shono
Advertisement

Breaking News

Tere Ishq Mein review

অমর প্রেমগাথা না টক্সিক প্রেমের আতিশয্য! কোন গল্প বুনল কৃতী-ধনুষের 'তেরে ইশক মে'?

কেমন হল 'তেরে ইশক মে'? পড়ুন রিভিউ।
Published By: Arani BhattacharyaPosted: 02:59 PM Dec 04, 2025Updated: 04:29 PM Dec 04, 2025

অরণী ভট্টাচার্য: কথা ছিল ছায়াপথ ধরে তাদের পাশাপাশি হেঁটে যাওয়ার। কিন্তু ছবির গল্প এগোতেই মনে হয় যেন পথ হারাবে বলেই পথ চলা শুরু করেছে 'মুক্তি' আর 'শংকর'। আনন্দ এল রাইয়ের পরিচালনায় 'তেরে ইশক মে' দেখার পর এমনটা মনে হতে বাধ্য। হয়তো কোথাও গিয়ে আমাদের সবার জীবনেই প্রেমের একটা রোমাঞ্চকর মোড় এসেছে, যেখানে পৌঁছে মনে হয়েছে, ইস! সেদিনটা থেকে গেলেই হত। বা কখনও হয়তো মনে হয়েছে, ভালোবাসার মানুষকে ফিরিয়ে না দেওয়াই উচিত ছিল। এই ছবি দেখতে দেখতে যেন সেই রকমই অনেক ভাবনা মনে ভিড় করে আসে। তবে এসবের মাঝে টক্সিক ভালোবাসা যাপনের ছবিটাও যেন ফুটে ওঠে স্পষ্ট।

Advertisement

ছবির গল্প এগিয়েছে মুক্তি এবং শংকর চরিত্রকে ঘিরে, যে দুই ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কৃতী স্যানন এবং ধনুষ। পিএইচডির ছাত্রী মুক্তির প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া শংকর একপ্রকার বখাটে। পড়াশোনায় তার একেবারেই মন নেই। কলেজ ক্যাম্পাসের দাদাগিরিতেই দিন কেটে যায় তার। দক্ষিণী ছবির ধাঁচে ধনুষ যেন সেই চরিত্রে ক্যারিশ্মা দেখিয়েছেন ধনুষ। দেশলাই বাক্সের বদলে যেখান সেখান থেকে দেশলাই কাঠি ঘষে আগুন ধরিয়ে ধূমপান করার স্টাইল অন্তত তাই বলছে। হঠাৎ করে এক ঝলক দেখে যেন 'থালাইভা' রজনীকান্তের ছায়াও 'প্রাক্তন' জামাইয়ের অভিনয়ে চোখে পড়ে। বরাবরের মতোই এই প্রেমিক চরিত্রেও ধনুষ সফল। অন্যদিকে মুক্তি পিএইচডিতে সাফল্য পেতে মরিয়া। থিসিস পেপার জমা দিয়েই যাচ্ছে অথচ কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। তার সেই পরিশ্রম সফল হয় শংকরের সংস্পর্শে এসে। তা যদিও কীভাবে ঘটে বলে দিলে ছবি দেখার আসল আনন্দই মাটি হয়ে যাবে। সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে মুক্তি আর ঘিঞ্জি গলির একেবারে সাদামাটা একটা ছোট্ট জায়গায়, নিম্নবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা শংকরের প্রেম স্বাভাবিক ছন্দেই যেন তাল খুঁজে পায় না।

ছবির প্রথম দিকে দু'জনের খুনসুটি, কথা বলা, তাদের দু'জনের একসঙ্গে কাটানো বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি দেখতে দেখতে নিতান্ত হাসি পেলেও পরবর্তীতে যেন বাস্তবের মতোই সত্যিটা সামনে আসে। কথায় বলে, বিয়ে হয় সমানে সমানে, সম্পর্কও তাই। ছবি দেখতে দেখতে যেন তেমনটাই মনে হয়। সমাজের দুই স্তরে থাকা দুটো মানুষের বেড়ে ওঠা, জীবন দর্শন জীবনের চাহিদা ও ভালোবাসার দৃষ্টিভঙ্গিও আলাদা। রগচটা শংকর মুক্তিকে বিয়ে করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। আর তার বাবার দেওয়া কঠিন শর্তে জেতার দৌড়ে সামিল হয়। এইখানে এসে খানিক মনে হবে এসব কিছুই ছবির অতিরঞ্জিত বিষয়। যা শুধু ছবিতেই সম্ভব। কিন্তু এই এত কিছু মনে হওয়ার মধ্যেও যা বিশেষভাবে এই ছবির দর্শক, বিশেষত বাঙালি দর্শকের সবথেকে ভালো লাগার তা হল মুক্তির বাবার চরিত্রে টোটা রায়চৌধুরীর অভিনয়। 'রকি আউর রানি কি প্রেমকাহানি' থেকে শুরু করে 'তেরে ইশক মে' বলিউড যেন বারবার নিজেকে জহুরী প্রমাণ করছে। এই ছবিতে যশবন্ত বেহলওয়ানিয়া চরিত্রে অভিনয় করেছেন টোটা। ধনী, বিত্তশালী, কড়া ধাঁচের জাদরেল এক বাবার চরিত্রে টোটা অসামান্য।

তবে 'তেরে ইশক মে' দেখতে দেখতে পরিচালকের আরও এক ছবি 'রাঞ্ঝনা'র কথা মনে পড়তে বাধ্য। এই ছবিতে খানিক তার রেশ রেখেও গিয়েছেন তিনি। ছুঁয়ে গিয়েছেন বেনারসকে। পরিচালকের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে বেনারসের ঘাট, মণিকর্ণিকা, বেনারসের গঙ্গা এবং এখানকার পজিটিভিটি। তবে এসবের মধ্যেও ছবিতে যে আধ্যাত্মিকতার সামান্য মিশেল রয়েছে তা দেখলে খানিক অবাস্তব বলেই মনে হয় বললে অত্যুক্তি হবে না। ছবির আবহসঙ্গীত ও ছবির গান সবকটিই মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। ঝকঝকে ক্যামেরা তবে চিত্রনাট্য এবং পরিচালনায় খানিক অতিরঞ্জন ঝেড়ে ফেললেই ভালো হত বলে মনে হয়। তবে এসবে মাঝেও কৃতী ও ধনুষের অসামান্য অভিনয় যেন বারবার মনে করিয়ে দেয় যে, প্রেমে পড়লে মানুষ কিই না করতে পারে। তবে কিছু কিছু জায়গায় সেই আতিশয্য যেন বড্ড বেশিই মনে হয়। কখনও আবার মনে হয় এতটা টক্সিক প্রেম না দেখালেও হত।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • আনন্দ এল রাইয়ের পরিচালনায় 'তেরে ইশক মে' দেখার পর এমনটা মনে হতে বাধ্য।
  • ছবির গল্প এগিয়েছে 'মুক্তি' এবং 'শঙ্কর' চরিত্রকে ঘিরে, যে দুই ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কৃতী স্যানন এবং ধনুষ।
  • পিএইচডির ছাত্রী মুক্তির প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া শঙ্কর একপ্রকার বখাটে।
Advertisement