউডে একসময়ে কান পাতলেই শোনা যেত, কার্তিক আরিয়ানের সঙ্গে অনন্যা পাণ্ডের প্রেমের গুঞ্জন। বলিউডের নবীন প্রজন্মের ‘মোস্ট এলিজিবল ব্যাচেলর’ তিনি। সুদর্শন চেহারা। বক্স অফিস ফিগারেও অনেকের চেয়ে এগিয়ে। পর্দায় একের পর এক ভিন্ন স্বাদের চরিত্র চিত্রায়ণ, সব মিলিয়ে পাত্র মন্দ নয় কার্তিক আরিয়ান। অতঃপর ঘন ঘন কোনও না কোনও নায়িকার সঙ্গে তাঁর নাম জুড়ে যায়। এবার সেই প্রাক্তন অনন্যার সঙ্গেই ফের পর্দায় রোম্যান্টির মুডে ধরা দিলেন কার্তিক আরিয়ান।
