সন্দীপ্তা ভঞ্জ: সম্প্রতি নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেল ‘মার্ডার মুবারক’। কৌতূকের রসে-বশে রহস্য-রোমাঞ্চের মোড়কে হোমি আদাজানিয়ার নতুন সিনেমা। কেমন হল?
এক খুনের সাত সন্দেহভাজন! রহস্যের গভীরতা আরও বাড়িয়ে দেয় শাখা-প্রশাখা চরিত্ররা। এই মামলায় খুনি খুঁজে বের করা যেন খড়ের গাদায় ছুঁচ খোঁজার মতো! এসিপি ভবানী সিং, যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন পঙ্কজ ত্রিপাঠী। খান কয়েক অতি অদ্ভূত চরিত্রের মাঝে তিনি যেন একটুকরো শান্তির দ্বীপ। তাঁর মধ্যবিত্ত অভিসন্ধিৎসু মনই তাঁকে সমাজের ‘তথাকথিত’ এলিট ক্লাসের মুখোশ খোলার গোয়েন্দা সফরে সাহায্য করে। কিন্তু শেষমেশ তাঁর খুনির নাম প্রকাশ্যে আনার ধরণও অভিনব। ‘কান টানলে মাথা আসে’ থিওরি প্রয়োগ করেই রহস্য ভেদ করলেন পঙ্কজ।
রহস্য, রোমাঞ্চ, প্রেম-রোম্যান্স, একাকীত্ব, কৌতূকরস যাবতীয় উপকরণই মজুত ‘মার্ডার মুবারক’-এর চিত্রনাট্যে। রয়্যাল দিল্লি ক্লাব এবং সেখানকার সদস্যদের দেখনদারী, বিত্তপ্রদর্শনের প্রেক্ষাপটেই গল্প। জটিল ধাঁধায় মোড়া প্লট। গল্পে একাধিক লেয়ার। আর সেই সমস্ত প্লটকে একসুঁতোয় বাঁধার চেষ্টা করেছেন পরিচালক হোমি আদাজানিয়া। তবে ছবির প্রথমার্ধে চিত্রনাট্যের বাঁধন বেশ আলগা। অভিজাত শ্রেণীর নাকউঁচু কিংবা হাম-বড়া ভাব দেখাতে গিয়ে অনেকটাই সময় ব্যয় করেছেন পরিচালক আদাজানিয়া। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধ বেশ জমজমাট। টানটান চিত্রনাট্য। ক্লাইম্যাক্স দৃশ্য পোক্ত বাঁধনের জন্য দেখতে একঘেয়ে লাগে না।
[আরও পড়ুন: নকশাল পর্ব দেখিয়েও বক্স অফিসে ‘বাস্তার’-এর মন্দা বাজার, ‘কেরালা স্টোরি’র ধারেকাছেও নেই!]
‘মার্ডার মুবারক’-এর কাস্টিংও দারুণ। পঙ্কজ ত্রিপাঠী, করিশ্মা কাপুর, বিজয় বর্মা, ডিম্পল কাপাডিয়া, সারা আলি খান, টিসকা চোপড়ার মতো দক্ষ অভিনেতারা রয়েছেন। তবে নজর কাড়ল সারার অভিনয়। তাঁর ফিল্মি কেরিয়ারের বয়স নাতিদীর্ঘ হলেও বাম্বি চরিত্রের ভিন্ন শেডস বেশ দক্ষতার সঙ্গেই ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। পঙ্কজ ত্রিপাঠী যদি এই ছবির সারথি কৃষ্ণ হন, তাহলে অর্জুন-এর খেতাব প্রাপ্য সারা আলি খানের। তবে হতাশ হলাম করিশ্মা কাপুরের চরিত্রটি দেখে। গ্ল্যামার দুনিয়ার শিরোনামে থাকা চরিত্রটিকে আরও দক্ষতার সঙ্গে দেখানো যেত। গল্পে সেভাবে তাঁর অভিনয় এক্সপ্লোরই করা হল না! অন্যদিকে, স্বল্প দৈর্ঘ্যের চরিত্রে হলেও নজর কাড়লেন সঞ্জয় কাপুর। শেষপাতের ট্যুইস্ট প্রশংসার দাবিদার। তবে গল্পের বাঁধন আরও পোক্ত হলে ভালো হত।