সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মা কাজ করতেন কয়লাখনিতে। করোনার জন্য বিসর্জন দিতে হয়েছিল UPSC-র স্বপ্নকেও। দিল্লির সরোজিনী নগরের ফুটপাথে যে মেয়েটি কিনা ফ্যাশন ব্লগ করত, সেই তরুণীই এবার কান চলচ্চিত্র উৎসবের রেড কার্পেটে নজর কাড়লেন নিজের সেলাই করা গাউন পরে।
কান-এর লাল গালিচা মানেই ফ্য়াশন ফিরিস্তি। তাবড় তারকাদের ডিজাইন করা লক্ষ লক্ষ টাকার পোশাক। আর সেই তাবড় স্টারদের উপস্থিতির মাঝেই কিনা ভারতের এক কয়লা খনির শ্রমিকের মেয়ে দ্যুতি ছড়ালেন নিজের কেরামতিতে। তিনি ভারতীয় ফ্যাশন ব্লগার ন্যান্সি ত্যাগী (Nancy Tyagi)। উত্তর প্রদেশের ছোট্ট গ্রামে বেড়ে ওঠা তাঁর। ইংরাজি জানেন না। তাতে কি, ফ্রেঞ্চ রিভিয়েরায় যাওয়ার পথে ভাষা তাঁর অন্তরায় হয়ে ওঠেনি। নিজগুনেই সেখানকার রেড কার্পেটে হেঁটে এলেন। তাঁর নিজের হাতে সেলাই করা গোলাপি গাউন পরে। যার ওজন কিনা ২০ কেজি।
[আরও পড়ুন: দীপিকার ‘কপি ক্যাট’! Cannes লুক নিয়ে ট্রোলড উর্বশী রাওতেলা]
কান-এর জন্য স্পেশাল এই গোলাপি গাউনটি ন্যান্সি নিজের হাতে তৈরি করেছেন। মোট ১০০০ মিটার কাপড় লেগেছে এই পেল্লাই সাইজের রাফল গাউন তৈরি করতে। তাঁর একমাসের পরিশ্রমের ফল দেখতে পেলেন কান-এর লাল গালিচায়। যখন পশ্চিমী বিনোদুনিয়ার ফটোশিকারিরাও তাঁর ছবি তুললেন। কেউ বা আবার নিল তাঁর সাক্ষাৎকারও। ন্যান্সি ইংরেজি না জানুন, ঝরঝরে হিন্দিতেই কান-এর রেড কার্পেটে কথা বললেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। ভারতীয় এই ফ্যাশন ইনফ্লুয়েন্সার বলছেন, হাজার মিটার কাপড় থেকে নিজে হাতে গাউন তৈরি করা এবং কান-এর লাল গালিচা পর্যন্ত আসার সফর কঠিন ছিল ঠিকই, তবে প্রতিটা মুহূর্ত আমার কাছে মূল্যবান। আমার স্বপ্নপূরণ হল।
সেলাই মেশিন সম্বল করে কান-এ যাওয়া এই দুঃসাহসী মেয়েটির বছর কয়েক আগেও অভাব ছিল নিত্য সঙ্গী। আইএএস হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলেন দিল্লি। মা কাজ করতেন কয়লা খনিতে। মায়ের যন্ত্রণা দূর করতেই টাকা রোজগারের ভূত চাপে ন্যান্সির মাথায়। লকডাউনে সোশাল মিডিয়া ইনসফ্লুয়েন্সার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পড়াশোনার জন্য জমানো টাকায় ক্যামেরা কিনে রিল ভিডিয়ো বানাতেন। কোনওদিন সেলাইও শেখেননি। পুতুলের জন্য সেই ছেলেবেলায় মায়ের সেলাই মেশিনে জামা তৈরি করতেন। সেই ট্যালেন্টে ভর করেই নায়িকাদের পোশাক সস্তায় তৈরি করে দেখানোর ভিডিও পোস্ট করতে শুরু করেন ন্যান্সি। সেখান থেকেই কান-এর রেড কার্পটে কেল্লাফতে! ন্যান্সি ত্যাগীর এই সাফল্যে কুর্নিশ জানিয়েছে নেটপাড়া।