চারুবাক: নায়ক সোহম চক্রবর্তীর প্রযোজনায় সাধারণত একটি সহজবোধ্য বিষয় নিয়ে কমেডির মোড়কে সাধারণ দর্শকের মনরঞ্জনের গল্প পরিবেশনের চেষ্টা থাকে। তাঁর নতুন ছবি “এল এস ডি” (লাল সুটকেস দেখেছেন)র নামকরণটাই বুঝিয়ে দেয় সোহমের ভাবনায় তেমন কোনও বদল আসেনি। তারওপর এবার ছবির পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল। যাঁর নির্দেশনার কৌশলে ব্যবসায়িক ভাবনার স্পষ্ট ও পরিষ্কার পরিচয় থাকে। এই ছবিতেও রয়েছে। মাত্র এক রাতের ঘটনা! অমর্ত্য (সোহম) ও রূপসা (সায়নী) কলেজ সহপাঠী। তখন থেকেই অমর্ত্যর ক্রাশ ছিল রূপসার প্রতি। কিন্তু মা (লাবনী) অন্ত প্রাণ ছেলে প্রেম নিবেদন আর করতে পারেনি।
ও দিকে রূপসার বিয়ে ঠিক হয় মা বাবার পছন্দ করা এক প্রবাসী পাত্রের সঙ্গে। রূপসা কিন্তু মা-বাবার কাছে “লক্ষ্ণী” মেয়ে হলেও আদতে সে অতি আধুনিক, নানাধরনের নেশায় অভ্যস্ত। সুতরাং সে পছন্দের পাত্রকে বিয়ে করবে না বলে বাড়ি থেকে পালায় একটা লাল সুটকেস নিয়ে। আর ঝামেলায় পড়ে অমর্ত্যকেই ফোন করে বসে। এবার শুরু তাদের ওই লাল সুটকেস নিয়ে কাঞ্চন মল্লিককের ট্যাক্সিতে চড়া, একের পর এক দুর্ঘটনার সিরিজ ঘটে চলে। একদিকে অমর্ত্যর মা অন্যদিকে রূপসার বাবা ও মা তাঁদের নিরুদ্দেশ ছেলে-মেয়ের খোঁজে যাকে বলে অভিযান শুরু করে দেয়। থানা পুলিশ, এমনকী,অবশ্যই হাসি আর মজার মোড়কে। সব চাইতে হাসির বিষয় হল এমন একটি নির্ভেজাল মজার ছবিকে সেন্সর কতৃপক্ষ কী করবে যে ছাড়পত্র দিতে ঢিলেমি করলেন সেটাও বোধহয় আরো বেশি হাস্যকর লাগবে দর্শকের! পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল বেশ মজার ভঙ্গিতেই সাজিয়েছেন চিত্রনাট্য। “ফ্রম মেন্টাল টু সেন্টিমেন্টাল”, “এ সাডেন ডেথ”,”রান লোলা রান”, “দি লেডি উইথ দি ল্যাম্প” ধরনে আটটি অধ্যায়ে ভাগ করে গল্পের শরীরে মজার আবহ তৈরির চেষ্টা করেছেন! এই ভাবনাটি মজাদার।
[আরও পড়ুন: জন্মদিন কাটাতে প্যারিসে মিমি চক্রবর্তী, প্রেমের শহরে সারাদিন কী কী করলেন অভিনেত্রী?]
তবে শেষ অধ্যায়টিই (দি লাস্ট চ্যাপটার) একটু দীর্ঘ হলেও সব চাইতে উপভোগ্য অংশ। সারা রাতের ঘটনার কোনটা নেশার ঘোরে দেখা, বা কোনটা সত্যি, কোন চরিত্র কাল্পনিক, কোনটা বাস্তব সেটা গুলিয়ে দিতে এমন প্রায়োগিক ভাবনার ও বাস্তবের ককটেল নিয়ে একটা সন্ধ্যা কাটাতে এই সিনেমা দেখাই যায়। আর গান! না, তেমন গুরুত্ব পায়নি চিত্রনাট্যে! বরং মজাদার সিচুয়েশনস তৈরিতে সিদ্ধহস্ত পরিচালক । বিশেষ করে ভাল লাগে সোহম ও সায়নীর কমিক ছোঁয়া লাগানো অভিনয়! দেখে আনন্দই পাবেন দর্শক, লাবণী সরকার, অভিজিৎ গুহ, কাঞ্চন তো আছেনই! হাসির ভাঁড়ার ভরতি!