সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সফেদ পাড়। হলদেটে বালুকণার একাংশে চিকচিক রুপোলি। অস্ট্রেলিয়ার সিডনির ডার্লিং নদীতীরের এমন রূপ দেখে সৌন্দর্য ভাবলে, ভুল করবেন। একটু কাছে গিয়ে দেখুন, হাজার হাজার মাছের মৃতদেহ পড়ে আছে। পাড়ে লেগেছে মাছের মড়ক। নদীর জল পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, দূষণ নয়, মৎস্যখেকো শ্যাওলার কাণ্ড এটা।
গত কয়েকদিন ধরেই অস্ট্রেলিয়ার খরা কবলিত এলাকায় মাছের মড়ক চলছেই। বিভিন্ন জায়গায় নদী, হ্রদের পাশ থেকে পাওয়া যাচ্ছে মাছের মৃতদেহ। কিন্তু এত ব্যাপক হারে মাছের মৃত্যু ডার্লিং নদীর পাড়েই দেখা গেল। যাকে বলে, দলগত ভাবে প্রাণহানি। এভাবে মাছের মৃত্যু তো জলভূমির বাস্তুতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে পড়ছে। উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে প্রশাসন। বিজ্ঞানীরা গবেষণা শুরু করেন। নিউ সাউথ ওয়েলসের গবেষকরা, সরকারি সাহায্যে পরীক্ষানিরীক্ষার পর যা জানতে পারেন, তা খানিকটা এরকম। খরা চলছে দেশজুড়ে। এমনিতেই জলাশয়ের জলস্তর কমছে। এই আবহাওয়ায় জলে জন্ম নিচ্ছে এক বিশেষ ধরনের শ্যাওলা। যা জল থেকে ক্রমশ শুষে নিচ্ছে অক্সিজেন। জলের মাছ পর্যাপ্ত অক্সিজেনে পাচ্ছে না। শ্বাসকষ্টের ফলে ধীরে ধীরে নেতিয়ে পড়ে প্রাণবায়ু নিভছে মৎস্যকুলের।
বিশ্বাসে মিলায় ‘মা’, বার্ধক্যে এসে জন্মদাত্রীর কোল পেলেন অনাথ ‘শিশু’
ডার্লিং নদীর বিস্তার অনেকটাই। ছোট, বড় প্রচুর মাছের আশ্রয়স্থল। তাই স্থানীয় প্রশাসন আরও মাছের মৃত্যুর আশঙ্কা করছে। তাহলে কি কোনও উপায় নেই এই মড়ক থামানোর? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে দিশেহারা গবেষকরাও। বলা হচ্ছে, ওই ঘাতক শ্যাওলার মোকাবিলায় বিপরীতধর্মী কোনও জীবের বসবাসের প্রয়োজন নদীর জলে। তাহলে শ্যাওলা আর জন্মাতে পারবে না। নদীতে অক্সিজেনের পরিমাণও স্বাভাবিক থাকবে। কিন্তু নতুন করে দেশের জলাশয়গুলিতে উপকারী জীব ছেড়ে দেওয়া বিপুল খরচের ব্যাপার। প্রশাসন জানাচ্ছেন, শুধু খরচ হলে বিশেষ চিন্তার ব্যাপার ছিল না। কিন্তু যা করতে হবে, দ্রুত করতে হবে। বেশি সময় দিলে বিপদ বাড়বে। বিজ্ঞানীদের মতে, বৃষ্টির জলেই একমাত্র সহজ সমাধান মিলবে। কিন্তু যেখানে খরা, সেখানে বৃষ্টির অপেক্ষা করতে করতেই সব শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন জায়গা গত কয়েক শতকে এমন খরার কবলে পড়েনি বলে জানাচ্ছেন পরিবেশবিদরা। আর সেই খরাতেই জন্ম নিচ্ছে শ্যাওলা, যা আদতে ধ্বংসাত্মক।
The post মৎস্যখেকো শ্যাওলার জন্ম, অস্ট্রেলিয়ার জলাশয়ে মাছের মড়ক appeared first on Sangbad Pratidin.