প্রসূন বিশ্বাস: কে বলবে বৈশাখের তপ্ত দুপুর? তাপমাত্রা চল্লিশ ডিগ্রি নিয়মিত। শুক্রবার দুপুরে এই কাঠফাটা রোদের যুবভারতীর চার নম্বর গেটের বাইরে অনলাইন টিকিট রিডেমশনের লাইনে দাঁড়িয়ে যাঁরা শনিবারের টিকিট হাতে পাচ্ছিলেন, তাঁদের মুখ দেখে অবাকই হতে হচ্ছিল, প্রত্যেকের মুখেই ছিল একচিলতে হাসি। যেন টিকিট নয়, হাতে চাঁদ পেয়েছেন প্রত্যেকে।
এবার চলে আসা যাক সন্ধ্যার যুবভারতীর অনুশীলন মাঠে। দিমিত্রি পেত্রাতোস (Dimitri Petratos), জেসন কামিন্সদের (Jason Cummings) এক পলক দেখার জন্য অনুশীলন মাঠের সামনে কয়েকশো সবুজ-মেরুন সমর্থক। এই গরমে ঘেমেনেয়ে একাকার। তবু ঘণ্টাখানেকের অপেক্ষা। মোহনবাগান (Mohun Bagan) ফুটবলারদের সামনে পেয়ে টিকিটের আবদার তাঁদের। কিন্তু তাঁরাও অপারগ। বরং ব্রেন্ডন হ্যামিল ব্যাগ থেকে নিজের দুটো জার্সি, প্যান্ট তুলে দিলেন সেই সমর্থকদের। তাতেই যেন দুধের সাধ ঘোলে মিটল।
[আরও পড়ুন: ব্যাটিং ব্যর্থতায় একা কুম্ভ ভেঙ্কটেশ, নারিন-বরুণ জাদুতে ওয়াংখেড়েতে ঐতিহাসিক জয় নাইটদের]
এদিন মোহনবাগান অনুশীলনে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরাও মোহনবাগান সমর্থকদের দূরে রাখতে পারলেন না বিশাল, অনিরুদ্ধদের থেকে। অনুশীলন শেষে সমর্থকদের একটাই আবদার, ''শিল্ড এসেছে, এবার আইএসএল ট্রফিটা এনে দাও।''
শনিবার যুবভারতীর গ্যালারিতে ফের ষাট হাজারের বেশি দর্শক যে উপচে পড়বেনই, তা ইতিমধ্যেই জেনে গিয়েছেন দুই দলের কোচ, ফুটবলাররাই। এমন পরিবেশে শুভাশিস বসুরা চাইছেন মরশুমে ত্রিমুকুট জিতে তাঁদের বৃত্ত পূর্ণ করতে। মোহনবাগান অধিনায়ক বলেন, “আমাদের সামনে আরও একটা ট্রফি। আমাদের ছেলেরা তৈরি রয়েছে এত সমর্থকের সামনে ট্রফি জয়ের জন্য। আমাদের সঙ্গে লক্ষ লক্ষ মেরিনার্সের শুভেচ্ছা রয়েছে।”
এদিন অনুশীলনেও জেসন কামিন্সদের দেখা গেল বেশ ফুরফুরে মেজাজেই। হাবাস জোর দিলেন ছোট ছোট পাসের উপরে। নব্বই মিনিটে ম্যাচ শেষ করার লক্ষ্য নিয়েই হাবাস চান শুরুতেই গোল তুলে নিতে। গোল ধরে রাখতেও মরিয়া তারা। গত ম্যাচে রক্ষণে হেক্টর ইউয়েস্তা দারুণ ফুটবল উপহার দিয়েছেন। গোলে বিশালের পাশাপাশি রক্ষণে শুভাশিস, ইউয়েস্তা, আনোয়ার থাকছেনই। এই তিন জন রক্ষণাত্মক ফুটবলারের সামনে দীপক টাংরির বা অভিষেক সূর্যবংশীকে খেলাতে পারেন হাবাস। মাঝমাঠে জনি কাউকো, অনিরুদ্ধ থাপা, মনবীর, সাহাল অথবা লিস্টন। এদের সামনে পেত্রাতোস, কামিন্স। আপাতত হাবাস ফাইনালে এই একাদশ নামাতে পারেন। দলের অন্যতম তারকা দিমিত্রি পেত্রাতোস এদিন বন, “আমার কেরিয়ারে মোহনবাগান অন্যতম সেরা দল। এখানকার খেলার পরিবেশ দুর্দান্ত। এমন পরিবেশে নিজেদের সেরাটা দেব।”