আকাশ মিশ্র: কথায় আছে যার শেষ ভালো, তার সব ভালো। কিন্তু যা শেষ হয়েও, শেষ হয় না, তাই আসলে দাগ কেটে যায়। ঠিক ছোট গল্পের মতো। কোটা ফ্যাক্টরি সিজন ৩ কিছুটা এমনই। এই সিরিজের শেষ এপিসোডেও গিয়ে মনে হবে, এখানেই তাহলে শেষ! নাকি আর একটু হলে ক্ষতি হতো না! তবে কোটা ফ্যাক্টরি ৩-এর শেষ এপিসোড সত্যিই শেষ কিনা, তা অস্পষ্ট।
সে যাই হোক। কয়েক দিন আগেই আমাজন প্রাইমে মুক্তি পেয়েছে 'পঞ্চায়েত'। 'পঞ্চায়েত'-এর নতুন সিজনেও চমক রেখেছেন জীতু ভাইয়া ওরফে জীতেন্দ্র কুমার। সেই সাফল্যকে সঙ্গে নিয়েই সেই জীতেন্দ্র কুমার হাজির কোটা ফ্য়াক্টরিতে। অভিনয়ের দিক থেকে তিনি যে জাত অভিনেতা, তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। কোটা ফ্যাক্টরির প্রথম সিজন থেকেই প্রায় একা হাতে সিরিজকে টেনে নিয়ে গিয়েছেন জীতেন্দ্র। সিজন ৩-এর ক্ষেত্রেও অন্যথা হয়নি। তবে নতুন সিজনে এন্ট্রি নিয়ে যিনি নজর কাড়লেন, তিনি হলেন অভিনেত্রী তিলোত্তমা সোম। এক কথায় তিনি অসাধারণ।
[আরও পড়ুন: পাত্র মুসলিম, ‘প্রেমই পরম ধর্ম’, লাভ জিহাদ বিতর্কে নিন্দুকদের ‘খামোশ’ করালেন সোনাক্ষী সিনহা]
কোটা ফ্যাক্টরির দ্বিতীয় পর্ব যেখানে শেষ হয়েছিল সেখান থেকেই শুরু তৃতীয় সিজনের গল্প। পরীক্ষার চাপে ছাত্রের আত্মহত্যার ঘটনা কিছুতেই সামলে উঠতে পারে না সদা কনফিডেন্ট জীতু ভাইয়া। একজন শিক্ষক হিসেবে সবসময় প্রতিটি ছাত্রছাত্রীকে স্বতস্ফূর্তভীবে পড়াশোনা করার পরামর্শ দেন। অন্য স্টাইলে ১৫-১৬ বছরের পড়ুয়াদের সঙ্গে মিলেমিশে পড়ানোর চেষ্টা করে। বন্ধুর মতো সকলের সঙ্গে একাত্ম হতে স্যারের বদলে ভাইয়া ডাকে বিশ্বাসী জীতু। সেই জীতু ভাইয়া আজ নিজেই বড্ড হতাশ। ছাত্রের আত্মহত্যার ঘটনায় এতটাই ভেঙে পড়েন যে মনোবিদের সাহায্য নিতে হয়।
মূলত, এই মানসিক টানাপোড়েন। এবং কীভাবে প্রত্যেকটি JEE আর NEET- এর পড়ুয়াদের অন্তরে প্রবেশ করে জীতু ভাইয়া। সেটাই এই সিজনের মূল লক্ষ্য। পড়াশুনোর বাইরেও, যে উঠতি বয়সে নানা সমস্যার মধ্যে দিয়ে যায় পড়ুয়ারা তাও খুব সুন্দরভাবে দেখানো হয়েছে।
এই মুহূর্তে NEET নিয়ে উত্তাল দেশ। সেই আবহেই কোটা ফ্যাক্টরি যে পড়ুয়াদের জীবনের টানাপোড়েনের দারুণ দলিল তা কিন্তু বলাই যায়। এই জন্য ধন্যবাদ প্রতীশ মেহতা। কেননা, এই সময় দাঁড়িয়ে কোটা ফ্যাক্টরি শুধু সিরিজ নয়। যে সমাজের আয়না। গগন স্যারের চরিত্রে অনবদ্য রাজেশ কুমার। ভালো অভিনয় করেছেন ময়ূর মোরে, রঞ্জন রাজ, আলম খানের মতো অভিনেতারা। যাঁরা এই সিরিজের প্রথম ও দ্বিতীয় সিজন দেখেছেন, তাঁরা অবশ্যই দেখুন। তবে শেষমেশ একটা কথা বলতেই হয়। 'কোটা ফ্যাক্টরি'র প্রথম সিজনে যে আবেগটা ছিল, সেটা কোনওভাবে মিসিং সিজন ৩-এ।